বেশ কয়েকদিন আগে জেমস আটলারের লেখা একটি পোস্ট পড়েছিলাম। পোস্টের শিরোনাম ছিল এরকম যে “আপনি কেন আপনার চাকরি কোন কারণ ছাড়াই ছেড়ে দিবেন?”
যাই হোক তার লেখা পোস্টটি ছিল তথ্যবহুল। পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। সেখান থেকেই কিছু অংশ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
যখন কেউ তার চাকরিটা ছেড়ে দেয় তখন তাদের কাছে থেকে আপনি একটা প্রশ্নই বার বার শুনতে পাবেন।
আর তা হল “পরবর্তীতে কি হবে, এর পরে আমি কি করব?”
আমি অনেকের জীবনী পড়ে দেখেছি যারা মিলিওনিয়ার হয়েছেন। তারা মিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে কি করেছেন? আসলে তারা কি মিলিয়নিয়ার হওয়ার জন্যই চাকরি ছেড়েছিলেন? নাকি তারা চাকরি ছাড়ার পরে মিলিয়নিয়ার হওয়ার চিন্তা করেছিলেন? নাকি তারা উদ্দ্যেশ্যহীন ভাবে কাজ করে গিয়েছিলেন?
সব প্রশ্নের জবাব পাবেন আপনি, যদি কষ্ট করে এই পোস্টটা পড়েন।
প্রত্যেকেই মার্ক জাকারবার্গ বা বিল গেটস না। আবার প্রত্যেকেই ইউনিভার্সিটিতে পড়া বাদ দিয়ে আইফোন তৈরী করতে পারে না। যারা পারে তারা সাধারণের মধ্যে অসাধারণ।
আর অসাধারণ হওয়ার জন্য প্রতিভার দরকার নাই। দরকার পরিশ্রম।
কিছু কিছু মানুষ আছে যারা চাকরি ছেড়ে দেয় এবং সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করতে থাকে। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে যারা চাকরি ছেড়ে দেয় কিন্তু চাকরি ছেড়ে দেয়ার পরেও মিলিয়ন ডলার কামাই করে। এর কারণ কি আপনি জানেন? পড়তে থাকুন।
সম্পুর্ণ পোস্ট পড়া শেষ হলে অবশ্যই জানতে পারবেন।
সাধারণত আমরা মনে করি মিলিয়নিয়ার হওয়া খুবই কঠিন। আবার অনেকে জন্মগত ভাবে মিলিয়নিয়ার হয়ে পৃথিবীতে আসে। কারণ তারা পৈতৃক সম্পত্তি পায়। মিলিয়ন ডলার কামাই করা যেকোন মানুষের জন্যেই আনন্দের ব্যাপার।
এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নিজের উপর বিশ্বাস। নিজের বস নিজেকেই হতে হবে। সেই সাথে সাথে আপনার মুক্ত চিন্তাধারাকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে।
মিলিয়নিয়ার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু শর্তঃ
১। আপনার মধ্যে যে ক্ষমতা আছে তা কাজে লাগান।
২। ১০০০ জনের মধ্যে অন্যতম একজন হওয়ার চেষ্টা করুন।
৩। যেকোন কাজের ক্ষেত্রে নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন।
৪।
যেকোন কাজের ক্ষেত্রে নিজের মাথা ঠান্ডা রাখুন।
৫। কোন কিছু না পারলে আবার প্রথম থেকে শুরু করুন।
৬। জটিল কাজের প্রথম ধাপ শেষ করে পরের ধাপে যান।
যেকোন জটিল কাজ স্টেপ বাই স্টেপ করার চেষ্টা করুন।
৭। সবশেষে এক মগ কফি খেয়ে অসাধারণ একটা ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করুন।
আপনি যদি শূন্য ডলার থেকে মিলিয়ন ডলার আয় করতে চানঃ
এর জন্য আমি আপনাকে একটা ছোট গল্প শোনাব। যদিও গল্পটা কাল্পনিক।
একদা এক শহরে ব্রায়ান নামের এক যুবক বাস করত। কোন এক কারণে সে তার চাকরি হারিয়েছিল। চাকরি হারিয়ে সে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। তখন তার হাতে কোন নতুন বিজনেস চালু করার মত টাকাও ছিল না। তখন সে ঘোড়দৌড় এর বাজিতে খেলতে গিয়েছিল।
তার পকেটে ছিল মোটে ১০০ ডলার। সে প্রথম বাজিতেই ১০০ ডলার ধরেনি। ধরেছিল ৩০ ডলার। প্রথম বার বাজিতে হেরে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বারও সে হেরেছিল।
কিন্তু তৃতীয় বার সে জিতে যায়। তারপর থেকে পরপর তিনবার সে জিতে। তার শেষ বাজিটা কত ছিল শুনবেন? ১৫০০ ডলার ! হ্যা। দিনশেষে যখন সে বাসায় ফিরছিল তখন তার পকেটে ১৫০০ ডলার ছিল।
সেই সময় ১৫০০ ডলার দিয়ে রাস্তার মোড়ে একটা দোকান খুলে ফেলা যেত।
এইবার তার জীবনানুসারে মিলিয়নিয়ার হওয়ার জন্য কয়েকটি নিয়ম দিলামঃ
নিয়ম ১, শুরু করুন আপনার ব্যবসাঃ প্রত্যকেই সাধারণ অল্প সময়ে বেশী লাভবান হতে চায়। কিন্তু দিহান কখনই এই চিন্তা করে নি। কারণ সে জানত এইভাবে ১ লাখ ডলার কামানো সম্ভব কিন্তু ১০ লাখ নয়। কারণ অল্প সময়ে অধিক লাভবান হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ভেজাল দিতে হবে। এতে আপনি এক লাখ বা তার আশেপাশে যেকোন অঙ্কের ডলার কামাই করতে পারবেন(আপনার প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী)।
কিন্তু এক মিলিয়ন না। কারণ আপনার কুকির্তী সকলে জেনে যাবে। আর এতে আপনার ব্যবসাতে ধস নামবে। ব্রায়ান তার ১৫০০ ডলার দিয়ে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসা শুরু করেছিল।
নিয়ম ২, একজন ক্রেতা খুজে বের করুনঃ মিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন স্তর।
মানুষ সব সময় ম্যাজিক প্যাথ চায়। (উদাহরনঃ আমি চাকরি ছেড়ে দিব, একটা কোম্পানি তৈরী করব, প্রোডাক্ট তৈরী করব, সেগুলো বাজারে বিক্রি করব এবং আমি হয়ে যাব মিলিয়নিয়ার) কিন্তু বাস্তবে এই বিষয়গুলো খুব কমই ঘটে। ধরুন আপনি ১০ জন ক্রেতা পেয়েছেন। যারা আপনার পন্য কিনবে। ধরা যাক প্রত্যেকে ১০০ ডলার করে ইনভেস্ট করবে।
এতে আপনি পাবেন মোট ১০০০ ডলার। এখান থেকে আপনি লাভ করতে পারবেন ১০০+ ডলার। প্রতি সময় ক্রেতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। প্রতি মাসের শুরুতে আপনি কত ডলার কামাই করবেন সেরকম একটি লক্ষ্য ঠিক করে নিন। সে অনুযায়ী কাজ করতে থাকুন।
ব্রায়ান ১০ জন কাস্টমার খুজে বের করেছিল(মোট ১২ জনকে আহবান করেছিল) যারা তাদের ক্রেডিট কার্ড প্রসেস করার জন্য ব্রায়ানের উপর নির্ভর করেছিল। সে লক্ষ্য ঠিক করে ১০ জন কাস্টমারের কাছে থেকে প্রতি মাসে ২,১০০ ডলার আয় করবে। কিন্তু প্রথম মাসে সে ৬,২০০ ডলার লাভ করে।
নিয়ম ৩, নিজের উপর বিশ্বাস রাখুনঃ আপনি যদি মিলিয়নিয়ার হতে চান তাহলে সব চাইতে গুরুত্ব পূর্ণ হচ্ছে আপনাকে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। এই কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে যে আমি মিলিয়নিয়ার হতে পারব।
শুধু বিশ্বাস করে বসে থাকলেই হবে না। বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যা বিশ্বাস করেন সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
নিয়ম ৪, ব্লগিং এর মাধ্যমে কি ডলার আয় করাই কাজ? না। ব্লগিং ইস নট এবাউট মানি।
ব্লগিং হল বিশ্বাস। আপনি আপনার ব্লগ থেকে হয়ত কোন এড প্রদর্শন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। আপনি হয়ত আপনার ব্লগের মাধ্যমে কোন ডিল করতে পারছেন না। কিন্তু আপনি একটা জিনিস পারছেন! সেটা হল ব্লগ পাঠকদের কাছে নিজেকে বিশ্বাস যোগ্য করে তুলতে পারছেন। ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি আগে ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন করুন তারপরে ডলার এমনিতেই আসবে।
না আসলে এই দিহান কান কাইট্টা দিবে!
নিয়ম ৫, যেকোন সময় যেকোন পরিস্থিতিতে হ্যা বলতে শিখুনঃ ধরুন ক্রেতা আপনার কাছে এমন একটা কিছু চাইছে যেটা আপনি এর আগে বাজারজাত করেননি। ধরুন আপনি একজন সফটওয়ার ডেভলপার। আপনি পাইথন বেসড সফটওয়ার ডেভেলপ করে থাকেন। কিন্তু কেউ একজন এসে আপনার কাছে অন্য ধরণের সফটওয়ার চাইল যেটা পাইথনে সম্ভব না। আর তাছাড়া লোকটা আপনাকে সময় ও কম দিয়েছে।
এখন কি আপনি লোকটিকে ঘুরিয়ে দিবেন? না! আপনি তাকে ঘুরিয়ে দিবেন না। কারণ আপনি হতে চান মিলিয়নিয়ার। আর যারা মিলিয়মিয়ার হতে চায় তাদের কোন কিছুতে না বলতে নেই। অর্ডার নেয়ার পরেই আপনার ভেতরে এক ধরণের অস্থিরতা কাজ করবে। দরকার হলে নতুন প্রোগ্রামার নিয়োগ দিন।
সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ঝুকি নিতে হবে। কারণ যেখানে হারানোর ঝুকি নেই, সেখাতে সফলতার সম্ভাবনাও নেই।
উপরের ৫ টা নিয়ম ব্রায়ান পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেনে চলেছিল। তার প্রথম আয় ছিল মাত্র ৬ হাজার ২০০ ডলার কিন্তু ২ বছরের মধ্যেই সে তার ব্যবসাতে এক মিলিয়ন ডলার লাভ করে এবং প্রতি বছর তার মূলধনের পরিমাণ দ্বিগুণ হচ্ছিল।
২০১১ সালে, যখন তার ব্যবসার বয়স ৪ বছর হয় তখন তার একাউন্টে ৩৪ মিলিয়ন ডলার ছিল।
এবং বর্তমানে ক্রান্সবেসের হিসাবানুসারে সে প্রতি বছর ৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে থাকে এবং সেটা ক্রেডিট কার্ড প্রসেসিং এর মাধ্যমে!
সুতরাং দেখা যাচ্ছে আসলেই চাকরি ছেড়ে দেয়া খুব খারাপ কিছু নয় যদি আপনি চাকরি ছাড়ার পরে মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারেন!
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।