চমেক এলাকায় তরুণী ধর্ষণ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ মুখোমুখি
চমেক প্রতিনিধি
তরুণী ধর্ষণের ঘটনা কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ।
অভিযোগ উঠেছে, চমেক হাসপাতাল থেকে রোগী দেখে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের ৪ ক্যাডার ধর্ষণ করে এক তরুণীকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের একাংশ অভিযুক্ত ওই ৪ ক্যাডারকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গত শনিবার রাতে দফায় দফায় মীমাংসা বৈঠক বসলেও শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই তা শেষ হয়। এ সময় অভিযুক্ত ধর্ষকদের একজনকে ছাত্রলীগ কর্মীরা গণধোলাই দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ধর্ষিতার কোনো পরিচয় জানাতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে জনৈক তরুণী হাসপাতাল থেকে রোগী দেখে ফেরার পথে চমেক খেলার মাঠের নির্জন এলাকায় তৃতীয়বর্ষের ২ জন, দ্বিতীয়বর্ষের একজন এবং প্রথমবর্ষের ১ জন ছাত্রলীগ ক্যাডার তার গতিপথ রোধ করে তাকে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে নিয়ে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ঘটনা গত ৩ দিন চাপা পড়ে থাকে। কিন্তু ধর্ষকদের একজন তার বন্ধুদের কাছে তা বর্ণনা করলে ঘটনাটি দ্রুত ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। দাবি ওঠে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের।
এ নিয়ে ধর্ষকদের গ্রুপের সঙ্গে বিচারপ্রার্থী ছাত্রলীগের অপর গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষের আশঙ্কায় এ সময় চমেক ছাত্রাবাসে মোতায়েন করা হয় কয়েক প্লাটুন পুলিশ। দফায় দফায় বিষয়টি মীমাংসার জন্য গত রোববার রাতে উভয়পক্ষ বৈঠকে বসে। এ সময় ধর্ষকদের একজন পালিয়ে যায়। পরে তাকে কর্মীরা ধরে এনে গণধোলাই দিতে থাকলে উভয়পক্ষের মধ্যে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শুরু হয় তীব্র হট্টগোল আর হাতাহাতি। এ সময় পুলিশ গণধোলাইয়ের হাত থেকে তাকে রক্ষা করে পাঁচলাইশ থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় চাপের মুখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চমেক ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্রাবাসে আসেন। এক পর্যায়ে প্রতিবাদের মুখে তারাও ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে যান।
রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা দফায় দফায় বৈঠকের পর বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় আবারও তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। রাত আড়াইটার সময় কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম জাহাঙ্গীর এসে বিচারের আশ্বাস দিলে উভয়পক্ষ শান্ত হয়। তবে গতকালও বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় উভয়পক্ষের মধ্যে এখনও তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. তানভীর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে কলেজ ছাত্রলীগের সেক্রেটারি টিএম নাসিফ ফাহাদ আমার দেশকে জানান, ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত ধর্ষকদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চমেক ছাত্রলীগের নেতাদের একাংশ। মীমাংসার সময় অভিযুক্ত ৪ ধর্ষক উপস্থিত থাকলেও বারবার একজনের ওপর হামলা চালাচ্ছিল কর্মীরা। গতকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা কলেজ কর্তৃপক্ষ নেয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে তদন্তের অগ্রগতি জানার জন্য পাঁচলাইশ থানায় ওসির মোবাইল ফোনে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।