অদ্ভুত সব স্বপ্ন....আজগুবি সব খেয়াল....বড় হওয়ার বাকি...নাকি আমি এমনি ....পুসকি
কয়দিন ধরে পেপার পত্রিকা খুললেই শুধু মৃত্যু সংবাদ। প্রথম দিকে টানা বেশ কয়েকটা রোড এক্সিডেন্ট। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এখন আবার শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে খুনোখুনির ঘটনা! এবং আশ্চর্যজনক ভাবে এই খুনগুলো ও হল পরপর। ভীষণ মন খারাপ লাগে রোজ এসব দেখে। এখন নিজের প্রিয়জনদের নিয়ে একটা অজানা আতঙ্ক ক্রমেই দানোর মতন মনে বাসা বাধতে শুরু করেছে দিনের পর দিন।
আমার কাছে মনে হয় সুস্থ স্বাস্থের পর মানুষের জীবনে উপরওয়ালার সবচাইতে সুন্দর উপহার হল ভালবাসা। উপহার বলছি কারণ আমি এমনো সন্তানের কান্না শুনেছি যে কিনা বাবার আদর কী জানে না। কারণটা যে তার বাবা নেই, তা নয়। বরং মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়ার অপরাধে (!) সে তার বাবার আদর ভালবাস থেকে বঞ্চিত হয়েই বড় হচ্ছে। আর এমন ঘটনা যে হাতে গোনা তাও নয়।
এমন অনেক ঘটনা, অনেক রূপেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের চারপাশে!
আবার কদিন আগেরই কথা বলি। আমার চেনা একটি ছোট্ট পরিবার। বাবা মা আর তিন সন্তানের সংসারে ভালবাসা আর সুখের কোনো খাদ ছিল না। নেদারল্যান্ড থেকে অনেকটা সখের বশেই স্বদেশে এসেছিলেন তারা বছরখানেক থাকার জন্য। সেই সখ ই তাদের কাল হল।
এক বেপোরোয়া গাড়ি চালকের দোষে অকালে তিন সন্তান আর স্বামীকে ফেলে মা টা অজানার পথে পাড়ি দিলেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অপূর্ব ভালবাসা ছিল। ভদ্রলোকটির সেদিনের চিৎকার করে কান্না যারা দেখেছেন তারা হয়তো কিছুটা হলেও অনুভব করেছিল সেদিন প্রিয়জন হারানোর কষ্টটা! বড় মেয়েটির বয়স ১৬-১৭ হবে। দেশের বাহিরে থাকত। আমার এখনও দৃশ্যটা স্পষ্ট চোখে ভাসে মায়ের লাশটা ধরে কাঁদছিল আর বলছিল, আম্মু কত্ত ভাল ছিল।
আমাদের কত আদর করত! সবসময় ফোন করে জিগ্গেস করত খেয়েছি কিনা। সবসময় খোঁজ নিত! এখন আম্মুর মত করে কে আমাদের এত ভালবাসবে?
হায়রে! সত্যিই তো। ভালবাসার মানুষের মত আপন করে কয়জন আর ভালবাসে?
একটা মানুষের জীবনে সত্যিকারি নিস্বার্থ ভাবে ভালবাসা দেবার মানুষ কয়জন আছে? ভালবাসা পাবার সৌভাগ্যই বা কয়জনের হয়? আর সেই ভালবাসার অতি আপনজনটি যখন চলে যায়, অনেক দুরে তখন সে অসহ্য যন্ত্রণা কী ভুলে থাকা সম্ভব? এতো সহজ নয়! যে হামীমের ভালবাসা তার মা বাবা আত্মীয় স্বজন এমনকি তার শিক্ষকদের পর্যন্ত কাদিঁয়ে গেল, সেই হামীমকে ছেড়ে থাকতে যে তার মা'র কতটা অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে পাড়ি দিতে হচ্ছে, সেটা যে এই কষ্টের ভেতর দিয়ে যায়নি, তার পক্ষে পুরোটুকু বোঝা কখনই সম্ভব না।
আর আজকে পত্রিকা খুললে শত হামীম আর সুমী দের খবর দেখি! আর বুকটা আতঙ্কে কেঁপে উঠে! আমার কাছে তো আমার বাবা, মা আর রৌ্দ্র এই নিয়ে আমার ছোট্ট পৃথিবী। এদের একজনকে ছাড়া আমি আমার পৃথিবী কল্পনাও করতে পারিনা।
যে রাস্তায় বেরিয়ে শত হামীমেরা লাশ হয়ে ফিরছে সে রাস্তাতেই তো আমার মা, বাবা, ভাইদের নিত্য আসা যাওয়া! তাই এখন পত্রিকা খুলে কারো প্রিয় মুখ হারানোর বেদনার দৃশ্য দেখতে গিয়ে নিজের ভালবাসার মানুষগুলোর কথা ভেবে চোখটা আর্দ্র হয়ে উঠে।
আজকে এই ভালবাসার দিনে তাই পরম করুণাময়ের কাছে ব্যাকুল প্রার্থনা, আমাদের ভালবাসার মানুষগুলো যেন ভাল থাকে। তুমি তাদের সকলকে হেফাযতে রেখ দয়াময়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।