সাংবাদিক
এখানে কে জি বি আছে !
শান্তনু দে
এখানে এসেই হেরেছেন বুশ।
যদিও চেষ্টার কসুর করেননি। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে পর্যন্ত স্বীকার করতে হয়েছে, বেলারুশের নেতাকে হটাতে ২০০৬এ বুশ প্রশাসন খরচ করেছিল ১কোটি ২০লক্ষ ডলার। আর ন্যাশনাল এনডাওমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এন ই ডি), যারা সরাসরি সাহায্য পায় মার্কিন কংগ্রেস থেকে, তাদের মাধ্যমে আরও ২২লক্ষ ডলার। এপ্রিল ২০০৫, ‘পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণ চাপ’ তৈরির জন্য মার্কিন বিদেশ সচিব কন্ডোলিজা রাইস বেলারুশের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন লিথুয়ানিয়ায়।
ওই বৈঠকে কন্ডি বলেন, সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আপনাদের সামনে ‘আজ এক অভাবনীয় সুযোগ। ’ ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি জার্মান কোম্পানিকে দেয় ২৪লক্ষ ডলার। বেলারুশের ভিতরে রেডিও ও টেলিভিশনে চব্বিশ ঘন্টা একতরফা, একপেশে প্রচারের জন্য। একই লক্ষ্যে পোলিশ প্রশাসন চালু করে রেডিও রাকজা। যদিও, বেলারুশে তিনি নিতান্তই একজন বিরোধী নেতা, তবু সেই আলেকজান্দার মিলিনকেভিচকে আমন্ত্রণ জানানো হয় পোলিশ সংসদে ভাষণ দেওয়ার জন্য।
তবু এখানে এসে হেরেছেন বুশ।
৮২.৬শতাংশের সমর্থন পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হন রাষ্ট্রপতি আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো। ১৯৯৪থেকে পরপর তিনবার। নিউ ইয়র্ক, ব্রাসেলসের কাছে যিনি ‘ইউরোপের শেষ ডিক্টেটর। ’
প্রতিদ্বন্দ্বী বুশের প্রার্থী, আলেকজান্দার মিলিনকেভিচ পান টেনেটুনে ৬শতাংশ ভোট।
২০০৪এ বুশের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের রাজনৈতিক অধিকর্তা টেরি নেলসন ছিলেন মিলিনকেভিচের শীর্ষ উপদেষ্টা। তবুও গোহারান হার।
যথারীতি নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতে না হতেই তুরন্ত তা খারিজ করে দেয় ওয়াশিংটন। নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানায়। যেখানে বুশ ২০০০এ বিতর্কিত নির্বাচনে ফ্লোরিডায় পুনর্গণনা পর্যন্ত করতে দেননি।
অর্ধেক মানুষও ভোট দেয়নি মার্কিন মুলুকে, যেখানে বেলারুশে ভোট পড়ে ৯৩.৩শতাংশ।
এতেও লাভ না হওয়াতে শেষে জর্জিয়াতে গোলাপ বিপ্লব, ইউক্রেনে কমলা বিপ্লব, কিরগিজিস্তানে টিউলিপ বিপ্লবের ধাঁচে এখানেও গণসমাবেশ ঘটিয়ে সরকার দখলের ষড়যন্ত্র হয়। নির্বাচনের পরেই মিলিনকেভিচ রাজধানী মিনস্কের মেইন স্কোয়ারে সবাইকে জড়ো হতে বলেন। টেনেটুনে লোক হয় পাঁচ হাজার, তাও ওয়াশিংটন পোস্টের হিসেবে। জেতার আশা করেননি মিলিনকেভিচ নিজেও।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনেই ছিল তার অকপট ভাষ্য, ‘রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য মিলিনকেভিচ লড়ছেন না, লড়ছেন একটি গণউত্থান তৈরির জন্য’, যাতে অনায়াসে জমানা বদল সম্ভব।
মুখ থুবড়ে পড়ে ভেলভেট বিপ্লব (শোভনসুন্দর মার্জিত ভদ্র বিপ্লব, কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে বিপ্লবের পালটা ‘জনগনের শান্তিপূর্ণ বিপ্লব’)।
কিউবা, গণতান্ত্রিক কোরিয়ার সঙ্গে এক বন্ধনীতে এনে বুশের বিদেশ সচিব বলেছিলেন, বেলারুশ ‘স্বৈরশাসকের ঘাঁটি’, মিনস্ক দেখিয়ে দেয় বেলারুশ ‘প্রতিরোধের ঘাঁটি’।
একসময়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য। এখন সরকারীভাবে বেলারুশ সাধারণতন্ত্র।
উত্তরপূর্বে রাশিয়া। দক্ষিণে ইউক্রেন। পশ্চিমে পোল্যান্ড। আর উত্তর-পশ্চিমে বাল্টিক সাধারণতন্ত্র লিথুয়ানিয়া ও লাতভিয়া। দেশের তিনভাগের একভাগই বনভূমি।
জনসংখ্যা এক কোটিরও কম, ৯৯লক্ষ। ৮০শতাংশই জাতিগতভাবে বেলারুশিয়। অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন পোলিশ, রুশ ও ইউক্রেনিয়রা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজি আগ্রাসনে একরত্তি এই বেলারুশ দিয়েছে ৩০লক্ষ জীবন। প্রতি ৪জনে একজন।
হারায় অর্ধেকের ওপর অর্থনৈতিক সম্পদ। পরে লড়াইয়ে ফিরে এই সোভিয়েত বেলারুশই হত্যা করে ৫লক্ষ ফ্যাসিস্ত সেনাকে। ১৯৯৫এ একটি গণভোটের মাধ্যমে বেলারুশ ও রুশ সরকারী ভাষা।
নয়া উদার অর্থনীতির বিশুদ্ধ বিকল্প হিসেবে অল্প যে ক’টি দেশ রয়ে গিয়েছে, তার অন্যতম বেলারুশ। এবং যথারীতি এই বিকল্পকে গুড়িয়ে দিতে প্রতি মুহূর্তে তৎপর ওয়াশিংটনের পঞ্চম বাহিনী।
খোদ মার্কিন বিদেশ দপ্তরের প্রতিবেদনেই রয়েছে এর অকপট স্বীকারোক্তি। গত বছর তারা অর্থ সাহায্য করেছে বেলারুশের বিরোধী পাঁচটি রাজনৈতিক দল, ৫৬৬জন ডাকসাইটে বিরোধী সংগঠককে। সেইসঙ্গেই সাহায্য করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে ৭০টি নাগরিক সংগঠন (সুশীলদের ধাঁচে), ৭১জন সরকার-বিরোধী সাংবাদিক এবং ২১টি বিরোধী-মিডিয়াকে। শুধু তাই নয়, মার্কিন সরকারের খরচে সম্পূর্ণ বিনে খরচে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে বেলারুশের ৯০০তরুণ।
বস্তুত, বেলারুশে লুকাশেঙ্কো-বিরোধী জোটকে ওয়াশিংটন লালন করার কাজ শুরু করেছে সেদিন থেকে, ২০০৪এর অক্টোবরে যেদিন বুশ সই করেন ‘বেলারুশ গণতন্ত্র আইনে’।
বেলারুশের সরকার-বিরোধী মিডিয়া তৈরি থেকে সেদেশের নির্বাচনকে হেয় করতে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ এন জি ও-দের দেদার অর্থ ঢালারা জন্য এই আইনে রয়েছে একতরফা এক্তিয়ার। ব্যর্থ ভেলভেট বিপ্লবের সময় তো বটেই, এখনও সমানে চলেছে সেই অর্থ সাহায্য। যেমন, ২০০৭ এবং ২০০৮এ, প্রতি বছর লুকাশেঙ্কো সরকার-বিরোধীদের জন্য ওয়াশিংটন ঢেলেছে ২কোটি ৭০লক্ষ ডলার।
কেন? বেলারুশের ভুল কোথায়?
সি আই এ’র জবানিতে, এখানে হয়নি যথেষ্ট পরিমাণে কাঠামোগত সংস্কার। চলছে বাজার সমাজতন্ত্র।
বেসরকারী সংস্থাগুলিকে করা হয়েছে ফের জাতীয়করণ (১৯৯১-’৯৪, সদ্যোজাত রাষ্ট্রে পুঁজিবাদী সংস্কারের সময় ব্যাঙ্কসহ যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারীকরণ করা হয়েছিল, লুকাশেঙ্কোর সময়ে তাদের করা হয়েছে ফের জাতীয়করণ)। ব্যাপক মাত্রায় আয়ের পুনর্বন্টন নীতি এখানে এনেছে আয়ের সমতা, যা এই বিশ্বের সঙ্গে একেবারেই বেমানান, কিন্তু এই নীতিগুলি মার্কিন বিনিয়োগের গন্তব্যের জন্য আদৌ আকর্ষণীয় নয়।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, ওয়াল স্ট্রিটের দৃষ্টিভঙ্গী কী? বিদেশী ব্যাঙ্কগুলির ঝাঁপ আক্ষরিক অর্থেই গুটিয়ে দেওয়া হয়েছে। জমি কেনার প্রশ্নে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে রয়েছে গুরুতর প্রতিবন্ধকতা। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবায় রয়েছে সরকারের ভরতুকি।
খুচরো মূল্য ভীষণভাবেই নিয়ন্ত্রিত। সরকার এখনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির নির্ভরশীল। রয়েছে কর ও শুল্কের প্রাচীর, ভরতুকির জেরে এঁটে উঠতে পারছে না মার্কিন সংস্থাগুলি।
ওয়াশিংটন পোস্টের ভাষায়, ‘বেলারুশের অর্থনীতি এখনও রাষ্ট্র–নিয়ন্ত্রিত এবং দেশের খাদ্যশস্য এখনও তৈরি হয় যৌথ খামারে। ’ নিউ ইয়র্ক টাইমসের অসহায় আর্তনাদ, ‘রাষ্ট্র–চালিত অর্থনীতির মধ্যে দিয়ে মিস্টার লুকাশেঙ্কো যথেষ্ট প্রত্যয় ও দৃঢ়তার সঙ্গে বেলারুশকে পরিণত করছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষুদ্র প্রতিরূপে।
’
বেলারুশ এখনও অব্যাহত রেখেছে সাবেক সোভিয়েতের প্রতীক ও সামাজিক সহায়তাকে।
একমাত্র বেলারুশই, তার গোয়েন্দা সংস্থার নাম রেখে দিয়েছে কে জি বি। যা ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার রুশ নাম। এখন এর প্রধান মেজর জেনারেল ভাদিম জেইতসেভ, যিনি রয়েছেন লুকাশেঙ্কোর নিরাপত্তার দায়িত্বে। ২০০৮এর জুলাইয়ের আগে এর দায়িত্বে ছিলেন লুকাশেঙ্কো নিজে।
লুকাশেঙ্কোর লক্ষ্য ‘সমাজ-মুখী বাজার অর্থনীতি’। যে অর্থনীতিতে ৮০শতাংশ সংস্থাই রাষ্ট্রের মালিকানাধীন। এখনও দেশের খাবারের জোগান দেয় যৌথ খামার। অর্থনৈতিক সঙ্কটে দুনিয়া যখন টালমাটাল, তখন বেলারুশের অর্থনীতি যথেষ্ট স্থিতিশীল। ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম বিকাশের হার।
এবং তা বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়, ‘২০১০, বেলারুশের অর্থনীতির জন্য হবে আরও অনুকূল’, জানিয়েছে আই এম এফের বেলারুশ দপ্তরের প্রধান ক্রিস জার্ভিস। ধারাবহিকভাবে বেড়ে চলেছে প্রকৃত মজুরি। বাড়ছে পেনশন। বেকারির হার এক শতাংশও নয়।
০.৯শতাংশ। ২০০৮এ খানিকটা বেড়েছিল। হয়েছিল ১.১শতাংশ। জানিয়েছে শ্রম ও সামাজিক সুরক্ষা মন্ত্রকের অধীন চিফ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড পপুলেশন অফিস।
আজকের রাষ্ট্রপতি এই লুকাশেঙ্কোই ছিলেন একমাত্র সাংসদ, যিনি ১৯৯১তে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ভেঙে বেরিয়ে এসে বেলারুশিয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র হিসেবে নতুন রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছিলেন।
বেআব্রু করে দিয়েছিলেন দুর্নীতিবাজ কর্তাদের মুখোশ। এখনও অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে তিনি বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন — ‘আমার দেশ’। এমনকি, ২০০৫এ রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারন পরিষদের ভাষণেও। তিনি কোনওদিন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন না। ছিলেন না প্রশাসনের পদস্থ কোনও আমলা।
ছিলেন সোভিয়েত আর্মিতে। তবে কাজ করেছেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে।
এই বেলারুশের সর্বত্র লেনিন, স্তালিন। এখনও। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি নতুন করে তৈরি।
মিনস্কে সরকারের সদর দপ্তরের ঢোকার মুখে এখনও ভ্লাদিমির লেনিনের স্মৃতিসৌধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ এখনও অবৈতনিক। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পায় ভাতা, যেমন পেত সোভিয়েতের সময়।
লুকাশেঙ্কোর জোট সরকারে রয়েছে বেলারুশের কমিউনিস্ট পার্টি। কমিউনিস্ট পার্টির ফার্স্ট সেকেটারি তাতিয়ানা গোলুবেভা বলেছেন, ‘বেলারুশ এখনও সমাজতান্ত্রিক উন্নয়নের পথেই রয়েছে।
অল্প কিছুর মধ্যে আমরাও রয়েছি, যারা সবকিছু পরিত্যাগ করিনি। ’
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি উগো সাভেজ বলেছেন, ‘বেলারুশ, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি মডেল। ’ রাষ্ট্রপতি লুকাশেঙ্কোকে ‘সহযোদ্ধা’ হিসেবে বর্ণনা করে সাভেজ তাঁকে সম্মানিত করেছেন বিদেশীদের জন্য ভেনেজুয়েলার সর্বোচ্চ সম্মান, ‘দ্য অর্ডার অব লিবারেটর’ দিয়ে। শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, লুকাশেঙ্কোকে সর্বোচ্চ সম্মান ‘দ্য অর্ডার অব জোশে মার্তি’ দিয়ে সম্মানিত করেছে কিউবাও।
ওয়াশিংটনের ভাষায়, ‘ইউরোপের শেষ একনায়কতন্ত্র’।
অথচ, এই বেলারুশে দস্তুরমতো রয়েছে বহুদলীয় গণতন্ত্র। দশটি রাজনৈতিক দল এবং ২০০টির বেশি এন জি ও-কে নিয়ে বিরোধীদের জোট ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। ২০০৫এ এই ফ্রন্টই তাদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় মিলিনকেভিচকে।
২০০৬এ ফের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে বেলারুশ বহুমুখী ও শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে যাবে। সভ্য পথে জাতীয় স্বাধীনতা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
সেইসঙ্গেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমতাপূর্ণ রাজনৈতিক আলোচনা চালাতে বেলারুশ আগ্রহী। ’
আর বিদেশ নীতির এই অগ্রাধিকারগুলি থেকে এতটুকু সরে আসেনি বেলারুশ। জানিয়েছেন লুকাশেঙ্কো। গত নভেম্বরে। তিনি ‘পশ্চিমের দিকে ঝুঁকছেন’ বলে মিডিয়ার দাবি সটান খারিজ করে দিয়ে লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ‘এই ধারনা একেবারেই নির্বোধের ধারনা, অযৌক্তিক।
’ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ক্ষমতায় আসার তিন দিনের মধ্যে তিনি জর্জ সোরসকে যাবতীয় অর্থ নিয়ে দেশ ছাড়তে বলেছিলেন। ‘এটি ছিল আমার প্রথম পদক্ষেপ’। জানিয়েছেন লুকাশেঙ্কো। ‘তখন অনেকে আমাকে বলেছিলেন, সোরস একজন মানবতাবাদী, একজন সহৃদয় মানুষ। আমি বলেছিলাম, আমাদের এরকম মানবতাবাদীর দরকার নেই।
’ এবং আমি সেদিন ঠিক ছিলাম। যেমন এখনও। ‘তখনও বলেছিলাম পশ্চিমের সঙ্গে আমরা সহযোগিতায় প্রস্তুত। তবে আমাদের জাতীয় স্বার্থ, আমাদের জনগণের কথা মনে রেখে। ’ না, সহযোগিতা করতে পশ্চিম এগিয়ে আসেনি।
‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিরোধী নই। কিন্তু, দয়া করে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন না। এমন কিছু দাবি করবেন না, যা আমরা করতে পারব না। ’ বলেছেন লুকাশেঙ্কো।
‘আমরা রাশিয়াসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে তৈরি অন্যান্য সাধারণতন্ত্রের সঙ্গে একীকরণ চেয়েছি।
বস্তুত, কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেট (সি আই এস)-এর সমস্ত বৈঠকে আমরা এই একীকরণের প্রস্তাব তুলে আসছি। ’ জানিয়েছেন লুকাশেঙ্কো।
বেলারুশ ও রাশিয়াকে একত্রিত করে একটি মাত্র রাষ্ট্র রুশ ও বেলারুশ ইউনিয়ন করার ব্যাপারে ১৯৯৬সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে আসছে মস্কো ও মিনস্ক। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়ে গণভোট করেন লুকাশেঙ্কো। মানুষ উজাড় করে তাতে সমর্থন দেন।
বহুমেরু বিশ্বের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন তিনি। চান সমতার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যা-সংঘাতের সমাধান। সেকারণেই তিনি ন্যাটোর সম্প্রসারণের ঘোর বিরোধী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনে ইরাক, আফগানিস্তানে আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।