আচ্ছা ঠাকুরগাঁওয়ে কী একজন বিত্তবান-চিত্তবান মানুষও নেই ? যারা এই
জেসমিন ও তার পরিবারকে একটা সুন্দর জীবন উপহার দিতে পারেন ?
প্রিয় পাঠক- পাঠিকা , পড়ুন এই সংবাদ টি । কী করুণ একজন কিশোরীর
জীবন সংগ্রাম !
সামান্য সাহায্যের হাত বাঁচাতে পারে এই অস হায় পরিবারটিকে ।
জানি সরকার আর সমাজের ক্ষমতাবানরা এর ধার কমই ধারেন।
তারপরও তো মানবতা আছে । আছে মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ব ।
Click This Link
কলম ফেলে হাতে লাঙ্গল তুলে নিয়েছে জেসমিন
ঠাকুরগাঁওয়ে এক কিশোরীর জীবনসংগ্রাম
======================================
০ ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা
ঠাকুরগাঁওয়ের জীবন সংগ্রামী জেসমিন শুধু সংসারের নয় মাঠেরও হাল ধরেছেন। যখন বান্ধবীদের সঙ্গে দল বেঁধে স্কুল যাওয়ার কথা, ঠিক সেই সময় পিতার অকাল মৃত্যু আর অভাবের তাড়নায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিশোরী জেসমিনকে। যে নরম হাতে বই, খাতা আর কলম ধরার কথা, সেই হাতে তাকে ধরতে হয়েছে কঠিন লাঙ্গল। কঠিন শক্ত এবড়োখেবড়ো মাটির উপর চলছে নরম পা । জীবন বাঁচাতে বই-খাতা রেখে জেসমিন এখন জমি চাষ করছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর হরিণমারী নয়াপাড়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের বড় মেয়ে জেসমিন। বয়স মাত্র ১৩ বছর। তিন বছর আগে সাপের দংশনে তার পিতা রফিকুল ইসলাম মারা যান। তখন থেকে জেসমিনদের সংসারের চাকা থেমে যায়। সংসারে নেমে আসে অভাব ।
জেসমিনের মা আবেদা একা সংসার চালাতে পারেন না। তিন মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখেন আবেদা। অনাহারে-অর্ধাহারে কাটাতে হয় সবাইকে। এক সময় বড় মেয়ে জেসমিন সিদ্ধান্ত নেয় লেখাপড়া বাদ দিয়ে মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করার। কিন্তু ঝিয়ের কাজ করে তার ছোট ভাই-বোনদের কোন উপকারে আসবে না এটা বুঝে জেসমিন সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে।
সে পুরুষের মতো মাঠে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ধীরে ধীরে মাঠে পুরুষদের সঙ্গে কাজ করতে করতে কৃষি কাজের সকল কৌশল আয়ত্ত করে ফেলে। সে এখন মাঠে শুধু জমি চাষই নয়, বীজতলা থেকে বীজ তুলে রোপা লাগানোসহ সকল কাজই করতে পারে।
জেসমিনের সঙ্গে কথা বললে, সে ছলছল চোখে জানায়, পিতার অকাল মৃত্যু আর অভাবের কারণে এ কঠিন কাজগুলো তাকে করতে হয়। সে আরও জানায়, কারও সহযোগিতা পেলে সে স্কুলে লেখাপড়া করবে।
জেসমিনের মা আবেদা জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারে অভাব আঘাত হানে। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বার বার ঘুরেও একটি বিধবা ভাতার কার্ড পাননি। আবাদি কোন জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষবাস করে ফসল ফলিয়ে সংসারের অভাব দূর করার ব্রত নিয়েছে তার মেয়ে। জেসমিন তার মেয়ে নয়, ছেলে।
[ দৈনিক ইত্তেফাক / ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।