আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়িওয়ালাদের খোঁজে রাজস্ব বোর্ড

বাড়িওয়ালারা এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নজরদারিতে আসছেন। যাঁরা বাড়িভাড়া দিয়ে আয় করেন, তাঁরা সঠিকভাবে আয়কর দিচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনবিআর কর্মকর্তা, পরিদর্শকেরা খোঁজখবর নিচ্ছেন।
মূলত কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) রয়েছে কি না, সেই খোঁজখবর করা হচ্ছে। টিআইএন না থাকলে তা গ্রহণের জন্য নোটিশও দেওয়া হচ্ছে।


রাজধানীসহ দেশের সব সিটি করপোরেশ এলাকায় এনবিআরের এই কার্যক্রম চলছে।
বাড়িওয়ালাদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিপণিবিতান মালিকদেরও একই কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত বড় দোকানদের ব্যবসায়িক কারণে টিআইএন নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় টিআইএনহীন দোকানদার খুব একটা নেই।
জানা গেছে, বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত নভেম্বর মাসে বাড়িওয়ালারা ঠিকমতো আয়কর দিচ্ছেন কি না, সেই খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর এনবিআরের সব কর অঞ্চলভুক্ত এলাকায় বাড়িওয়ালাদের করজালে আনার মাঠপর্যায়ের কাজ শুরু করা হয়।


মূলত দুভাবে বাড়িওয়ালাদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এনবিআর কর্মকর্তা বা পরিদর্শকেরা স্বশরীরে বিভিন্ন এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন। আবার সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, ডেসা, ডেসকো, তিতাস গ্যাস কোম্পানিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলগুলো। সেখান থেকে সেবার পরিসরের তথ্য জেনে বাড়িওয়ালা চিহ্নিত করা হচ্ছে।
তবে আবার ডেসা বা ডেসকোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা দিয়ে বাড়িওয়ালার প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব নয়।

কেননা বিদ্যুৎ গ্রাহক হিসাব করা হয় সংযোগের মাধ্যমে। সংযোগ সংখ্যা দিয়ে বাড়িওয়ালা ও ফ্ল্যাট মালিকদের আলাদা করে চিহ্নিত করার সুযোগ কম। কেননা, একজন বাড়িওয়ালা একটি সংযোগ দিয়ে একাধিক ফ্ল্যাটে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। ওয়াসা বা তিতাসের ক্ষেত্রে একই অবস্থা।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাস পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে টিআইএন নেই এমন ৬৩ হাজার বাড়িওয়ালা ও দোকানদার পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি বাড়িওয়ালা রয়েছেন। তাঁদের সবাইকে এনবিআরের পক্ষ থেকে নতুন টিআইএন নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের পর ১৯ হাজার নতুন করে টিআইএন নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের মধ্যে টিআইএনধারীর সংখ্যা ৫৫ লাখে উন্নীত করতে চায় এনবিআরের আয়কর বিভাগ। কিছুদিন আগেও ৩৪ লাখ টিআইএনধারী ছিল।

কিন্তু সম্প্রতি অকার্যকর টিআইএন বাদ দিয়ে ১৭ লাখ সক্রিয় টিআইএন সচল রেখেছে এনবিআর। নতুন টিআইএনধারীর সংখ্যা বাড়াতে বাড়িওয়ালাদের করজালে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের সদস্য মোহাম্মদ আলাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এখন বাড়িওয়ালাদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। তবে হয়রানির বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি বলে তিনি জানান।

কোনো কর কর্মকর্তা বা পরিদর্শকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে কর দেন না এমন বাড়িওয়ালার খোঁজে গিয়ে কর পরিদর্শকদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছেন অনেকে। শুধু টিআইএন আছে কি না, সেই তথ্য নেওয়ার কথা থাকলেও অনেক পরিদর্শক তা করছেন না। এত দিন ধরে কেন টিআইএন নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্ন করছেন পরিদর্শকেরা। এত দিন টিআইএন না নেওয়ায় মামলা করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।


জানা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়িওয়ালারা ভাড়ার টাকা নেওয়ার সময় ভাড়াটিয়াকে রসিদ দেন না। এতে অর্থ লেনদেনের কোনো দালিলিক প্রমাণ থাকে না। বছর শেষে বহু বাড়িওয়ালা তাঁর বার্ষিক আয়কর বিবরণী দাখিলের সময় বাড়িভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয় গোপন করে থাকেন। যাঁরা এই আয় প্রদর্শন করেন, তাঁরা ভাড়া বাবদ কম আয় দেখান। ফলে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।