জামায়াতের কাছ থেকে অর্থও পায় হিযবুত
সেই ম্যাজিস্ট্রেট ওমরও রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক
'২০০৮ সালে নারী উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নের বিরোধিতার আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথমে জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব কমে। পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে হিযবুত-জামায়াত সম্পর্ক নতুন মোড় নেয়। সম্প্রতি জামায়াতের পক্ষ থেকে সব ধরনের আন্দোলন- সংগ্রামে সমর্থনের কথা জানানো হয়েছিল তাদের সংগঠনকে। জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামান ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি তাসনীম আলম হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি সমন্বয় করতেন। এ ছাড়া জামায়াতের কাছ থেকে হিযবুত তাহ্রীর অর্থ সহায়তাও পায়।
'
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে হিযবুত তাহ্রীরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. সৈয়দ গোলাম মওলা এসব তথ্য দিয়েছেন। মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গতকাল রবিবার ছিল রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন।
সূত্র জানায়, গোলাম মওলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিষিদ্ধ জেএমবির পর এবার আরেক জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। জামায়াত ছাড়াও সদ্য বন্ধ হওয়া দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে হিযবুত তাহ্রীরের গোপন সম্পর্কের বিষয়টিও গোলাম মওলা স্বীকার করেছেন।
কিছু সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় এর আগে মাহমুদুর রহমানকে উত্তরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, যে মামলায় গোলাম মওলাসহ হিযবুতের মহিউদ্দিন ও মোরশেদুল আসামি।
এদিকে দুই দিন আগে রাজধানীর কলাবাগান থেকে গ্রেপ্তার হিযবুত তাহ্রীরের চার জঙ্গির মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে আসা সেই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ ওমর শরীফও আছেন। তাঁকেসহ গ্রেপ্তার চারজনকে গতকাল গোলাম মওলার মুখোমুখি করা হয়। জানা গেছে, শরীফ ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে পাস করেন। ২০০৮ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে চাকরিতে যোগ দেন।
ওই বছরের আগস্ট মাসেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। সংগঠনে বেশি সময় দেওয়ার জন্যই তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তবে হিযবুত তাহ্রীরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে সরাসরি শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত নুর মোহাম্মদ, নাসির উদ্দিন মজুমদার (চবির সাবেক ছাত্র), রকিব উদ্দিনও জিজ্ঞাসবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা একসময় শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদকারীদের একটি সূত্র জানায়, হিযবুত তাহ্রীর গঠন ও উচ্চশিক্ষিত যুবকদের টার্গেট করার কারণ জানতে চাইলে গোলাম মওলা দাবি করেন, ইন্টেলেকচ্যুয়াল বন্ডেজ থেকে এই দল গঠন।
তাঁর দাবি, ইন্টেলেকচ্যুয়াল মুভমেন্ট ছাড়া পরবর্তী সময় ইমোশনাল মুভমেন্ট দিয়ে কোনো আন্দোলন সফল হবে না। তবে তিনি এ-ও দাবি করেন, সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তাঁদের মুভমেন্ট ঠিক ছিল না। এ ছাড়া বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সরকারকে জড়িয়ে কুৎসা রটানোটাও ঠিক হয়নি তাঁদের। এসব তাঁদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে তিনি স্বীকার করেন।
জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ বা সম্পর্কের প্রয়োজন হয় কেন_এ রকম প্রশ্নে গোলাম মওলা দাবি করেন, জামায়াতের আগ্রহেই সম্পর্ক নতুন মোড় নিয়েছিল।
দৈনিক কালের কন্ঠ ১২ জুলাই ২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।