Somaoy Nai, Kaj Chai
বর্তমান পেক্ষাপটে চাকরির আর এক নাম সোনার হরিণ। চাকরি নামক এই সোনার হরিণটিকে পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। কারও ভাগ্যে তা সহজেই ধরা দেয় আবার কারো কারো ভাগ্যে এই চাকরি পাওয়া অনেক কষ্ট সাধ্য। আবার অনেক সময় দেখা যায় চাকরি পাওয়া গেলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী পাওয়া যায় না। একটি ভাল চাকরি পেতে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস, কয়েক বছর লেগে যায়।
চাকরি খোঁজার এই মধ্যবর্তী সময়টা মানুষের জীবনের হতাশাজনক সময়। এই হতাশায় মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় গ্লানি। এই হতাশাই মানুষকে তার লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে দেয় অনেক দূরে। জীবনে দেখা দেয় নানা সমস্যা। তাই এই সময়টাতে হতাশা কাটিয়ে লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য যে কাজগুলো করা অত্যন্ত জরুরি তা জেনে নিন।
বৈচিত্র্যপূর্ণ সিভি ও কভার লেটার
চাকরি নামক সোনার হরিণটি পেতে যত দীর্ঘ সময় লাগবে। আপনাকে ততই বৈচিত্র্যপূর্ণ সিভি ও কভার লেটার তৈরি করতে হবে। আপনি যদি মনে করেন চাকরি পেতে যে কোন ধরনের সাদামাটা সিভি ও কাভার লেটার তৈরি করে জমা দিলেই আপনার সব কাজ শেষ তাহলে আপনি ভুল করবেন। সব ধরনের চাকরির জন্য একই সিভি ও কভার লেটার জমা দেওয়া যাবে না। সিভি ও কভার লেটারের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকতে হবে।
সবসময় চিন্তা করতে হবে যে কিভাবে আপনার সিভি ও কভার লেটারকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করা যায়। যে পদের জন্য আবেনদ করবেন সে পদে আপনার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার কথা সুন্দরভাবে উল্লেখ করতে হবে।
কর্তৃপক্ষকে উত্যক্ত করা যাবে না
আপনি যে প্রতিষ্ঠানেই আবেদন করবেন সেই সেই প্রতিষ্ঠানকেই যে আপনাকে ডাকতে হবে এমনটি ভাবলে ভুল করবেন। আপনি যে সকল প্রতিষ্ঠানে সিভি ও কভার লেটার জমা দেবেন। সব প্রতিষ্ঠানই যে আপনাকে ডাকবে তা নয়।
নিয়োগদাতারা আপনাকে পছন্দ করলে অবশ্যই ডাকবে। পছন্দ না করলে ডাকবে। তবে এতে ঘাবড়ে গিয়ে আপনি যদি বার বার নিয়োগদাতাদের ফোন করে বা সরাসরি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে উত্যক্ত করেন তাহলে ভুল করবেন। এতে নিয়োগদাতারা বিরক্ত হয়ে যাবে। আপনাকে ভাল চোখে দেখবে না।
কোন প্রতিষ্ঠান যদি না ডাকে, তাহলে এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। এক প্রতিষ্ঠান না ডাকলে আর এক প্রতিষ্ঠান ডাকবে। ধৈর্যহারা হয়ে অযথা তাদের বিরুক্তির কারণ হবেন না। ধৈর্য্য রাখুন। আপনাকে ভাল লাগলে নিয়োগদাতারাই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
ধৈর্য্যশীল হতে হবে
ধৈর্য্যশীল ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলাও পছন্দ করেন না। যে কোন কিছু পেতে ধৈর্য্য ধারণ করতে হয়। আর চাকরির ক্ষেত্রে তো অবশ্যই ধৈর্য্যশীল হতে হবে। দ্রুত ফল আশা করা যাবে না। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সাথে সাথেই যে নিয়োগ পেয়ে যাবেন এমন আশা করা যাবে না।
যেকোনো প্রতিষ্ঠানই নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের কাঙ্খিত লোক খুঁজে বের করবেন। আপনি যদি তাদের কাঙ্খিত লোক হয়ে থাকেন বা আপনাকে যদি তাদের ভাল লাগে তাহলে আপনি অবশ্যই নিয়োগ পাবেন। তবে এক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে
নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস না থাকলে কোন কিছুই করা সম্ভব নয়। নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে অবশ্যই চাকরি পাওয়া সম্ভব।
হয়তো সময় একটু বেশি লাগতে পারে। এক্ষেত্রে হতাশা হওয়া যাবে না। কারণ হতাশা মানুষের জীবনকে এলোমেলো করে দেয়। এবং পরবর্তী সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। হতাশা মানুষের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে।
সাধারণত দেখা যায় চাকরিপ্রার্থীরা একটি ইন্টারভিউ দেওয়ার পর চাকরি না হলে ঝিমিয়ে পড়ে। এটা ঠিক নয়। সময় চলে যাওয়ার আগে যুগপৎভাবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আবেনদ করতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি না হলে আর একটি প্রতিষ্ঠানে হবে। আজ না হলে কাল হবে।
এই বিশ্বাস রাখতে হবে। প্রতিদিন নতুন উদ্যমে কাজ করতে হবে হতাশ হওয়া যাবে না।
সম্ভাবনাকে গন্ডিবন্ধ করবেন না
চাকরির শুরুতেই আপনি যদি শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেতে চান তাহলে সেটা অবাস্তব ভাবনা হবে। মানুষ কখনও একবার বড় হয় না। ছোট থেকে বড় হওয়ার চিন্তা করুন অর্থাৎ ধাপে ধাপে এগুতে হবে।
তবে তার মানে এই না যে আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে যোগ দেবেন। অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের পদে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করবেন।
প্রত্যাখ্যান নিয়ে ভাববেন না
কোন কোম্পানিতে আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আপনি যদি ভাবেন আপনার যোগ্যতা নেই। তাহলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। বরং ভাবুন যে, ঐ কোম্পানিতে এ মুহূর্তে আপনার জন্য কাঙ্খিত চাকরি নেই বা আপনার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাকরি নেই।
কোন কোম্পানি থেকে প্রত্যাখ্যাত হলে সেখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনের চেষ্টা করুন। জানতে চেষ্টা করুন কেন প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তাহলে তা পরবর্তী ইন্টারভিউতে কাজে লাগবে। কোন ভুল থাকলে পরবর্তী ইন্টারভিউয়ের আগে তা ঠিক করার সুযোগ পাবেন।
অন্যের সফলতা দেখে নিজেকে ছোট ভাববেন না
একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে করতে অনেক সময় দেখা যাবে আপনার সহকর্মীরা এর চেয়ে ভাল কোন পদে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাবে।
তবে তা দেখে আপনি যদি নিজেকে ছোট মনে করেন, তাহলে শুধু শুধু কষ্ট পাবেন অযথা কষ্ট না পেয়ে ভাবতে সময় এখন তাদের ভাল। সকল মানুষে সব সময় একই রকম হয় না। নিজের দক্ষতার উপর আস্থা রেখে কাজ করে যান। সময় একদিন আপনারও আসবে।
চারিত্রিক দৃঢ়তা বজায় রাখবেন[/sb
অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার পরও যদি চাকরি পাওয়া না যায় তাহলে দেখা যায় অনেকে আতঙ্কিত হতে পারেন।
তবে এ সময় আতঙ্কিত হয়ে বায়োডাটায় মিথ্যা তথ্যের সমাবেশ ঘটানো যাবে না। মনে রাখবেন চাকরির ক্ষেত্রে চারিত্রিক দৃঢ়তা একটা বড় বিষয়।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে যে, কোন প্রতিষ্ঠানে সিভি জমা দেওয়ার সময় সিভির একটা ফটোকপি অবশ্যই রেখে দিতে হবে। এবং ভাইভা বোর্ডে যাওয়ার আগে সেটি দেখে নিতে ভুলবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।