ভিসা জটিলতায় দুদিন পিছিয়ে শারজায় চট্টগ্রামের পোর্টসিটি ক্রিকেট লিগ (পিসিএল) শুরু হয়েছে ২৮ মার্চ। বেলুন উড়িয়ে শুরুর আনুষ্ঠানিকতা করেছিলেন প্রবাসী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ নুরে আলম লিটন, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, শামসুল হক চৌধুরী, সাগুফতা ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট শাহ আলম। রাসেল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও শামসুল হক চৌধুরী তার সদস্য। অথচ পিসিএল শুরুর ৬দিন আগে (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর দফতর পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া পিসিএল বাতিল ও প্রচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা জানাতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন! আয়োজকরা সরকার দলীয় সমর্থক বলেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশকে অবজ্ঞা করে কাল পিসিএল শেষ করে ফেললো!
চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে ব্যয় হয়েছিলো ১ কোটি টাকারও কম।
অবশ্য মাঠ ব্যবহারের ভাড়া ৪৮ লাখ টাকা এখনো পরিশোধ করেনি আয়োজকরা। এবার ৭ কোটি টাকা বাজেট বলা হলেও পিসিএল আয়োজক সূত্র জানিয়েছেন পরিমানটা ১২ কোটি টাকা। আর্থিক লেনদেন নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ায় গোমর ফাঁস হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি দিদারুল আলম চৌধুরী মূলধারায় আসার চেষ্টা করাতেই বেরুচ্ছে ভেতরের খবর। তার তৎপরতায় অর্থ আত্মসাত, মানিলন্ডারিং, আদম পাচারের বিষয়গুলো মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও কোন উদ্যোগী ভুমিকা দেখা যায়নি, যাচ্ছে না পররাস্ট্রমন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর।
তবে টনক নড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের। ২২ মার্চ ত্বড়িৎ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ‘বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার যৌথস্বত্ত্ব পিসিএল টি২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট কোন প্রকার ছাড়পত্র বা অনুমোদন ছাড়া ব্যক্তি মালিকানায় ফাউন্ডেশন গঠন করে শারজায় অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা ও প্রচেষ্ঠাকারীদের বিপক্ষে ব্যবস্থা নিয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া। চিঠি প্রসঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ আহসান রাসেল কাল জানালেন, এটা তো আমি জানি না। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। দিলে হয়তো ক্রীড়ামন্ত্রী জানতে পারেন।
’ এ ব্যাপারে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: আহাদ আলী সরকার জানালেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠি এসেছে জেনেছি। তবে এটা এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। আরো ভালো করে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। দিন দুয়েকের মধ্যে এটা নিয়ে বসব।
শুধু টুর্নামেন্ট বাতিলই নয়, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি দিদারুল আলম চৌধুরীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে২৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিলো শারজায় টাকা পাচার ও আত্মসাতের ঘটনা তদন্তেরও।
আদম পাচারের অভিযোগ সম্পর্কে জাহিদ আহসান রাসেল জানান, এটা এখনই বলা যাবে না। টুর্নামেন্ট শেষে ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যারা গেছে তাদের প্রত্যেককে মোটা অংকের ফি দিতে হয়েছে নিশ্চয়তা হিসাবে। কেউ অভিবাসী হলে তো আয়োজকরাই আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আয়োজনটা ‘দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার’ হলেও গোছালো ছিল না।
আরো সময় নিয়ে অভিজ্ঞদের সহযোগিতা নেয়া উচিত ছিলো বলে মনে করেন তিনি। চট্টগ্রামের মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ পিসিএলের অডিট করার কথা বললে শারজায় বাংলাদেশি মিডিয়াকে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাছির জানান, পিসিএল নিয়ে মেয়রের কথা বলার অধিকার নেই! সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের পিকনিক ট্যুর হওয়াতেই ‘হয়তো’ পিসিএল কর্তারা বড় গলায় কথা বলছেন!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।