আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কী লিখি! আহাম্মক পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান

নীরব বয়ান

অনেকদিন পর ব্লগে এলাম। চিন্তা করছি কী লিখবো? লেখার জন্যে চিন্তা করার করার সময় পাই না। দেশে কত সমস্যা। অনেক লেখা যায়। কিন্তু আমি দূর পাহাড়ের মানুষ, তাই পাহাড়ের কথা বলতে ইচ্ছে হয় বেশি।

পাহাড়ের কথা চিন্তা করতে করতে হঠা‍‍‍‍ত পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমূল ইসলামের কথা মনে পড়ে গেল। দৈনিক প্রথম আলোতে গতপরশু দেখলাম, তিনি বান্দরবান গিয়েছিলেন মতবিনিময় সভা করতে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সন্তু লারমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, "আসুন, নিষ্পত্তি কমিশনের কোনো বিষয়ে ভিন্নমত থাকলে একসঙ্গে বসে তা সমাধানের পথ খুঁজি। '' তার এই কথা শুনে আমার মনে প্রশ্ন জাগলো:‍‍ এই আহাম্মক বলে কী? ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে একটু্ও পড়াশুনা করেছেন কী? ভূমি কমিশনের সমস্যা সম্পর্কে সন্তু লারমা অনেক আগেই সরকারকে বলেছিলেন, লিখিতভাবে্ও জানিয়েছিলেন। কমিশনের আইনের মধ্যেই ১৯টি অসামঞ্জস্য চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেসব অসামঞ্জস্য দূর করার জন্যে বিগত আ্ওয়ামী সরকার, তারপর জোট সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল। দুই সরকার কথা দিয়েছিল তারা পার্বত্য চুক্তি অনুসারে সেসব অসামঞ্জস্য দূর করবে। কিন্তু কেউই করে নি। এবার আওয়ামী সরকার আবার ক্ষমতায় এসে ভূমি কমিশন গঠন করলেও সেসব সমস্যা সংশোধন করেনি। যেখানে ভূমি কমিশনের আইনই ঠিক নেই, সেই বেঠিক আইন দিয়ে কিভাবে ভূমি সমস্যার সমাধান করবেন আহাম্মক খাদেমূল ইসলাম? এটাও বলা রাখা দরকার, বর্তমান আইনের অন্যতম একটি সমস্যা হলো ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যানকে এক নায়কের ক্ষমতা দেওয়া আছে।

তিনি যা বলবেন, সেটার বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যাবে না, আবেদন করা যাবে না। সেই একনায়কী ক্ষমতা ব্যবহারের জন্যে কী আহাম্মক খাদেমূল উদগ্র বাসনা নিয়ে বসে আছেন? এদিকে একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের কথা বলছেন। এখানেও তিনি চালবাজি করছেন। আধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিচ্ছেন এককভাবে কাজ করে। আইন অনুসারে ভূমি কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার/প্রতিনিধি ও তিন সার্কের চীফ।

বিচারপতি খাদেমূল গতবছর ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ পাওয়ার পর পরই ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। হাজার হোক বিচারক ছিলেন! তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কমিশনের অন্য সব সদস্যে সাথে বসে সিদ্ধান্ত না নিয়ে তিন পার্বত্য জেলা ঘুরে ঘুরে এককভাবে ঘোষণা দিলেন, তিন মাসের মধ্যে পার্বত্য এলাকায় ভূমি জরিপ করা হবে। ভূমি জরিপের কথাটা আপাতত মধুর হলেও এর মধ্যে ভূমি কমিশন চেয়ারম্যানের কুমতলব রয়েছে বলে মনে হয়। অন্যান্য কথা বাদ না হয় বাদ দিলাম, সময়ের কথাই যদি চিন্তা করি "তিন মাসে কিভাবে তিনি ভূমি জরিপ করবেন!" একটা জরিপ করতে বছরকে বছর সময় লাগে সে জায়গায় তিনি কীভাবে তিন মাসের কথা বলেন? মাথায় কুমতলবের ঘিলু আছে নাকি? দ্বিতীয়ত: ভূমি জরিপের কাজ পার্বত্য ভূমি কমিশনের নয়, এটা ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের কাজ। তিনি ভূমি জরিপের কথা বলে ভূমি মন্ত্রণালয়, ভূমি জরিপ অধিদপ্তর ও ভূমি কমিশনের মধ্যে কী রশি টানাটানির খেলা লাগাই দিতে চান? সর্বশেষ কাউকে কিছু না বলে, গণবিজ্ঞপ্তি জারি করালেন কমিশনের সচিবকে দিয়ে।

এখন এ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি কী করেন দেখা যাক। তবে আগাম বলে দিচ্ছি, এই আহাম্মক বিচারক খাদেমুলকে দিয়ে পার্বত্য ভূমি কমিশনের কাজ আর বেশিদূর এগুবে না। সরকার বেতন ভাতা দিবে, আর তিনি বসে বসে চিবিয়ে খাবেন। পকেটে টাকার অভাব পড়লে তিন পার্বত্য জেলায় মাঝে মাঝে সফরে যাবেন, কিছু কিছু নরম-গরম কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন। তবে তার পকেটে কিছু টাকা পড়লেও পড়তে পারে।

কেননা, ভূমি সমস্যাটাকে সবাই বসে সমাধান নয়, আটকিয়ে রেখে দিতে পারলে অন্যদের লাভ, অন্তত: ব্যস্টার্ড সেনা কর্তাবাবুদের লাভ। ওরা চাইবে খাদেমূল খাদের মূলে নিপতিত হয়ে বিদায় নিক। আর খাদেমূলও সেই খাদে ঝাঁপ মারা জন্যে যাত্রা শুরু করেছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।