আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেম-২৮

কৃষক blogsaudi@gmail.com

কিষাণীর স্মৃতি থেকে- ১৩ কে প্রথম কাছে এসেছি কে প্রথম চেয়ে দেখেছি কিছুতেই পাইনা ভেবে কে প্রথম ভালোবেসেছি........ তুমি...না ...আমি। । আজ লিখতে বসে এ গানটা কেবল মাথায় ঘুরছিল। আমাদের অনেকটা এমনই অবস্থা ছিল, যদিও প্রকাশ কৃষক আগে করেছিল, আর আমি পরে অনেক ঘুর পথে এ পথে এসছিলাম। এটা আগেই বলেছি।

আমি ছোটবেলা থেকেই ভীষণ ক্যারিয়ার পাগল মেয়ে। সেটা অর্জন করার জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল। আমি হয়তো কিছুটা নারীবাদীও, ......কিছুটা নয় হয়তো অনেকটাই। এই ক্যারিয়ার নিয়ে যে আসক্তি সেটা আমার জীবনের মোড় কে বারবার পরিবর্তন করে দিয়েছে। কৃষক এর বাবা মা দুজনই চাকরীজীবী ছিলেন, এ ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগতো।

একদিন ওকে বললাম, মেয়েরা চাকরী করে এটা আমার খুব ভালো লাগে, তোমার মা চাকরী করেন এটা আমার ভালো লাগে। পড়াশোনা শেষ করে আমিও চাকরী করবো। দেখলাম সে এটা তে খুশি হল না। বুঝলাম মা চাকরী করাতে তার একটা চাপা ক্ষোভ আছে। অথচ তার মা তাকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন, কখনো কোন ট্রেনিংএ গেলে ওর আবদারটা সবার আগে পূরণ করতেন; মায়ের এবং বাবার কাছে তার আবদারও ছিল সীমাহীন।

বেশী চঞ্চল বাচ্চাদের প্রতি সব বাবা মায়েদের একটা আলাদা কেয়ার থাকে। সেটা কৃষকের ক্ষেত্রেও দেখেছি। বাবা মা দু'জনই তাকে অনেক ভালোবাসতেন, তবে ও সেটা স্বীকার করেনি কখনো, এখনো করে না। কৃষক আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করলো যে চাকরী করলে বাচ্চাদের কষ্ট হয়। অথচ আমার একটা আফসোস ছিল আমার মা গৃহিণী, আমার যে সব বন্ধুদের মায়েরা কর্মজীবী তাদের দেখে ঈর্ষা করতাম।

ভাবতাম ইস আমার যদি এমন হোত! আমার পছন্দের মানুষটির সাথে আমার এমন মতের অমিল দেখে আমি তো ঘাবড়ে গেলাম। আমার মুখে একেবারে আষাঢ়ের মেঘ। আমি মনে হয় ওকে বলেছিলাম "আমাদের কিছু ব্যাপার এখনই পরিস্কার করে নেয়া দরকার, আমি ক্যারিয়ার পাগল মেয়ে। শুধুমাত্র গৃহিণী হয়ে থাকা আমার দ্বারা হবে না। তুমি যদি অন্য কিছু চাও তাহলে এখনই ভেবে দেখ".....এ জাতীয় কিছু সিরিয়াস কথা অনেক বেশী সিরিয়াস হয়ে বলছিলাম।

বেচারা আসন্ন বিপদের ভয়ে তড়িঘড়ি ঐ প্রসঙ্গ শেষ করেছিল.....কেমন করে যেন প্রসঙ্গ পাল্টেছিল মনে নেই। আমি সারান কৃষকের সাথে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও একসাথে পড়তাম, রুমে এসে আবার পড়াশোনা করতাম, যেটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যপার। কিন্তু কৃষক রুমে যেয়ে সে রকম পড়তো না। আবার বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠতো। একথা আগেও বলেছি, আবারও বলছি কারণ এই বন্ধুদের জন্য তাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছিল, হয়তো আমাকেও।

..... সেটা অন্য একদিন বলবো। আগে একটা পর্বে বলেছিলামআমাদের রোল নাম্বার পাশাপাশি থাকেনি সেকেন্ড ইয়ারে। ফলে ফাইনাল পরীক্ষার সময় পাশাপাশি বসা যাবে না। এখন কি উপায়? আমি বলি তাতে কি, পাশাপাশি বসার দরকার কি? কিন্তু না, তা হবে না। ফাইনাল পরীক্ষার সময় ফরম ফিল আপ করতে হোত, দুজনেরই টাকা জমা দেয়া হয়ে গেছে।

ও বলল এখন ফরম জমা দিবা না। সবাই জমা দিয়ে নিক তারপর দিবা। কারন সবাই জমা দিয়ে ফেললে এডমিন থেকে রোল নম্বরের একটা সিরিয়াল দিবে। সবার রোল সেট হবার পর আমরা দুজন জমা দিব। তাহলে আমাদের একসাথে রোল পড়বে।

মাথায় সারাক্ষন এইসব দুষ্ট বুদ্ধি, যদি এগুলা ভালো কোন কাজে লাগতো তাহলে কথা ছিল। আমরা ফরম ফিলআপ করছি না। অন্য বন্ধুরা বলে কি ব্যাপার, পরীক্ষা দিবা না নাকি? আমি বলি টাকা জমা দেয়ার রশিদ টা হারিয়ে ফেলেছি, ওটা পেলেই দিব । গোপন পরামর্শের কথা কাউকে বলাও যাবে না। এটা ছিল নির্দেশ।

আমাকে এমন জ্বালাতন করতো, তার কথা না শুনলেই তো আবার গাল ফুলাবে! তারপর যথারীতি সবার শেষে ফরম জমা দিলাম এবং দুজনের রোল হল পাশাপাশি। এতে যে মজাটা হল আগের বছরের ফেল্টু ভাইদের সাথে আমাদের সীট পড়লো, তাদের পরীক্ষা দেয়ার ষ্টাইলটা দেখলাম, সব ধুমসে নকল করতো। আর দেখে আমার ভয়ে হাত পা কাপাকাপি অবস্থা। আর সেশনাল ভাইভার সময় ওনারা কিছু পারে না, সব উত্তর আমরাই দিতাম, বিরাট মজা! চলবে......


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.