সুত্রঃ নাছির উদ্দিন শোয়েব, আমার দেশ
‘তোর গায়ের রঙ কালো, তোকে বিয়ে করাই ভুল হয়েছে। এখনও যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা পাইনি। এই বাড়িতে তোর স্থান নেই’। কিশোরী স্ত্রী সীমা আক্তারের (১৫) সঙ্গে এভাবেই ঝগড়ায় লিপ্ত হয় মাদকাসক্ত স্বামী দেলোয়ার হোসেন। একপর্যায়ে পাষণ্ড স্বামী ও শাশুড়ি মেয়েটিকে ঘরে আটকে বেদম পেটায়।
রাতে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে ধরিয়ে দেয় আগুন। দাউ দাউ করে পুরো শরীরে জ্বলছিল আগুন। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিত্কার করছিল সীমা। কিন্তু তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। পাশেই তার বুকের ধন ছয় মাসের অবুঝ শিশুকন্যা হৃদামনি চিত্কার করছিল।
পরে শিশুটিকে নিয়ে ঘরের লোকজন পালিয়ে যায়। রংপুরের বদরগঞ্জের মুন্সিপাড়ায় গত বুধবার রাতে ঘটেছে মর্মান্তিক এ ঘটনা। গুরুতর আহত সীমা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ৪র্থ তলার এইচডিইউ বিভাগের ৬ নম্বর বেডে রাখা হয়েছে সীমাকে। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন তার শরীরের ৬৩ ভাগ পুড়ে গেছে।
এ ধরনের রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সীমার মাথা থেকে তলপেট পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। পেট, পিঠ, বুক ও মুখ ব্যান্ডেজে ঢাকা। নড়াচড়া করতে পারছে না সীমা। তার জন্য শুয়ে থাকাও কষ্ট।
সে উঠে বসতেও পারে না। তরল খাবার ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারে না। মৃত্যুর প্রহর গুনছে সীমা। ডা. সাইদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চলছে তার চিকিত্সা। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, আশঙ্কাজনক রোগী হওয়ায় তাকে এইচডিইউ বিভাগে রাখা হয়েছে।
তাকে প্রচুর রক্ত দেয়া প্রয়োজন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে থাকা ধীর কণ্ঠে সীমা বলছে—আমি কি বাঁচব? আমি মরে গেলে আমার কলিজার টুকরো সন্তানের কি হবে? নিজের জীবনের কথা ভুলে গিয়েও ভুলে থাকতে পারছে না সন্তানকে। কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো ভাষা কারও নেই। তার পাশে অসহায় এক মা ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি।
সীমা জানায় ২৮ এপ্রিলের ঘটনা।
দুপুরে শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয়। স্বামী দেলোয়ার হোসেন তখন বাড়িতে ছিল না। রাতে সে আসে বাড়িতে। দুপুরের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে শাশুড়ি ও স্বামী আবার সীমার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। স্বামী ও শাশুড়ি রাতে তাকে মারধর করে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাশুড়ি দুলালী বেগম সীমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। স্বামী ও শাশুড়ি তার গায়ে আগুন দিয়ে মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বাঁচার জন্য সে চিত্কার করলেও আশপাশের বাড়ির কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে সীমাকে উদ্ধার করে। দ্রুত নেয়া হয় রংপুর সদর হাসপাতালে।
অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সীমার আত্মীয়-স্বজনরা বলেন, অত্যন্ত দরিদ্র ঘরের মেয়ে সীমা। চিকিত্সার জন্য ঢাকায় নেয়ার মতো কোনো টাকাও তাদের ছিল না। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত স্থানীয় এমপি আনিসুল হক মণ্ডল। তিনি ১০ হাজার টাকা দেন।
সাড়ে ৬ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে সীমাকে ঢাকায় আনা হয়।
সীমার মা আঞ্জিরা বেগম বলেন, তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। স্বামীর মৃত্যুর পর কষ্ট করে সংসারের খরচ জোগাতে হয়। তিনি বলেন, বাবা আমরা লেখাপড়া জানি না। ভালো মানুষ মনে করে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছিলাম বদরগঞ্জের উত্তর বাউচণ্ডী মধুপুরের দেলোয়ারের সঙ্গে।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। সীমার এক আত্মীয় বলেন, বিয়ের সময় দেলোয়ারকে কিছু টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারি জামাই নেশাগ্রস্ত। নেশার জন্যই সে টাকা দাবি করছিল। সেই টাকার জন্য প্রায়ই সীমাকে মারধর করত।
৫০ হাজার টাকার জন্য কিছুদিন ধরে অস্থির হয়ে পড়ে দেলোয়ার। হাতে টাকা না থাকায় ৩০ শতাংশ জমি দিতে চেয়েছিলাম তাকে। কিন্তু জমি নিতে সে রাজি হয়নি।
সীমা জানায়, সে স্থানীয় স্কুলে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
তার স্বামী প্রায়ই বলত, তুই কালো, তোকে বিয়ে করাই আমার ভুল হয়েছে। শাশুড়ি দুলালী বলত, আমার ছেলেকে বিনা টাকায় একটি কালো মেয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলের দাম লাখ টাকা। বাবার বাড়ি থেকে টাকা না আনতে পারলে এ বাড়িতে তোকে জীবিত রাখব না। সীমা আরও জানায়, দেলোয়ার রিকশা চালাত।
কিন্তু ঘরে কোনো টাকা আনত না। টাকা দিয়ে নেশা করত। নেশা করতে নিষেধ করায় তার ওপর চড়াও হতো। ঘটনার দু’দিন আগে দুপুর বেলা তাকে মারধর করে ডোবার পানিতে ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করলে শাশুড়ি ও ছেলে মারধর করে।
দেলোয়ার প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর গাঁজার আড্ডায় যেত। নেশাগ্রস্ত হয়ে তাকে অমানসিক নির্যাতন করত।
সীমার আত্মীয় আসাদ জানান, এ ঘটনায় সীমার মামা আবদুস সালাম বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় স্বামী ও শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বদরগঞ্জ থানার ওসি কৃষ্ণকুমার সরকার জানান, আসামিরা সবাই এলাকাছাড়া। তাদের গ্রেফতারের জন্য সোর্স নিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
‘তোর গায়ের রঙ কালো, তোকে বিয়ে করাই ভুল হয়েছে। এখনও যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা পাইনি। এই বাড়িতে তোর স্থান নেই’।
কিশোরী স্ত্রী সীমা আক্তারের (১৫) সঙ্গে এভাবেই ঝগড়ায় লিপ্ত হয় মাদকাসক্ত স্বামী দেলোয়ার হোসেন। একপর্যায়ে পাষণ্ড স্বামী ও শাশুড়ি মেয়েটিকে ঘরে আটকে বেদম পেটায়। রাতে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে ধরিয়ে দেয় আগুন। দাউ দাউ করে পুরো শরীরে জ্বলছিল আগুন। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিত্কার করছিল সীমা।
কিন্তু তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। পাশেই তার বুকের ধন ছয় মাসের অবুঝ শিশুকন্যা হৃদামনি চিত্কার করছিল। পরে শিশুটিকে নিয়ে ঘরের লোকজন পালিয়ে যায়। রংপুরের বদরগঞ্জের মুন্সিপাড়ায় গত বুধবার রাতে ঘটেছে মর্মান্তিক এ ঘটনা। গুরুতর আহত সীমা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ৪র্থ তলার এইচডিইউ বিভাগের ৬ নম্বর বেডে রাখা হয়েছে সীমাকে। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন তার শরীরের ৬৩ ভাগ পুড়ে গেছে। এ ধরনের রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সীমার মাথা থেকে তলপেট পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। পেট, পিঠ, বুক ও মুখ ব্যান্ডেজে ঢাকা।
নড়াচড়া করতে পারছে না সীমা। তার জন্য শুয়ে থাকাও কষ্ট। সে উঠে বসতেও পারে না। তরল খাবার ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারে না। মৃত্যুর প্রহর গুনছে সীমা।
ডা. সাইদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চলছে তার চিকিত্সা। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, আশঙ্কাজনক রোগী হওয়ায় তাকে এইচডিইউ বিভাগে রাখা হয়েছে। তাকে প্রচুর রক্ত দেয়া প্রয়োজন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে থাকা ধীর কণ্ঠে সীমা বলছে—আমি কি বাঁচব? আমি মরে গেলে আমার কলিজার টুকরো সন্তানের কি হবে? নিজের জীবনের কথা ভুলে গিয়েও ভুলে থাকতে পারছে না সন্তানকে। কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো ভাষা কারও নেই।
তার পাশে অসহায় এক মা ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি।
সীমা জানায় ২৮ এপ্রিলের ঘটনা। দুপুরে শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয়। স্বামী দেলোয়ার হোসেন তখন বাড়িতে ছিল না। রাতে সে আসে বাড়িতে।
দুপুরের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে শাশুড়ি ও স্বামী আবার সীমার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। স্বামী ও শাশুড়ি রাতে তাকে মারধর করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাশুড়ি দুলালী বেগম সীমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। স্বামী ও শাশুড়ি তার গায়ে আগুন দিয়ে মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বাঁচার জন্য সে চিত্কার করলেও আশপাশের বাড়ির কেউ এগিয়ে আসেনি।
পরে খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে বাবার বাড়ি থেকে লোকজন গিয়ে সীমাকে উদ্ধার করে। দ্রুত নেয়া হয় রংপুর সদর হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সীমার আত্মীয়-স্বজনরা বলেন, অত্যন্ত দরিদ্র ঘরের মেয়ে সীমা। চিকিত্সার জন্য ঢাকায় নেয়ার মতো কোনো টাকাও তাদের ছিল না।
খবর পেয়ে হাসপাতালে যান জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত স্থানীয় এমপি আনিসুল হক মণ্ডল। তিনি ১০ হাজার টাকা দেন। সাড়ে ৬ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে সীমাকে ঢাকায় আনা হয়।
সীমার মা আঞ্জিরা বেগম বলেন, তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। স্বামীর মৃত্যুর পর কষ্ট করে সংসারের খরচ জোগাতে হয়।
তিনি বলেন, বাবা আমরা লেখাপড়া জানি না। ভালো মানুষ মনে করে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছিলাম বদরগঞ্জের উত্তর বাউচণ্ডী মধুপুরের দেলোয়ারের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। সীমার এক আত্মীয় বলেন, বিয়ের সময় দেলোয়ারকে কিছু টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারি জামাই নেশাগ্রস্ত।
নেশার জন্যই সে টাকা দাবি করছিল। সেই টাকার জন্য প্রায়ই সীমাকে মারধর করত। ৫০ হাজার টাকার জন্য কিছুদিন ধরে অস্থির হয়ে পড়ে দেলোয়ার। হাতে টাকা না থাকায় ৩০ শতাংশ জমি দিতে চেয়েছিলাম তাকে। কিন্তু জমি নিতে সে রাজি হয়নি।
সীমা জানায়, সে স্থানীয় স্কুলে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তার স্বামী প্রায়ই বলত, তুই কালো, তোকে বিয়ে করাই আমার ভুল হয়েছে। শাশুড়ি দুলালী বলত, আমার ছেলেকে বিনা টাকায় একটি কালো মেয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলের দাম লাখ টাকা।
বাবার বাড়ি থেকে টাকা না আনতে পারলে এ বাড়িতে তোকে জীবিত রাখব না। সীমা আরও জানায়, দেলোয়ার রিকশা চালাত। কিন্তু ঘরে কোনো টাকা আনত না। টাকা দিয়ে নেশা করত। নেশা করতে নিষেধ করায় তার ওপর চড়াও হতো।
ঘটনার দু’দিন আগে দুপুর বেলা তাকে মারধর করে ডোবার পানিতে ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করলে শাশুড়ি ও ছেলে মারধর করে। দেলোয়ার প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর গাঁজার আড্ডায় যেত। নেশাগ্রস্ত হয়ে তাকে অমানসিক নির্যাতন করত।
সীমার আত্মীয় আসাদ জানান, এ ঘটনায় সীমার মামা আবদুস সালাম বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় স্বামী ও শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বদরগঞ্জ থানার ওসি কৃষ্ণকুমার সরকার জানান, আসামিরা সবাই এলাকাছাড়া। তাদের গ্রেফতারের জন্য সোর্স নিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।