শিরোনাম দেবনা
শরীফ হোসাইন মৌন
আমার কিছু দু:খ আছে রংধনুতে মাখা
তাইতো আমার হয়না কভু সূর্য-র ঘরে থাকা
আমি বেশি অন্য মানুষ,আঁধার নিয়ে গাই
আলো ভেবে রাত্রি পানে হাত দুটি বাড়াই
আঁধার কালো বেদনাতে আহত এ হাত
সূর্য-র পানে চেয়ে চেয়ে কাটলো সারারাত।
আমি যাই শীতলক্ষ্যার ঘরে
ধান শালিক আর ছিন্ন ঘুড়ির পিছে
কোথায় যেন আমি , হুমড়ি খেয়ে
সেই মিছিলের নিচে।
আঁধার এসে গ্রাসে আমি সেই ত্রাসে
সূর্য-র পানে দু'হাত তুলে দৌড়াই ঊর্ধ্বশ্বাসে।
ঠেলে ভূতলে, আলোর মখমলে, বসি সূর্য হাসে পরম উচ্ছ্বাসে।
সূতো ছেড়া ঘুড়ি দুর্বার পাগলা হাওয়ায়
অনিমেষ উড়ে যায় অচেনা বিরহে
সন্ধ্যা আসে ধীরে ধরনীতে, প্রাণে তবু
দুর্বা ঘাসে বসে অপ্রাপ্তি সকল সহে
সহেনা শুধু অনুজ্জ্বল সূর্যরশ্মি
কিংবা রাতের অখন্ড নিস্ফল প্রার্থনা
যেতে যেতে ক্ষয়ে যায় পথসব
সূর্য দেখেনা তবু কারো হৃদয় অশ্রু-কনা।
সূর্য আমায় দিয়েছিলো আলো ,সকল যাতনাবসান
দূর কোন ডাকে স্বপ্ন এবং সুখাবলী হলো নিষ্প্রান
রাত্রি জাগরন ,সারাটি রাত্রি জেগেছি তারি ডাকে
সেসব স্মৃতি শুধুই আজ বেদনার ছবি আঁকে।
সবাই যখন ঘুমিয়ে থাকে আমায় তখন সূর্য ডাকে
তার সুখের যন্ত্রনাতে দুঃখেরা সব পালায় তাতে
আমার বিশাল শূন্য ঘরে সূর্য এসে দখল করে
কেউ জানেনি গভীর রাতে সূর্য আমার গেছে ঝরে
তাহার হাতের শুদ্ধতাতে মেখেছি এ হাত
আমি জানি সূর্য ওঠে আমার সারারাত
খানিক ব্যথায় নীল হলে বা সূর্যের কিবা আসে
হঠাৎ করে শিশির পাবে সূর্য সারা পাশে।
সূর্য জাগেনা রাত্রিতে ও আসেনা আর
জানিনা কিরুপে হবে এ বিরহ পার।
জলাশয় প্রশস্তই হয় এবং সংখ্যায়ও বেশি
তবু সমুদ্রই গভীর, অতল আত্নবিনাশী
বেশিদিন দেখিনি, ছুঁইনি হাত ছয়টি বছর
তবু ক্ষনিক দৃষ্টির গতরে-গভীর দেখি সবচে’ আপন পর
বেশিদিন দেখা যায়, তাই বলে বেশি হয়না দেখা
কেন তুমি সূর্য ! হলে কাব্যতরীর লেখা?
সারা রাত জাগি, জেগে জেগে ভাবি
আমার উপর সূর্য-র নেই কোন দাবী!
সবচেয়ে দুঃখ বোধয় এই-ই
দাবিহীন প্রেমহীন দূর পাখী সে-ই
ভালোবাসা সহজ তো নয়, হতে হবে জ্বলে পুড়ে ছাই
না হলে ফুলেরা সব প্রেমহীন ছিন্ন নাটাই
আমি ডাকি, তুমি দূর থেকে চেয়ে
শিশির ছাড়িয়ে নব কূলে চলো আপন তরীটি বেয়ে
ফিরে এসো চন্দ্রিমা! রাতের সূর্য আলোকিত নারী
এ জীবনের লাভ-ক্ষতি দু:খ-শোক সব তোমারই
ভাঙ্গো অভিমান,অপ্রেমের পাহাড়, প্রচলিত গান
ফিরে চলো বসি ফের, হাতমুঠো পুরোনো উদ্যান।
কেউ থাকেনি, কেউ থাকেনা, সব গিয়েছে চলে
তাইতো আমি বাঁধি আমায় সূর্যের আঁচলে
খসে পড়ে ভালোলাগা, ভালোবাসার সুখ
ভুলতে পারিনা হায় সূর্যের মুখ!
পৃথিবী বদলে গেছে, বদলে গেছে মানুষের মন
ষড়ঋতুর মত চঞ্চলা পাখিটিও
ছুঁড়ে ফেলে ঝরা পালক
পরিত্যাক্ত উদ্যানে।
আমি বসে বসে হাসি, কান্নার হাসি
আমায় দু:খ দেখাবে বলে সূর্য ও কাঁদে
আমি দীক্ষা নিয়েছি এ জগতের পরে, পৃথিবীর নদী-তটে
বৃক্ষে লতা-পাতায় আকাশে বাতাসে।
আমি নবান্ন হয়ে হাসতে পারিনা
কখনো সুখাভিনয় সূর্য-র হাত ধরে উষ্ণ হয়
পদাঘাতে ফেলে দেয় বিশ্রী ডাষ্টবিনে
উষ্ণ হতে হতে চেয়ে দেখি সবগুলি বৃক্ষ
রসহীন শুকায়ে হয়েছে ডাল
আমি শুধু প্রেমের বন্দনায় চলছি এ অকাল।
আমি বসন্তে ফুঁটিনি,ঋতুর হাত ধরে
ফুঁটেছিল কয়টি তাজা ফুল সুবাসিত
চেয়ে দেখি প্রেম নয়, দয়া আশ্রিত
জ্বলে পুড়ে ছাই
আমার সূর্য নাই!
আমি চাই কবিতা, তুমি চাও জীবন
কবিতার ভেতর জীবনের গান করো বয়কট
খাঁ-খাঁ কেটে গেছে জীবনের সমুদ্র সমতট
কবিতা বোঝোনি,বোঝোনি শব্দের কান্না
কবি ও কবিতা তাই হাস্যকর ঝালমুড়ি রান্না।
বিনম্র পবিত্র চোখে কেন কবিতা চিনলেনা
কেন দেখলে না কবিতার বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস
শুধুই দেখেছ পুঁজিবাদী জীবনের অশ্লীল ব্যবচ্ছেদ।
এসো ফিরে যাই কিংবা একাই ফিরে যাব
তোমার দু’হাত নিয়ে, ফেল যাবনা কিছুতেই
স্বলজ্জ তোমার ঠোঁটের উষ্ণতা কিংবা
নিশী রাতে কবিতা জেগে ওঠার আদিম পদ্য
আমি ফিরে যাব, আঁধারে শুধুই
বেদনার্ত প্রানহীন শহর ছেড়ে
সূর্য-র দিকে হাত পেতে পেতে ভিখেরি সেজে
তুমি কেন হলেনা হায়!
দুঃখ দিলে কবির সারা গায়।
অভিশাপ দিতে জানিনা , কাঁদতেও জানিনা
ভালো বাসতে বাসতে শেষে
আমি ফিরে আসি, ফিরে আসি যুগ-যুগান্তরে
চিরায়ত সূর্যমুখীর দেশে
আমি শিশির , শিশিরে ভরেছি আঁখি
শিশির সূর্যতে তাই এ জনম মাখামাখি।
আমি সূর্যকে ভালোবাসি, আমি ভাসব
আমি দুঃখের চোখে হাসি , আমি নাশব!!
আমি আর কখনো ফিরে যাবনা
এ স্বর্নপুরী ছেড়ে
কোন সূর্য-র দিকে হাত বাড়িয়ে শিশির বিলুপ্ত করবনা
কোন দূরে দুর্ভাগ্যের রজনী বিনিদ্র কাটানো
ব্যথাতুর দুটি আঁখির পানে আমি আর চাইবনা
হৃদয়ের একবিন্দু প্রেমও অপ্রেমে দেব না আর
দ্বি-পদী প্রানীর চেয়ে ঢের ভালো এই নদী
নদী আর বাতাসে আজ হব একাকার
আমি ভালোবাসি অবশেষে নিভৃত অন্ধকার।
প্রিয়ার কোমল হাত কিংবা উদ্দীপক ঠোঁটের স্পর্শ
কিছুতেই হারবনা, না হয় স্তনযুগল তার সুদূর পরাহত
আমি ভালবাসি বহুদূরে ভাসমান ঢেউ সতত বিক্ষত
পাহাড়ের চূড়ায় দাড়িয়ে একবিন্দু ঘাম
ছুঁড়ে ফেলি অবিশ্বস্ত পৃথিবীর গায়ে।
না হয় প্রিয়া সাতরাক সতত উদ্যানে
লাঙ্গলের ফলায় হোক যত চাষ-বাস
আমার বুকে চাপা আছে যত অবিশ্বাস
আমি কোথাও যাবনা
আমি দেখবনা দূরে ধূসর চিনির পাহাড়
বদলে যাওয়া রং তুলিতে হবেনা আঁকা কোন চিত্রপট
আমি শুধু বুনো ফুলে বসে ঘাসের ঘ্র্রান শুঁকে যাব
দেখে যাব শুদ্ধতা রুখতে অপ্রেমের স্বয়ংক্রিয় কপাট
তুমি যদি নারীই রইলে এতদিনে এত ভালোবেসে!
তবে আমি বেঁচে রই এই পরাজিতাকে ভালোবেসে।
নারায়নগঞ্জ/০৫/০৪/০৬
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।