মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।
কমরেড জ্যোতি বসুর স্মরণসভায় কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, সমাজতন্ত্র ছাড়া কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। চল্লিশের দশক থেকে আজ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা বড় লোকের, জোদ্দারের ও মহাজনের সরকার। এরা শ্রমিকের স্বার্থরক্ষা করবে না।
তিনি বলেন, শ্রমিককেই লড়াই ও বিপ্লবের মাধ্যমে এই বড় লোকের সমাজ ভেঙ্গে তার নিজের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
২৭ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় সোপার্জিত স্বাধীনতায় প্রগতিশীল ছাত্র-যুব সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কমরেড জ্যোতি বসুর স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি উপস্থিত ছাত্র-যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দরখাস্ত করে, হুজুরে পানিপড়া দিয়ে, স্লোগান দিয়ে এই সমাজ একচুলও পরিবর্তন করা যাবে না। শ্রমিকের রাজনীতি বুঝে, অঙ্ক করে জীবন বাজী রেখে লড়াই করে এই সমাজ ভাঙ্গতে হবে। এবং ভাঙ্গিতেই হবে।
তিনি বলেন, আমি কমিউনিস্ট পার্টি করেছি এবং এখনো করছি পেটের যন্ত্রণায়, ক্ষুধার তাড়নায়, বাঁচার জন্যে ও অন্যকে বাঁচাবার জন্যে।
এই হাত দিয়ে ব্রিটিশকে গুলি করেছি, পাকিস্তানীদের মেরেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি_আজো আমি এই সমাজ ভাঙ্গার জন্য কাজ করছি। তোমরা না ছাত্র! তোমরা না যুবক! তোমাদের ভয় কিসের?
মানবমুক্তির সংগ্রামের মহান নেতা কমরেড জ্যোতি বসুকে স্মরণ করে তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি
তোমরা কিভাবে জ্যোতি বসুকে স্মরণ কর, কারা কর, কিভাবে কর তা দেখতে শুনতে।
তিনি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, আমি জ্যোতি বসুর আদর্শকে গ্রহণ করেনি, শ্রমিকের আদর্শ গ্রহণ করে রাজনীতি করছি। জ্যোতি বসুও শ্রমিকের আদর্শ গ্রহণ করে রাজনীতি করেছেন।
তিনি বামপন্থীদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শ্রমিক শ্রেণীর আদর্শ গ্রহণ করে ব্যক্তিস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বাম্পন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সমাজ ভাঙ্গার লড়াই করতে হবে।
রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, উপমহাদেশের কমিউনিস্ট ও প্রগতিশীল আন্দোলনের একজন নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক, বিপ্লবী ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতাকে আমরা হারালাম।
তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বুর্জোয়া রাষ্ট্রের ভিতরে একটি রাজ্যে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীরা ক্ষমতায় থেকে কীভাবে শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে কমরেড জ্যোতি বসু তার বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।
জ্যোতি বসুকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, দেশ ও জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রাজনীতি ও শ্রমিক আন্দোলনে তাঁর অবদান অপরিসীম।
তিনি বলেন, সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও পুঁজিবাদী শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মাঝেই কমরেড জ্যোতি বসু চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
এ স্মরণসভায় নাজমূল হক প্রধানের সভাপতিত্বে ও ফেরদৌস আহমেদ উজ্জলের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, ছাত্র সমিতির আহবায়ক টি এম আলমগীর হোসেন টুটুল, যুব সমিতির সভাপতি এড. কামরুল ইসলাম, ছাত্র ফেড়ারেশনের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র ঐক্যের সভাপতি জুয়েল আহম্মেদ খান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ফকরুদ্দিন কবির আতিক, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মানবেন্দ্র দেব, ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হোসাইন আহম্মেদ তফসির, যুব আন্দোলনের সমন্বয়ক শেখ মোহাম্মদ, যুব মৈত্রীর সভাপতি সাদাকাত হোসেন খান বাবুল সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আলমগীর রতন, যুব ইউনিয়নের সভাপতি কাফী রতন, সাধারণ সম্পাদক হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।