পথের প্রান্তে আমার তীর্থ নয় ,,,,,পথের পাশেই আছে মোর দেবালয়
হ্যামিলনের বাশীওয়ালার মায়ের কথা পড়ে গতকাল সারাক্ষনই মনে হয়েছে এ বিষয়ে কিছু লিখিনা কেন ?
আমার একটিই ছেলে । ওকে আমি মাঝে মাঝে বলি শোনো 'আমি চাই বড় হয়ে তুমি বাইরে পড়তে যাবে আমার খুব শখ ' ।
ও বলে ' কেন মা এখানে কি পড়ালেখা হয়না '?
হবেনা কেন, আমার ইচ্ছা তুমি বড় হয়ে বাইরের কোনো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে আসো।
ও কিছু বলেনা তবে বুঝি আমার কথা ওর ভালো লাগছেনা ।
আমার ছেলে আমার বন্ধুর মত ,এই তর্ক করছি, আবার এই হাসাহাসি করছি ।
একবার কি নিয়ে ও আমার সাথে খুব তর্ক করছে, আমি ওর বাবাকে বল্লাম 'তুমি কি কিছু বলবে ?'
বাবার উত্তর 'আমি কি বলবো !একটু পড়েই তো দেখবো দুজনে বসে টিভি দেখছো আর হাসছো। '
এটা ঠিক । আমার ছেলের সাথে আমার মানসিকতার অনেক মিল যা তার বাবার সাথেও নেই। তার এমন একটা ভাব যেন সে আমারও বাবা।
আমি ফুটবলে চেলসীর সাপোর্টার তো আমার ছেলে ম্যান ইউর ।
cricket ও যে দল জিতবে তার সাপোর্ট করবে ইনডিয়া ছাড়া আর আমি আজীবন অস্ট্রেলিয়া। তবে আমার ছেলে আর আমি দুজনেই ফরমূলা ওয়ান রেসিং কারে ফেরারীর ভক্ত । আমার সাহেব খবর আর টকশো (ঢাকা)এর ভক্ত আর অমিতাভ বচ্চেনর আগের যত সিনেমা একশ বার দেখতেও তার আপত্তি নেই। খবরের মত খবর থাকলে আমরাও দেখি তবে তার মত যত বস্ত পচা রাজনৈতিক ঝগড়াঝাটির খবর না। চ্যানেল এর পর চ্যানেল ঘুরিয়ে একই জিনিস দেখেই যাচ্ছে।
সে জন্য তার আলাদা টিভি।
প্রায়ই মা ছেলে দুজনে বসে এসব নিয়ে চুপিচুপি তার বাবাকে পচাচ্ছি। তবে ঝগড়া হলে ছেলে সাথে সাথে তার বাবার পক্ষে !!
আমি যখন মাংস রান্না করি তখন সে দু একবার এসে দাড়ায় 'এখন কি দিবে,ও মশল্লা ,তারপর কি '? আমি জানতে চাইলে বলে ' আম্মু তুমি যখন আমাকে বাইরে পড়তে পাঠাবে আমি যেন অন্তত মুরগীটা রাধতে পারি'। আমি শুধু হাসতাম।
কাল ' কথার বাশী ১৪' পড়ে আমার মনে হয়েছে সত্যিই যদি ছেলেটা বড় হয়ে বাইরে চলে যায় !! ওরতো ব্যস্ততায় সময় কেটে যাবে।
কিন্ত আমার দিনগুলো !!!!
এখন এসে বল্লো কি নাস্তা খাবো আম্মু ?
কেন পাউরূটি মাখন ডিম কত কিছুই তো আছে !
"না না এসব ভালো লাগেনা তুমি আলু ভাজি আর রূটি বানাও । আমি বড় হয়ে তোমাকে এমন একটা মেশিন কিনে দেব যেখানে আটা দিলে রূটি হয়ে বের হবে তোমার আর কস্ট হবেনা। "
কি যে আলু ভাজি আর হাতে গড়া রূটির ভক্ত !!!
ব্লগ লেখিকার মন পরাজিত হলো মায়ের মনের কাছে ।
উঠে পা বাড়ালাম রান্নাঘরের দিকে ।
লিখেছেনঃ মাহজাবীন জুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।