ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের ছত্রছায়ায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নোয়াখালীর মেঘনা উপকূলে অবাধে জাটকা ইলিশ নিধন চলছে। নদী থেকে ধরা এ জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে নোয়াখালী জেলা শহরসহ বিভিন উপজেলা ও প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের হাট বাজারে। বৃহস্পতিবার একাধিক বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। অবস্থা দেখে মনে হয় যেন দেখার কেউ নেই। তবে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসন সহসায় বাজারে জাটকা বিরোধী অভিযান চালানো হবে বলে জানান।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, দেশের রূপালী ইলিশের প্রজনন রক্ষার্থে সরকার আগামী দু’মাস মেঘনা নদী থেকে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ করলেও নোয়াখালীর মেঘনা নদীর মোহনায় জাটকা নিধন চলছে দেদারছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত জাটকা নিধন ও বিক্রি বন্ধে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার জেলার সুবর্ণচর, সোনাপুর বাজার, মাইজদী পৌর মার্কেট, মাইজদী বাজার, বেগমগঞ্জর চৌরাস্তা, চৌমুহনীর মাছ বাজার ও সোনাইমুড়ীসহ একাধিক বাজারে ঘুরে দেখা যায়, খুচরা মাছ বিক্রেতারা অবাধে বিক্রি করছে জাটকা। বাজরে যে সব জাটকা বিক্রি করা হয় এগুলোর আকার সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি। সাত আটটি জাটকা ওজন করলে বড় জোর এককেজি হয়।
বাজারে কয়েক জন খুচরা বিক্রোতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলেরা নদী থেকে এসব জাটকা ধরে আড়তদারদের কাছে কম দামে বিক্রি করে। কিন্ত খুচরা বিক্রতার কাছে পাইকারী প্রতিমণ ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা বিক্রি করে। বাজারে প্রতিকেজি জাটকা ১৩০-১৫০ টাকা বিক্রি করা হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েক জন আড়তদার জনান, নদী থেকে জেলেরা মাছ ধরে নদীতেই বিক্রি করে। এ জন্য আমরা জেলেদেরকে দাদন দিয়ে থাকি।
নোয়াখালীর হতিয়ার বয়ারচর, চেয়ারম্যান ঘাট, রামগতির আলেকজান্ডার ঘাট থেকে প্রতিদিন টনেটনে জাটকা বিভিন্ন বাজরে যায়। নদীতে জটকা মাছ ধরা থেকে শুরু করে বাজরে বিক্রি পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীদের হাত থাকায় কেউ এর প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
সুবর্ণচরের আ’লীগ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন, মোজামসহ একটি সংঘবদ্ধ দল উপকূলের এই জাটকা ইলিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। গত সপ্তাহে প্রশাসন সোনাইমুড়ী ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজার থেকে বিপুল পরিমাণ জাটকা জব্দ করলেও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা তা ছিনিয়ে নেয়। সোনাইমুড়ী উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হাযারী উপজেলা মৎস কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে বাজার থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় উপজেলা মৎস কর্মকর্তা বাদী হয়ে শ্রমীকলীগ ক্যাডারদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশ এখনো কোন আসামীকে গ্রেফতার করেনি। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে অবাধে জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হলেও সেখানে কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। এভাবে জাটকা মাছ অবাধে নিধন করা হলে হাজার-হাজার টন রুপালী ইলিশ হারাবে দেশ। সঠিক ভাবে পরিকল্পানা নিলে মেঘনা নদীর রুপালী ইলিশ দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল বিদেশী মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে অভিজ্ঞমহল মত প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে জেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা বিলকিছ তাহমিনার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমাদের জনবল কম থাকায় অভিযানে সমস্যা হয়।
এর পরও জাটকা নিধন ও বিক্রি বন্ধ করার জন্য অমরা জরুরী পদক্ষেপ নেব। জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জাটকা বিক্রি বন্ধ করার জন্য জেলার বিভিন্ন হাটবাজরে শ্রীঘ্রই অভিযান চালানো হবে। এ জন্য মৎস কর্মকর্তার নেতৃত্বে বাজারগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। -নোয়াখালী সংবাদদাতা, ০৪ মার্চ, নোয়াখালী ওয়েব নিউজ।
কৃষি-পরিবেশ-অর্থনীতি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।