আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাভার ট্র্যাজেডিঃ অপরাজনীতির মুখোশ ও দুর্জনের বয়ান

আমি কেবলই আমার মতো বিল্ডিং ধসে পড়ার পর থেকেই সকল পক্ষ উদ্ধারকাজে আত্মনিয়োগ করেছে। সরকারী সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উদ্ধার কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। কেউ গিয়েছে সরকারের পক্ষে জনগনের ট্যাক্সের টাকা হালাল করতে কেউ গিয়েছে তার পেশাগত দায়িত্বপালন করে নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতিতে প্রোফাইল ভারি করতে। কেউ গিয়েছে নিতান্তই মানবিক মানসিকতা থেকে। এরকম নানাজন নানান কারনে যোগ দিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নাই।

একেকজনের যোগ দেয়ার কারন ভিন্ন ভিন্ন হলেও সত্য হলো, যে যেভাবেই অংশ নিয়ে থাকুক সকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই অর্থাৎ 'উদ্ধার' কাজে ভুমিকা রাখা। এক্ষেত্রে আমরা দেখতে পেলাম, স্বাভাবিক কাজ যা হবার তা চলছে। কিন্তু বাইরে দোষারুপের অপরাজনীতির পাশাপাশি কথা চালাচালিও চলছে। কিন্তু এসবের কোন প্রভাব উদ্ধারকাজে পড়েছে এমনটা কেউ বলতে পারবে না। কেননা, যারা উদ্ধারকাজে জড়িত তাদের পক্ষে মধ্যরাতের টকশো বা পত্রিকার পাতায় উল্টাপাল্টা মন্তব্য পাঠের সুযোগ নাই এমনকি তাদের পক্ষে গাফিলতি করার ন্যুনতম সুযোগ রয়েছে একথাও কেউ অভিযোগ করছে না।

এরমধ্যে আমরা দেখলাম, একটি চক্র বলছে যে, সেনাবাহিনীকে পুরোশক্তি নিয়োগ করতে দেয়া হয়নি। তারা বলতে পারতো যে, সেনাবাহিনী বেঠিক কিছু করছে। কিন্তু তাদের সেই মুরোদ নাই। ফলে তারা ঘুরিয়ে সরকারকে দায়ী করে একটা ধোয়াটে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। এই তালিকায় বিএনপির মওদুদ সাহেব প্রথমেই নিজের নাম নিশ্চিত করেছেন।

এর ধারাবাহিকতায় কতিপয় বাম সংগঠন একই বক্তব্য দিয়েছে, এমনকি হেফাজত এবং জামাত একই সুরে একই কথা বলেছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমি মনে করি। এর উত্তরে বলতে চাই, সরকার সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে। গাফিলতি থাকলে সেনাবাহিনীর রয়েছে। কিন্তু তারা সেনাদের কোন দোষ দেখেনা।

তারা দেখে শুধু সরকারের দোষ। আদতে সেখানে কোন গাফিলতার ঘটনা ঘটেনি। তাই তারা ইনিয়ে বিনিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সরকারকে ব্যর্থতার দায় দিতেই এই হীন বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। এরপরে দেখা যাচ্ছে, কতিপয় বাম সংগঠন বলছে যে, উদ্ধারকাজে সরকারি কোন সংস্থার চেয়ে সাধারন মানুষের ভুমিকাই মুখ্য। সাধারন মানুষের ভুমিকা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু তারাই 'মূখ্য' একথা কেন বলছে? সাধারন মানুষ কী সমগ্র উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করার সামর্থ রাখে? নাকি তাদের পক্ষে সম্ভব? না সেটা সম্ভব যেমন নয়, তেমনি এমনটি প্রত্যাশিতও নয়। কেননা, সুসংগঠিত ও প্রশিক্ষিত সংস্থা থাকতে সাধারন মানুষের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশা করার কোন কারন নাই। কিন্তু তবুও তারা একথা বলছে। কারন তারা সরকারকে কোন সফলতার দাবীদার হতে দিতে চায়না। তারা ভুলে গেছে যে, সরকার কোন দলের নয়, সরকার সকল মানুষের প্রতিনিধি মাত্র।

কিন্তু তারা সচেতনভাবেই এমন কথা বলে সরকারকে উত্তরহীন করে রাখতে চাইছে কৌশলে। সাধারন মানুষের কথা উল্লেখ করে তারা সরকার ও জনগনকে মুখোমুখি দাড় করানোর হীন চক্রান্ত করছে। এবং জনগনের কথা উল্লেখ করা মানেই যেকোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে চুপ থাকা স্বাভাবিক। এই সুযোগটি তারা গ্রহন করছে। আরেকটি কারন হলো এদেশের অনেক বাম সংগঠন মুলত এনজিও করে বেড়ায়।

এজন্য তারা সরকারি খাতের চেয়ে বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় আমরা দেখছি, সরকার বিরোধী দলগুলো এবং জঙ্গী জামাত-হেফাজতও একই কথা বলছে। এগুলো সবই অপরাজনীতির অংশ। এগুলো ভাববার মতো বিষয় হলেও উদ্ধারকাজে এসবের কোন প্রভাব পড়েনি। এটাই বাস্তবতা।

আমি মনে করি, কে কী বলছে সেটা নিয়ে ব্যস্ত না হয়ে বরং কী কাজ হচ্ছে সেটাই বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত। সবার সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না হওয়াই মঙ্গলজনক। এদেশে ভুয়া তত্বীয় বিশ্লেষন স্বাধীনতার পর থেকেই হাজির করেছে কতিপয় বাম সংগঠন আর সেই সুবিধা নিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। এটা ঐতিহাসিক সত্য। সকল সফলতার পাশাপাশি সকল ব্যর্থতার দায় এদেশের রাষ্ট্র পরিচালনাকারী সকলের।

বর্তমানই শেষকথা নয়। কেননা, বর্তমানের আগে রয়েছে সুদীর্ঘ অতীত। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।