আজ এনসিএল টি-টুয়েন্টি লীগের প্রথম আসরের ফাইনাল। ভারতের ঘরোয়া আইপিএল নিয়ে আমাদের মিডিয়ার মাতামাতির আড়ালে প্রায় চাপা পড়ে গেছে আমাদের নিজস্ব লীগের প্রথম আসর। যদিও আইসিএল ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে আমাদের ক্রিকেট। আইপিএল আমাদের মাশরাফিদের নিয়ে যে অবহেলা করেছে তাও মন খারাপ করে দেয়। তারপরও আসুন আমরা ফিরে দেখি এনসিএল টুকিটাকির দিকে-
দলের নামের মজা
আমাদের ছয় বিভাগের নামে ৬টি দল।
নবাগত বিভাগ রংপুরের এবার দল নেই। আগামী বছর দল আসবে বলে আশা করা যায়। দলগুলোর নাম দেয়া হয়েছে বিভাগের নামের প্রথম বর্ণের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে-
ডিডি- ঢাকা ডায়নামাইটস
সিসি-সাইক্লোনস অব চিটাগাং
আরআর-রাজশাহী রেঞ্জারর্স
কেকে-কিংস অব খুলনা
বিবি-বরিশাল ব্লেজার্স
এসএস-সুলতানস অব সিলেট।
এক্সপ্রেস কলিশন
এবার এনসিএল-এ প্রধান আকর্ষণ ছিলেন রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস শোয়েব আকতার। আমাদের নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফি বিন মুরতাজা মিলে ভালো একটা লড়াই আশা করা হয়েছিলো।
বাস্তবে সেটা হয়নি। প্রথম মোকাবেলায় নড়াইল এক্সপ্রেস জয়ী। পিন্ডি এক্সপ্রেস এবার কাজ করেনি। ফলে চলে যেতে হয়েছে আগেই।
দেশীরাই সেরা
আইপিএল ধামাকায় বিদেশী তারকা পাওয়া কঠিন হলেও দলগুলো বিদেশী প্লেয়ার নিয়েছে।
শ্রীলঙ্কান দু'একজন ছাড়া বিদেশীরা ভালো করতে পারেনি। দেশী প্লেয়াররাই সবচেয়ে ভালো করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর।
মাশরাফির কামব্যাক
মাশরাফিকে এবারও কেকেআর নিয়েছিলো। আমাদের প্রিয় কোচ ডেভ হোয়াটমোর আছেন সে ভরসায় আমরা বুক বেঁধেছিলাম।
তারপরও ম্যাশ এবার একবারও নামতে পারেননি। তবে এনসিএল-এ তিনি ব্যাটিং বোলিং দুই ক্ষেত্রেই নিজের ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন। আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য এটা সুখবর। বিশব্কাপের আগে প্র্যাকটিস আর বিশ্রাম দুটোই তিনি পাচ্ছেন।
সাকিবের ব্যাডপ্যাচ
বিশ্বসেরা ওডিআই অলরাউন্ডার আমাদের দলনেতা সাকিব আল হাসানের ব্যাটে রানের খরা শুরু হযেছে।
ভালো রান পাননি। ছয় ম্যাচে মোট ৫৯ রান। সর্বোচ্চ রান ১৮। তারওপর অহেতুক খোঁচা মেরে,সুইপ করে উইকেট বিলানোর আশরাফুলীয় রোগে পেয়ে বসেছে তাকে। তবে বোলিংয়ের ধার ঠিক আছে।
বোলার আশরাফুল !
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং স্তম্ভ বলে পরিচিত আশরাফুলের ব্যাটে রান নেই বহুদিন। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এনসিএল তার জন্য ভালো সুযোগ এনেছিলো। কিন্তু ব্যাট কথা বললো না। বরং তাকে পাওয়া গেলো দুর্ধর্ষ বোলার হিসাবে। সর্বোচ্চ ১০ উইকেট শিকারীদের মধ্যে আশরাফুল একজন !
কায়েসের নবজন্ম !
ইমরুল কায়েসকে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নেয়ায় সিলেক্টারদের ওপর কেউ একহাত নিয়েছেন।
কেউ নিয়েছেন দশহাত। সেই ইমরুল কায়েসই এ পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ২১৪ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরার। খুলনার হয়ে আজকের ফাইনালে সংখ্যাটা আরেকটু বড়ো হবার সম্ভাবনা তো রইলোই।
কাপালীর জন্য দীর্ঘশ্বাস !
আইসিএল দু:স্বপ্ন এখনো যাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অলোক কাপালী তাদের একজন। কাপালীকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না ডাকায় অনেকেই ক্ষুব্ধ/ব্যথিত হয়েছেন।
কাপালী বিরোধীরা ছিলেন উল্লসিত। কিন্তু এনসিএলএ কাপালীর দারুন পারফর্মেন্স সিলেক্টারদের সমালোচনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। কাপালী কেন নেই এটা এখন বাড়তি দীর্ঘশ্বাসের কারণ হয়ে গেলো।
টাইটেল ডেস্টিনি গ্রুপের
এনসিএল-এর প্রথম আসরের টাইটেল স্পনসর ডেস্টিনি গ্রুপ।
সম্প্রচারে, দলের মালিকানায় এটিএন
এনসিএল-এর প্রথম আসরের সম্প্রচার স্বত্ব পেয়েছে এটিএন।
ভালো করার চেষ্টা করেছে। কম্পিউটারের কিছু কাজ দেখলাম। সামনে আরো ভালো হবে এ আশা করাই যায়। পাশাপাশি এটিএন গ্রুপ ফাইনালিস্ট কিংস অব খুলনার মালিক।
মিডিয়ার অবহেলা !
এনসিএল মিডিয়ায় অবহেলিত হয়েছে।
বিশেষত: টিভি চ্যানেল গুলো যেখানে আইপিএল-এর খেলার ফলাফলের সাথে দিনের খেলা স্ক্রলে দেখায় তারাই এনসিএল-এর রেজাল্টও দেখায় না। বেশির ভাগ চ্যানেলের এই দশা। যারা দেখান তারাও অবহেলার ভাবটা লুকান না।
ব্লগেও অবহেলা
সামু ব্লগেও আমাদের নিজস্ব এনসিএল অবহেলার শিকার হয়েছে। আমি মাঝে মাঝে ক্রিকেট নিয়ে পোস্ট দিই।
খেলা থাকলে সবসময় দিই। তখন অনেকেই পোস্ট দেন। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য শুভ খবর। তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের আনাগোনা চোখে পড়লো না এনসিএল চত্বরে।
তারকাদের টাকাকড়ি
এনসিএল ক্রিকেট তারকাদের টাকাকড়ির ভান্ডার সমৃদ্ধ করেছে।
পাকিস্তানের শোয়েব আকতার খেলেছেন ম্যাচপ্রতি সাড়ে পাঁচ হাজার ডলারে (প্রায় তিনলাখ পঁচাশি হাজার টাকা)। আশরাফুল, সাকিব, তামিম, কাপালি, শাহরিয়ার নাফিস, নাঈম এরা সবাই পেয়েছেন ম্যাচ প্রতি সর্বোচ্চ চার লাখ টাকা করে। এনসিএল তারকাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
পুরস্কারের ঝলক !!!!!
এনসিএল-এ আছে নানারকমের বিশাল সব পুরস্কারের ব্যবস্থা। আজ খেলা শেষে এসব পাবে সব কীর্তিমান দল আর প্লেয়াররা।
শিরোপা জয়ী দল পাবে ৭০ লাখ টাকা।
রানার্স আপ দল পাবে ৩৫ লাখ টাকা।
ম্যান অব ফাইনাল পাবেন ৫০ হাজার টাকা।
দ্রুততম ফিফটির জন্য পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা।
ফাইনালের সর্বোচ্চ স্কোরার পাবেন একটি ওয়াল্টন মোটর বাইক।
মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার পাবেন একটি তরতাজা সেডান কার।
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পাবেন ৩২ ইঞ্চি ডিটুকে এলসিডি টিভি।
ম্যান অব দা টুর্ণামেন্ট পাবেন এক লাখ টাকা।
এবং আরো আরো.....................................................!!!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।