আমি সত্য জানতে চাই
স্যার থমাস শন কনারি যিনি শন কনারি নামেই সমধিক পরিচিত। শন কনারি একজন একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা পুরস্কার বিজয়ী স্কটল্যান্ডীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য। আমাদের মধ্যে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কস্টসাধ্য যে কিনা এখনো বন্ড সিরিজেরে কোন চলচিত্র দেখে নাই ।
জেমস বন্ড ০০৭ নামটি শুনলেই আমাদের সামনেই চলে আসে এমন এক মানুষের নাম যে কিনা অসাধারণ গতিময়তা এবং উপস্থিত বুদ্ধি দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে সমর্থ ।
১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি মোট ৭টি বন্ড ছবিতে অভিনয় করেছেন। ১৯৮৮ সালে তিনি দ্য আনটাচেবল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আজ এই অভিনেতার জন্মদিন। ১৯৩০সালের আজকের দিনে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন।
আজ তাঁর ৮৩তম জন্মদিন। জন্মদিনে জেমস বণ্ডখ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা।
(শিশুকালে শন কনারি)
বন্ড নায়ক শন কনারি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩০ সালের ২৫ আগস্ট। তার বাবা ছিলেন একজন কারখানা শ্রমিক। পরে সে কাজ ছেড়ে তিনি লরি চালানো শুরু করেন।
আর তার মা ছিলেন ধোপা। শন নিজেও তার কর্মজীবন শুরু করেন দুধওয়ালা হিসেবে। এরপর তিনি নেভিতে যোগ দিলেও আলসারের কারণে তাকে নেভি থেকে চাকরিচু্যত করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে তিনি লরি চালক, শ্রমিক, এডিনবার্গ আর্ট কলেজের এক শিল্পীর মডেল ও কফিন বিক্রির কাজ করেছেন। তিনি যে অভিনেতা হবেন, তাই বা কে জানতো? একদিন বন্ড হয়ে তিনি দুনিয়া মাতাবেন, তা ছিলো সবারই ধারণার বাইরে।
১৯৫১ সালে টাকার খোঁজে তিনি কিং'স থিয়েটারে যোগ দেন। এখানে তিনি ব্যাকস্টেজে অভিনেতাদের সাহায্য করতেন। এখানে কাজ করতে গিয়েই তিনি অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন। শুরু হয় তার অভিনয় জীবন।
(যৌবনে শন কনারি)
শন কনারি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য।
ব্রিটিশ লেখক ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সাড়া জাগানো গোয়েন্দা চরিত্র এই জেমস বন্ড। উপন্যাসে বন্ডকে দেখানো হয় রয়্যাল নেভির একজন কমান্ডার হিসেবে, পরে যাকে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের নাম পরিবর্তন করে এমআই৬ রাখা হয়, যার মানে অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস। জেমস বন্ডের কোড হচ্ছে ০০৭। ০০ কোড শুধু তাদেরই দেওয়া হয় যারা প্রয়োজনে হত্যা করার লাইসেন্সপ্রাপ্ত।
ফ্লেমিং জেমস বন্ডকে নিয়ে ফেঁদেছেন ১২টি উপন্যাস আর দুটি ছোটগল্পের সংকলন।
ফ্লেমিংয়ের মৃত্যুর পর জেমস বন্ড চরিত্রটিকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য বই, চলচ্চিত্র, কমিকস, ভিডিও গেমস ইত্যাদি । ১৯৫৪ সালে ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট থ্রিলার চরিত্র জেমস বন্ডকে নিয়ে প্রথম টিভি সিরিয়াল তৈরি করা হয়। তখন থেকেই ফ্লেমিং চিন্তা করছিলেন বন্ডকে নিয়ে ছবি বানানোর। কিন্তু কোনো প্রযোজকই রাজি হচ্ছিলেন না।
অবশেষে ১৯৫৯ সালে অ্যালবার্ট ব্রোক্কোলি রাজি হলেন বটে, কিন্তু তার পার্টনার বেঁকে বসলেন। ১৯৬১ সালে ব্রোক্কোলির সঙ্গে বন্ডের প্রযোজক হিসেবে গাঁটছড়া বাঁধলেন হ্যারি শার্ল্টজম্যান। তারা কাহিনী হিসেবে প্রথম ছবির জন্য পছন্দ করলেন 'ডক্টর নো'। আর বন্ড খুঁজে বের করার জন্য 'ফাইন্ড জেমস বন্ড' শিরোনামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বসলেন। সেই প্রতিযোগিতায় ২৮ বছর বয়সী পিটার অ্যান্থনি নামে এক মডেল জয়ী হলো।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, তাকে বন্ড চরিত্রের সঙ্গে ঠিক মানাচ্ছে না। সুতরাং, তাকেও বাদ দেয়া হলো। শেষমেশ প্রথম বন্ড হিসেবে শন কনারিকেই বেছে নেয়া হলো।
১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি মোট ৭টি বন্ড ছবিতে অভিনয় করেছেন। বণ্ড চলচ্চিত্রের প্রথম পাঁচটি ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেন।
ছবিগুলো হলো - ড. নো (১৯৬২), ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থাণ্ডারবল (১৯৬৫) এবং ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস (১৯৬৭)। তারপর পুণরায় তিনি ডায়মণ্ডস আর ফরএভার (১৯৭১) এবং নেভার সে নেভার এগেইন (১৯৮৩) ছবিতে বণ্ড হিসেবে পুণরায় অংশগ্রহণ করেন। বণ্ড সিরিজের সাতটি চলচ্চিত্রই বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি দ্য আনটাচেবল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৬২ সালে শুরু হয়েছিল জেমস বন্ডের সেলুলয়েড-কাল। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত চলমান এই জনপ্রিয় সিরিজে জেমস বন্ড হিসেবে দেখা গেছে হলিউডের নিজ নিজ সময়ের সেরা ছয় হার্টথ্রবকে। সবাই পেয়েছেন সাফল্য। তবে সেই সাফল্য কি জেমস বন্ডের খ্যাতিতেই এসেছে, নাকি তারকাদের যোগ্যতায়? যদি তারকাদের যোগ্যতার বিচার করা হয়, তাহলে ছয় বন্ডের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাবেন যে কেউ। কারণ কাকে রেখে কার কথা বলবেন? ড্যানিয়েল ক্রেইগ অবশ্য বিব্রত হলেন না মোটেও।
উল্টো আরো ঘোষণা দিয়েই বলে দিলেন, 'শন কনারিই সেরা বন্ড। ' জেমস বন্ড সিরিজের প্রথম ছবিতেই শন কনারি অভিনয় করেছিলেন বন্ড হিসেবে। আর তখন থেকেই নাকি তিনি অনবদ্য। এমনটাই দাবি ক্রেইগের, 'তিনি নিজস্ব একটা ভাবমূর্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন।
শন কনারির সময়কার জেমস বন্ডের ছবিগুলো এখনো মানুষের মনে দাগ কেটে আছে।
রজার মুর আর শন কনারির মধ্যে থেকে সেরা একজনকে বেছে নিতে বললে আমি অবশ্যই শনকে বেছে নেব। ' আর শন কনারির ছবিগুলো যেকোনো সময়ের জন্যই অনবদ্য বলে দাবি করলেন সাম্প্রতিক সময়ের 'বন্ড' ক্রেইগ। করেছেন। আজ এই অভিনেতার ৮৩তম জন্মদিন। জেমস বণ্ডখ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।