আমি কি আমার শ্রেণী বিচ্যূত হতে পেরেছি? নিশ্চয়ই না। আমার রক্তের মাঝে এখনো যক্ষ্মা বীজের মতোন লুকিয়ে আছে মধ্যবিত্ত মানসিকতা। তাই তো শ্রেণী উত্তরণের স্বপ্ন দেখি। প্রায়ই স্বপ্ন দেখি অধুনা মডেলের গাড়ি, বাড়ি ইত্যাদি প্রাচুর্যের। কখনো বা জনপ্রিয়তার নেশায় হই বিভোর।
বাংলাদেশ ছোট্ট দেশ, তাই হয়তো জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছতে না পারলেও জনতার একাংশের প্রিয় হতে পারব নিশ্চিত জানি। কিন্তু এতেই কি সব? পরবর্তী জেনারেশনের জন্য করণীয় কিছুই কি নেই আমাদের? মূলত: এখন আমাদের আত্মবিশ্লেষণের সময় এটা। অথচ দেশ কিংবা জাতির কথা কেই বা ভাবে। আমরা সবাই আত্মকেন্দ্রিকতাতেই মগ্ন। আমাদের জেনারেশনকে সংক্রমিত করেছে ভোগবাদী অপ-দর্শন।
বৈষয়িক উন্নয়নের মাধ্যমে তোমার পরিবার-পরিজনসহ ভোগ করো, আরো ভোগ করো, ভোগেই পরম তৃপ্তি ... এ বেড়াজালেই আটকে পড়েছে আমাদের মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী। তোমার পরিবার-পরিজনের বাইরে চারপাশের ওরা গোল্লায় যাক ... ওদের নিয়ে ভাবার অবকাশ তোমার কোথায় -- এ ধরণের এক মনোভাব কমবেশী আমাদের সবার মাঝে।
অনেক সজ্জ্বন ব্যক্তি তাদের সন্তানদের 'হিতোপদেশ' দেন,"লেখাপড়া শেষ করে দেশের বাইরে কোথাও প্রতিষ্ঠিত হও, তাহলেই এই করাপ্ট দেশের বিষাক্ত নিশ্বাস থেকে পাবে অব্যহতি। " অথচ তাদেরকে কখনো বলতে শুনিনি এ করাপশনের বিরুদ্ধে সীমিত শক্তিতে রুখে দাঁড়ানোর কথা। আসলে আমাদের প্রজন্মের মাঝে বর্তমান সমাজ-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলেও এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস খুবই কম।
তাই আমাদের মাঝে কমন দুটি বৈশিষ্ট্য-- এ সমাজ ব্যবস্থার কাছেই নতি স্বীকার কিংবা গা বাঁচানো এই পলায়নপর মনোবৃত্তি।
ব্যক্তিগতভাবে আমার অভিমত, সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমাদের কারো কারোকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন প্রচলিত ধ্যান-ধারণা আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে ভোগবাদী অপদর্শনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আমাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা সামন্ততান্ত্রিক মনোভাবের পরিবর্তন করে চৈতন্যের সংস্কার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।