তারা বলে সম্ভব না, আমি বলি সম্ভাবনা
(শিবিরমুক্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমনা শিক্ষার্থীদের সব সময়ের জন্যই আরাধ্য একটি বিষয়। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখাপড়া করেছেন বা করছেন। অতীতে নানা সময়ে দেখা গেছে এই রগকাটা বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত হলে ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক বন্ধ্যাত্ব কেটে যায়। মুক্তবুদ্ধি চর্চার দ্বার উন্মুক্ত হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, এমন কি দৈনিক কালের কন্ঠের এই প্রতিবেদনের মত সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবাসিক কক্ষ দখল করে দরবার শরীফ খুলে বসা, বাংলো অথবা ক্যাসিনো বানানো সুস্থ চিন্তার কারো কাম্য হতে পারেনা।
বিপথগামী কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি এমনটি করে থাকে, তাহলে সুস্থচিন্তার মানুষদের অবশ্যই তার প্রতিবাদ করা উচিত।
এবার পড়ে দেখুন সেই প্রতিবেদনটি >>>>>>>>
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২২৬ নম্বর কক্ষ সারা দিন তালাবদ্ধ থাকে। খোলা হয় রাত ১০টার পর। জ্বালানো হয় না আলো। ফ্যান থাকলেও তা চালানো হয় না।
সকাল হওয়ার আগেই আবার তালা।
সবাই এ কক্ষকে বলেন, 'দরবার শরিফ'। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ। শুধু দরবার শরিফ নয়, আছে ক্যাসিনো রয়্যাল। আছে বাংলোও।
এসব কক্ষে বসে চলে জুয়া, আড্ডা, উচ্চশব্দে গান শোনা ও চিৎকার-চেঁচামেচি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'দরবার শরিফে' সাধারণত মাদক সেবন করা হয়। এর সঙ্গে চলে উচ্চশব্দে গান, হল্লা ইত্যাদি। ছাত্রলীগ কর্মীরা কখনো কখনো এখানে ধ্যানে বসেন। তবে কিসের ধ্যান, তাঁরা তা জানেন না।
বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীরা আরো জানান, 'দরবার শরিফের' ভেতরে চারটি চৌকি দিয়ে একটি মঞ্চ বানানো হয়েছে। আছে মাটির তৈরি নানা ধরনের হাঁড়িপাতিল। সেলো সিঁকায় ঝুলানো। মাঝে মাঝে রাজনৈতিক বক্তৃতা বা ধর্মীয় ওয়াজ শোনা যায় ওউ কক্ষ থেকে। আবার কখনো ছাত্রলীগ কর্মীরা কক্ষে প্রবেশের এক-দুই ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনো শব্দ পাওয়া যায় না।
'দরবার শরিফ' এর চাবি থাকে ছাত্রলীগ কর্মী ওয়েসকুরনী ওরফে ওকে ভাইয়ের কাছে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ওই কক্ষে আমরা সাংগঠনিক কাজ করি না। কোনো অনৈতিক কাজও হয় না। মাঝে মধ্যে পোলা-পাইনদের নিয়ে একটু বসি আর কী। '
বঙ্গবন্ধু হলেরই ৩১৭ নম্বর কক্ষটি ক্যাসিনো রয়্যাল নামে পরিচিত।
ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাসিনোর সঙ্গে মিল রয়েছে বলে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরাই এ নাম দিয়েছেন। রাত হলেই এখানে বসে জুয়ার আসর। চলে গভীর রাত-অবধি। সঙ্গে চলে উচ্চশব্দে গান। গানের শব্দে পাশের কক্ষগুলোয় শিক্ষার্থীরা বিরক্ত হলেও ভয়ে কিছু বলতে পারেন না বলে জানান।
এ কক্ষের কর্তৃত্ব ছাত্রলীগের আরিফের কাছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র। তিনি জুয়ার আসর বসানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, 'আগে মাঝে মধ্যে বন্ধুরা আসত। আড্ডা দিতাম। এখন তা-ও করি না।
'
মাদার বখশ হলের ছাত্রলীগ কর্মী আসাদ। তাঁর বরাদ্দকৃত কক্ষ ৪১৩। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাতে ওই কক্ষে ঘুমালেও সারা দিন আড্ডা দেন ২৩৮ কক্ষে। এ কক্ষের তাই নাম দেওয়া হয়েছে 'বাংলো'। এ কক্ষে সারা দিন চলে আড্ডা, গান আর তাস খেলা।
তবে আসাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা কেউই এসব কক্ষে কোনো সংগঠনবিরোধী কাজ করি না। এখানে কখনোই মাদক সেবন বা জুয়া খেলা হয়নি। '
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন সময় বেশ কিছু কক্ষ সিলগালা করে দেয়। ছাত্রলীগ কর্মীরা সেগুলো ভেঙে নিজেদের আস্তানা গড়েছেন।
কক্ষগুলোকে তাঁরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছেন। গত শুক্রবার শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১১৯, ১৬৩ ও ১৭২ নম্বর কক্ষ সিলগালা করা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ কর্মীরা তালা ভেঙে ওই কক্ষগুলোয় প্রবেশ করেন। হলের প্রাধ্যক্ষ এসে বাধা দিলেও কাজ হয়নি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ওই হলের আবাসিক শিক্ষকরা এসে কক্ষগুলো আবার সিলগালা করে দেন।
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আওয়াল কবির জয় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ওই কক্ষগুলোতে কোনো অনৈতিক কার্যকলাপ চলে না। তার পরও যদি এর সত্যতা পাওয়া যায়, তবে এ ব্যাপারে আমি সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নিব। '
বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, 'বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
'
>>> শিবিরের ভাইজানরা, খুশী হইয়া আপনারা আবার এই পোষ্টে প্লাস দিতে আইয়েন না।
সূত্র: Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।