বিসমিল্লাহে রাহমানির রাহিম
আজ মানুষ ভুলে গেছে তার পরিচয়। মুসলমান ভুলে গেছে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য। ফলে জলে স্থলে সর্বত্র চলছে অনাচার অবিচার ও অশান্তির প্রবল স্রোত। মানুষে মানুষে চলছে হানাহানি। কাটাকাটি হিংসা-বিদ্বেষ অসাম্য ও দুর্ভোগ।
কোটি কোটি বনী আদম অন্ন বস্ত্র বাসস্থান ও চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরছে অথচ লক্ষ লক্ষ টন খাদ্য সমুদ্রে ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় ব্যয় করা হচ্ছে কোটি কোটি ডলার। যাদের মুখে শোনা যায় শান্তির বাণী তারাই আবার পরস্পরকে দেয় অস্ত্রের হুমকি। অসহায় মানুষ আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে মুক্তির জন্য। মুসলমানদের অবস্থাতো আরও খারাপ।
তাই চলছে যুদ্ধ অথচ, ফিলিস্তিন, কাশ্মীর, আলজেরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, ইরিত্রিয়া, বসনিয়া, চেচনিয়া সহ পৃথিবীর দিকে দিকে মুসলমানদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে বেদীনরা। অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাঈল গাজায় অনবরত নৃশংসভাবে বোমা বর্ষণ করে যাচ্ছে। এই হামলায় আহত ও নিহত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও এখনও হামলা চলছে। এ ব্যাপারে মুসলমানদের কোন ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেই, নেই কোন কার্যকর পদক্ষেপ।
মুসলিম শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিন ইসু্যকে একটি ইসলামিক ইসু্যর পরিবর্তে একটি আরব ইসু্যতে পরিণত করেছে। এখন তারা তথকথিত নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে শত্রুর পক্ষ নিয়েছে; ফলে তারা শত্রুর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেখছে গাজায় এই বর্বর হত্যাকাণ্ড। তাই ফিলিস্তিনবাসীদের উপর হামলা ও ষড়যন্ত্র দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনের অধিকাংশ জায়গা ইসরাঈলের দখলে, বাকিটুকু ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে ওরা। বছরে বছরে দখল করছে।
তারা এভাবে নিরীহ ফিলিস্তিনবাসীদের প্রতি বছর বছর হত্যা করে অবশিষ্ট ফিলিস্তিন অংশ দখল করবে এটা পরিষ্কার দিবালোকের মতো।
মুসলিম দেশের শাসকদের কোন লজ্জা নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও দুনিয়ার মুসলমানদের সামনে তারা নির্লজ্জ। গাজার অধিবাসীরা যেন বাঁচতে না পারে, যেন মৃতু্যবরণ করে, এটাই তারা চায়! তাই জীবন বাঁচানোর জন্য যখন গাজার মানুষেরা সীমান্ত অতিক্রম করতে চেয়েছে, তখন প্রথমে তারা সীমান্ত খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং পরে খুলে দিতে বাধ্য হয়। এখন তারা গাজায় বর্বর হত্যাকাণ্ডের হিসাব নেওয়ার জন্যও উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য মিটিং ডাকছে, যেন গাজায় কি হচ্ছে তা তারা জানে না।
তারা মিটিং করে, খায়, পান করে, কিছু বক্তব্য দেয় এটাই এই সমস্ত শয়তানের অনুচরদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা, যেসব দেশ ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ইহুদি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে এবং তার নৃশংসতাকে সমর্থন দিচ্ছে, সেসব দেশগুলোর কাছে গিয়ে মুসলিম শাসকরা ফিলিস্তিন ও তার অধিবাসীদের উদ্ধার করার জন্য দয়া ভিক্ষা করছে। তাই নজরুল বড় আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আল্লাহকে বাসিয়া ভাল বিশ্ব বিজয়ী ছিল একদিন যারা, আল্লাহকে ভুলিয়া ভীত পরাজিত আজ দুনিয়ায় তারা। আসলে আজকের শাসকেরা আল্লাহ ও আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়া কিনে নিয়েছে। যখন গাজায় আপন ভাই, বাবা, মা, বোনদের হত্যা করা হচ্ছে তারা কিভাবে চোখ বন্ধ করে রাখে ভাই, মা, বাবা ও বোনদের উদ্ধার করা ও জীবন বাঁচানো থেকে?
গাজা গণহত্যার একমাত্র উপযুক্ত জবাব অত্যন্ত পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট। এর জন্য কোন শীর্ষ বৈঠক বা সম্মেলনের প্রয়োজন নেই।
কারণ তারা ভালই জানে সারা বিশ্বে তাদের বিরুদ্ধে যতই মিটিং সভা সেমিনার ও বিক্ষোভ করা হোক এতে তাদের যায় আসে না। এর পরিবর্তে আমাদের যা করা উচিত তাহল, যেসব দেশ এই অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে আর শক্তি যুগিয়েছে তাদের কোন সভার কোন সিদ্ধান্তের মধ্যে এই জবাব থাকবে না। বরং সত্যিকারের জবাব হচ্ছে একমাত্র এবং শুধুমাত্র সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া এবং এতে সকল সক্ষম মুসলমানকে অন্তভর্ুক্ত করা। এটা ছাড়া আর কোন সঠিক ও উপযুক্ত জবাব হতে পারে না। মুসলিম শাসক গোষ্ঠী তা জানে; কিন্তু আসলে তারা ঠেস দেওয়া কাঠের মতো, প্রতারণা আর বিশ্বাসঘাতকতায় দক্ষ।
তাদের উপর আল্লাহর লানত! তারা কতটা বিকৃত মানসিকতার অধিকারী!
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদের শাস্তি দিবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন। (সূরা আত-তাওবা ১৪)
আজ মুসলিম বিশ্ব ও তার শাসকদের বোঝা উচিত, যুদ্ধ এবং কেবলমাত্র যুদ্ধই গাজার অধিবাসীদের সাহায্য করতে পারে। আর এটাই নির্বিচারে গণহত্যার সঠিক জবাব।
এটাই গাজার অধিবাসীদের মুক্তি দিতে পারবে অবরোধ থেকে এবং একমাত্র এটাই মুসলিমদের জ্বলন্ত হৃদয়ে শান্তি দিতে পারে।
এছাড়া কোন শর্টকার্ট রাস্তা নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, নিশ্চয় এতে পরিষ্কার বক্তব্য দেওয়া হয়েছে ইবাদতকারীদের জন্য। (সূরা আম্বিয়া ১০৬)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।