আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গন্ধটা বড় জ্বালাচ্ছে....

আশা নাই তাই মশারির ভেতর মশা ও নাই।

আমি এক আম পাবলিক। মেংগ পিপল কয় আজ কালকার ডিজুস পোলাপাইন। এই আমের গন্ধ আমার নাকে কেন জানি লাশের গন্ধের মত লাগে। কারণ খুজতে শুরু করলাম, পাই না।

চিন্তা করতে থাকি। খুজতে থাকি নিজের আমল আখলাখ। নাহ। এমন কিছু ত করিনাই। মানুষ খুন?ওরে বাপরে।

একটা ইদুর মারি নাই জীবনে মানুষ খুন কেমনে? তবু খালি লাশের গন্ধ আসে কেন? তাও আবার নিজের গা থেকে? গত বছর এমন দিনে বিডিআর মামারা খেপছিল। হেগ লগে আমিও খেপছিলাম। দে মাইরা, হালায় আর্মি ঘুষ খাইতে খাইতে দ্যাশ টা রে শেষ কইরা দিছে। মুন্নি আপার হাতে মাইক। ৮ম পাস বিডিআর জওয়ানের কথায় আমিও দিলাম ফাল।

ফেস বুক ফাডায় লিখা লিখি, গো বি ডি আর গো। আরে শালা এরে ওরে ফোন দিতে থাকলাম। চমৎকার আরেকটা টিভি প্রগ্রাম যায়গা, দেখ। লাইভ যুদ্ধ... ইন্টারেস্টিং। কিন্তু হের পর থাইকা আমার গায়ে লাশের গন্ধ করব ক্যান? দিন যায় সন্ধা হয়, আমি জানি অনেক সংখ্যক আর্মি অফিসার ভিতরে, বাইরে বাংগালী হাজারও, মরব তাবু উঁকি দিব।

আর চ্যানেলের টি, আর পি, যুদ্ধ ঘরে ঘরে। চা নিয়া টিভির সামনে বইসা মজা দেখি। ফোনে ফোনে শেয়ার করি। আতন্ক এনজয় করতে থাকি। কিন্তু তাই বইলা আমার গায়ে লাশের গন্ধ করব? অল্প বয়সি যুবক নানক কে দেখি গেটের সামনে রাজনৈতিক মক্তিমা দিতে, আরেক যুবা মির্জা আজম সাথে।

এইবার ইন্টারেস্ট আরও জমছে। তার পর দেখি আমাদের অতি প্রিয় সাহারা আপা, যিনি রাজনিতির জন্য জীবনে অনেক কিছু ত্যাগ করে মন্ত্রিত্ত পেয়েছেন, সেই সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ট স্বরাস্ট্র মন্ত্রি কে। দেখি খালেদা আপার চুপচাপ থাকা। আর হাসিনা আপার যুদ্ধাবস্থার নাটকীয় রাজনৈতিক সমাধান। আমি ত শুধু দর্শক, তাহলে এই লাশের গন্ধ ক্যান? একে একে বেরিয়ে আসে লাশ, পায়খানার ড্রেন দিয়ে, বেরিয়ে আসে গণ কবর, বোনেরা বেরিয়ে আসে আতংকিত ছোট ছোট বাবুরা বেরিয়ে আসে, জগতের অন্যতম নির্মমতার সাক্ষি হয়ে।

আমার ভিতরের মানুষ টা কিছু সময়ের জন্য জেগে ওঠে। চোখ ভিজে যায়। তার পর মুনতাসির মামুনরা বলেন আর্মি চোর, আর্মি ডাকাত, আর্মি খারাপ। আমি আবার ও ফাল দিয়া উঠি। বলি গত দুই বছরে আর্মি কম করছে? ফেরেস্তার মত মানুষেরা, হাসিনা, খালেদা, সাকা, জলিল, তারেক, ঈত্যাদী রে কি প্যদানি দিছে,... এক মইন কুলাংগারের দোষ ত পুরা আর্মির ঘাড়েই দিতে হইব।

ঠিকই ত তাই বইলা আমার গায়ে লাশের গন্ধ... ভুলে যাই সেই ছোট ছোট বাবুদের কথা, বোনদের কথা। মানুষ অবস্থায় বেরিয়ে আসা আমার চোখের জ্বল রক্ত হয়ে যায়। আমার শরির দিয়ে আবার লাশের গন্ধ বের হয়। আজ কোনও এক বৃষ্টির দিনে আমার সেই বিধবা বোন যখন দীর্ঘশ্বাষ ফেলেন, আমি তখন কোনও গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে অথবা বউ কে নিয়ে সিনেপ্লেক্স এ। ছোট ছোট বাবুদের চোখ যখন বুঝে উঠতে পারে না কি যেন নেই, তখন আমি বাড়িতে আমার বাবাকে ফোন করে বলি, কত দিন দেখি না, এবার ছুটি তে আসব।

.... ইশ গন্ধ টা বড় বিশ্রি। একদিন স্বপনে দেখলাম তাঁকে। সে বল্ল আমি নাকি মরে গেছি। তাই লাশের গন্ধ টা আসলে আমার গা থেকেই বের হচ্ছে। আঁতকে উঠলাম।

মানতে চাইলাম না। তার পর একে একে বিশ্বাস হতে শুরু করল। তাকালাম হতাশ চোখে। কিছুক্ষনের জন্য এলোমেলো হয়ে গেল সব। আমি মরে গেছি, বেঁচে থাকলে এত কিছুর নিরব দর্শক আমি হতে পারতাম না।

ঘুম ভেংগে গেল হঠাৎ.... আরে দেরি হয়ে গেছে। আজ বাংলাদেশের খেলা না? এই আশরাফুল টা যে কি?... রাতের স্বপ্ন কোথায়..হারিয়ে গেল। কিন্তু গন্ধ টা যে বড় জালাচ্ছে.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।