দেশের সবচেয়ে বড় চিনি কল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি এবং ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের গুদামে অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৭৭ কোটি টাকার চিনি। মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে এলেও এসব চিনি বিক্রি না হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। গুদামেই এ চিনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ দেশে উৎপাদিত চিনির দাম আমদানিকৃত চিনির চেয়ে বেশি হওয়াই এ অবস্থার জন্য দায়ী।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি আবদুল লতিফ লিটু জানান, ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের গুদামে অবিক্রীত পড়ে আছে ৪২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা মূল্যের কয়েক হাজার টন চিনি।
এতে লোকসানে পড়েছে মিলটি। মিল কর্তৃপক্ষ বলছে, উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় বেড়ে যাওয়া ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চিনি উৎপাদন করতে না পারায় চিনির গুণগত মান ভালো হচ্ছে না। এ ছাড়া আমদানিকৃত চিনির দাম কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা দেশে উৎপাদিত চিনি কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। চিনির ডিলার শাহাজাহান খান জানান, আমাদের চিনিকল থেকে প্রতি মাসে শুধু ডিলারশিপ বাঁচাতে যতটুকু চিনি তুলতে হয় ঠিক ততটুকু তুলি। কারণ মিল গেটে চিনির দাম ৫০ টাকা কেজি।
অথচ বাজারে আমদানিকৃত চিনি পাওয়া যাচ্ছে ৪২-৪৩ টাকা কেজি দরে। ফলে কেজিতে ৭-৮ টাকা লোকসান দিয়ে মিলের চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। চিনিকলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার পাইন জানান, 'ব্যবসায়ীরা ভালো সুযোগ-সুবিধা ও দাম কম পাওয়ায় আমদানি করা চিনি বিক্রি করছেন। আমাদের চিনির দাম কম হলে চাহিদা বাড়ত। '
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জামান আখতার জানান, একই অবস্থা চুয়াডাঙ্গার দর্শনার কেরু অ্যান্ড কোম্পানির।
এখানে গুদামে অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৩৫ কোটি টাকার চিনি। আমদানিকৃত চিনির দাম কম হওয়ায় ডিলাররা কেরুর চিনি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। মৌসুম শেষ হওয়ার আগে এ চিনি বিক্রি করতে না পারলে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করেছে কর্তৃপক্ষ। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ বেসরকারি শীর্ষ চিনি রিফাইনারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করায় প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না সরকারি চিনিকলগুলো। ব্যবসায়ী অর্জুন কুমার জানান, বেসরকারি চিনি ৫০ কেজির বস্তা ২১০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হলেও কেরুর চিনির মিল গেটের দাম ২৫০০ টাকা।
খুচরা ৫৫ টাকা কেজির নিচে বিক্রি করলে লাভ হবে না। এ কারণে খুচরা ক্রেতারা বাজারে চিনি পাচ্ছেন না। কেরুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম সুদর্শন জানান, 'সরকারি নির্দেশনার বাইরে গিয়ে চিনি বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।