৯৮সালের কথা। তখন গ্রামের একটা স্কুলে ক্লাস টু'তে পড়তাম।
শহরে চাকরিতে যাবার সময় আব্বুকে বলেছিলাম আসতে আমার জন্য একটা লুঙ্গি আনতে।
পরবর্তীতে আসতে আব্বু আমার জন্য লাল-সবুজ চেকের একটি লুঙ্গি আনলেন।
লুঙ্গি পেয়ে আমার অবস্থা এমন হল যে গোসল করার জন্যও আমি লুঙ্গিটি খুলতে নারাজ।
কাঁচা রং ভিজলে গায়ে লেগে যাবে বলে আম্মু লুঙ্গি পরায় রেখে গোসল করাতে চাইলেন্না। অবশেষে দুইদিন পর লুঙ্গি পরেই আমি গোসল করলাম আবার লুঙ্গিটি পরায় রেখেই শুকালাম।
সেদিন বিকেলে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পরায় লুঙ্গি নেই। একটা হাফ পেন্ট।
আম্মু তখন ঘরে ছিলনা।
আমি কান্নাকাটি শুরু করলে আমার এক চাচাত ভাই (আমার ৪বছরের বড়) এসে বল্ল লুঙ্গি নাকি আম্মু দর্মা(চৌচালা ঘরের শিলিং) এর উপর রেখেছে।
আমি মই বেয়ে উঠতেই সে মই সরিয়ে রেখে পালিয়ে গেল।
দর্মাটা বেড়া দিয়ে তৈরি ছিল। সে হাঁসতে হাঁসতে আম্মুকে নিয়ে আসছিল দেখে আমি উপর থেকে রেডি হয়ে থাকলাম।
আম্মু আমাকে মই ঠিক করে দিচ্ছেন ঐ সময় সে অন্য একটি রুমে দাঁড়িয়ে হাঁসতেছিল।
নিঃশব্দে তার মাথা বরাবর এসে হিসু করে দিলাম!
ধীরেধীরে তার হাস্যজ্জল বদন খানা সিক্ত মলিন হয়ে গেল মাথা চুইয়ে পড়া তরলে! ততক্ষনে মই বেয়ে নেমে আমি বাহিরে ভোঁ দৌড় দিলাম।
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আমি আর লুঙ্গির কথা জিজ্ঞেশ করার সাহস করিনি। পাছে হিতে বিপরীত হয় যদি!
কিছুদিন পর আম্মু লুঙ্গিটি বের করে পরিয়ে দিলেন। যখন খুলতে বলবেন খুলতে হবে, এই শর্তে।
রাস্তাদিয়ে ট্রাকটার যাওয়ার সময় আমরা ড্রাইভারের সিট পিছন থেকে জুলে ধরে চড়া খেতাম।
একদিন লুঙ্গি পরেই একটা চলন্ত ট্রাকটারের পিছনে ঝুলে চড়া খেতে লাগলাম। কিছুদূর যাবার পর নিচের দিকে লুঙ্গি টান অনুভব করলাম। তাকিয়ে দেখি চাকা লুঙ্গি পেঁচিয়ে ধরে ঘুরতে পারছেনা।
আম্মু গিট্টু দিয়ে পরিয়েছেন বলে প্রচণ্ড নিম্নমুখি টানের পরও লুঙ্গি খুলে যাচ্ছেনা।
পেছনের ছোট চাকাটি ট্রাকটারের ব্রেকের কাজ করে বলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ড্রাইভার ঘটনা বুজতে পেরে পিছনে তাকিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত আমাকে আবিস্কার করল।
ট্রাকটার অফ করে নেমে তার কোমরে গোঁজা কাচি দিয়ে ক্রেতক্রেত করে আমার কলিজাটা(লুঙ্গি) কেটে চাকা থেকে দেহটা উদ্ধার করে নালিশ সহ আম্মুর কাছে হস্তান্তর করলো।
কোন কথা ছাড়াই দ্রিম দ্রিম করে পিঠে দুটো তাল পড়ল। কিন্তু এসব কিছুই ফেলে আসা লুঙ্গির ছেঁড়া টুকরো হতে আমার মনোযোগ ফিরাতে পারেনি!
এরপর প্রায় সাত বছর পর কখন প্রথম আবার লুঙ্গি পরা শুরু করলাম ঠিক মনে নেই।
তবে স্মৃতি গুলো মনে হলেই মনের অজান্তে হেসে ফেলি আজো!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।