আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিযবুত নিষিদ্ধ সংগঠন হলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কি হওয়া উচিৎ? প্রফেসর মহিউদ্দিন রিমান্ডে থাকলে সারাদেশের ছাত্রলীগ যুবলীগ ও অন্যান্যলীগের আগাগোড়া সন্ত্রাসী, লুটেরা ও হার্মাদদের কোথায় থাকা উচিৎ?

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক জনাব মহিউদ্দিন স্যারকে পুলিশ পরশু রাত আড়াইটায় গ্রীনরোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে। তিনদিনের রিমান্ড চলছে তারঁ। অভিযোগ- তিনি রাস্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতার চক্রান্ত করছেন! হিজবুত তাহরীরের অনুসারীরা গোপন ঘাঁটি থেকে তারঁ সাথে যোগাযোগ করেন!! তিনি বা তার দলের প্রচারনা গনতন্ত্র নস্যাৎ করার পায়ঁতারা আটঁছেন!!! তার কতিপয় অনুসারীর দখলে দাহ্য বস্তু পাওয়া গেছে (সরকারি উকিলের টিভি ভাষ্য)!!!! একটা বিষয় পরিস্কার বলে রাখি- রাস্তাঘাটে বড় বড় হলুদ ব্যাকগ্রাউন্ডের কিছু পোস্টার, লিফলেট আর সাম্প্রতিক পত্রিকার নানাবিধ খবর, তস্যখবর ছাড়া হিযবুত তাহরীর সম্পর্কে আমার বিশেষ কোন ধারনা নাই। তবে মহিউদ্দিনকে আমি চিনি ভালভাবে। Mohiuddin Ahmed সংক্ষেপে MOA নামেই তিনি আমাদের (আইবিএ স্টুডেন্ট) কাছে পরিচিত।

সামনাসামনি স্যার ডাকলেও আইবিএর কালচার অনুযায়ী আড়ালে মোয়ার ক্লাশ, মোয়ার কুইজ বা মোয়ার এক্সাম এভাবেই আমরা বলতাম। এমবিএ সেকেন্ড সেমিস্টারের ম্যানেজম্যান্ট একাউন্টিং কোর্সের টিচার ছিলেন আমাদের ব্যাচে। এর বাইরেও তিনি আইবিএ হোস্টেল-গ্রীনরোডের সহকারী ওয়ার্ডেন ছিলেন কিছুদিন। অনেক ব্যাচমেটের আরো অনেক কোর্সের টিচার ছিলেন বা ইন্টার্নশীপ সুপারভাইজর ছিলেন। কমবেশী আড়াইবছর মহিউদ্দিনকে অবজার্ব করার সুযোগ আমার ও আরো কয়েকশ ছাত্রের হয়েছে।

যথারীতি যথাসময়ে গ্রেড না দেয়া, ক্লাশ রিশিডিউল করার কিছু অভিযোগ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে করা যাবে। এবং মহিউদ্দিন কোনো ফেরেশতা নয়। তবু এটা বলা যায়- আইবিএর ৩০+ টিচারের মধ্যে তাকে বেস্টদের একজন বলা অতিরন্জন হবেনা। অন্তত: আচার আচরন, সততা, যে বিষয় পড়াচ্ছেন সে বিষয়ক জ্ঞান, বিনয়, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদির আলোকে। কথায় কথা বাড়ে, আইবিএর শিক্ষকরা কেউ কেউ নিতান্তই উম্মাদ, কারো কারো গলার স্বর প্রথম বেঞ্চের শিক্ষার্থীটার কানেও পৌছায়না, কারো কারো স্বভাব বিবিএর কম বয়সী সুন্দরী মেয়েদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, কোন কোন শিক্ষক পরীক্ষায় এটেন্ড না করা ছাত্রীকেও এ গ্রেড দেন (হয় ছাত্রী অতি সুন্দরী বা তার বাবা বিরাট ব্যবসায়ী/আমলা যেখানে উক্ত শিক্ষক খানিকটা কনসালট্যান্সী ভিক্ষা পাবেন), কোন কোন শিক্ষক কি ক্লাস নিতে আসছেন সেটারই পাত্তা নেই (বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে কিছু প্যাচালঁ পাড়লেন এবং ক্লাশ শেষে বুঝতে পারলেন যে এটা একাউন্টিং ক্লাশ)।

এহেন দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দেশের এক নম্বর বিজনেস স্কুলটিতে হাতে গোনা যে কয়েকজন শিক্ষক খানিকটা হলেও 'মান, সততা ও নিস্ঠা' দিয়ে পাঠদান করার চেস্ঠা করছেন মহিউদ্দিন তাদের একজন। তার পেশাগত একটি সততা উল্লেখ না করলেই নয়। এ মহিউদ্দিনই যে হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের সমন্বয়ক তা আমরা বুঝতে পারি অনেক পরে। ক্লাশে, করিডোরে, রাস্তাঘাটে, ক্যান্টিনে, হোস্টেলে কখনো কোন ছাত্র বা অন্যকারো সাথে ঘুনাক্ষরেও তা তিনি উচ্চারন করেননি। সামাজিক রাজনৈতিক এ সংগ্রাম ও দৃস্টিভংগীকে তিনি নেহায়েৎই তারঁ ব্যক্তিগত পরিমন্ডলে সীমাবব্ধ রেখেছেন, ক্যাম্পাসের সাথে ঘোল পাকাননি।

যেখানে ঢাকা ও অন্যান্য সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা 'ল্যাংটা' হয়ে আলীগ, বিএনপি, জামাত, বামাদর্শের মিছিল মিটিং করছেন; শিক্ষকতার মহান কাজ অধ্যয়ন, পাটদান, গবেষনা, পাবলিকেশন, ছাত্রদেরকে কাউন্সেলিং ইত্যাদি শিকেয় তোলে শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার কথা বাদ (!) তাদের তিন স্তর নীচের নেতা পাতি নেতা বা সিকি নেতার পা চাটছেন; সেখানে মহি্উদ্দিন তো কৃষ্ণপক্ষের বড় কোন নক্ষত্র! আজ মহিউদ্দিন রিমান্ডে। বলি! তার আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, সরকারের সকল আমলা বা সকল মিলিটারী অফিসার রিমান্ডে যাওয়া উচিৎ! এমনকি যে অফিসার তার রিমান্ড প্রার্থনা করেছেন আর যে জজ সাহেব তা মন্জুর করেছেন আর যেসব আইনজীবি তাতে যোগ দিয়েছেন সকলেরই রিমান্ডে যাওয়া উচিৎ! কেননা আমার কমবেশী সবাই মহিউদ্দিনের চেয়ে বেশী অপরাধী! হিযবুত তাহরীর বস্তুটা আমার কাছে আর ১০টা বামধারার মত পোস্টার লিফলেট সেমিনার সর্বস্ব দলই মনে হয়। বায়তুল মোকাররমের উত্তরগেট থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কটা মিছিল আর অতিকায় কিছু পোস্টার লাগানো ছাড়া তারা কারো পাকা ধানে মই বা বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে বলে মনে পড়েনা। গতানুগতিক রাজনীতির হিসেবেও তা আ'লীগের কোন লুটের পাতে ভাগ বসালো তা আমরা বুঝিনা। তাপসের উপর কে বা কারা বোমা মারল।

আর তাদের কিছু লোককে ধরা হল। তার পর ধরা হল মেহরীনকে। এরপর মেহরীনের সাথে ব্রিগ্রেডিয়ার বারীর সম্পর্ক নিয়ে পত্রিকায় অনেক রসালো কিস্তি ছাপা হল। এরপর চুপ! এখন বলা হচ্ছে তাদের দখলে দাহ্য বস্তু পাওয়া গেছে। তা কি কাঠ, কাগজ, কয়লা না গাছের পাতা তা সরকার বলছেনা।

বলি! সরকার নিজেই তো একটা দাহ্য বস্তু! শাড়ী, মুজিবকোট, লুংগি সবইতো দাহ্য! গণতন্ত্র নস্যাত তো বাড়ে বাড়ে করেছে আওয়ামীলীগ নামধারী কতিপয় মৃত ও জীবিত ব্যক্তি এবং প্রতিদিনই তারা তা এখনো করছে। হিযবুত তাহরীর তো কারো বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তির হক, সম্মান নস্ট করেনি। হিযবুত নিষিদ্ধ সংগঠন হলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কি হওয়া উচিৎ? প্রফেসর মহিউদ্দিন রিমান্ডে থাকলে সারাদেশের ছাত্রলীগ যুবলীগ ও অন্যান্যলীগের আগাগোড়া সন্ত্রাসী, লুটেরা ও হার্মাদদের কোথায় থাকা উচিৎ? এ কোন বাংলাদেশ?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.