বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী আজ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতিদের লক্ষ করে বলেছেন আমার বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়াল নয়, বসে বসে স্কাইপ করেন আপনারা।
আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অধ্যাপক গোলাম আযম এবং সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ধার্য ছিল। সকালে অধ্যাপক গোলাম আযমের পক্ষে কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী হাজির হন ট্রাইব্যুনালে। তারা মুলতবি আবেদন করলে তাদের মামলা মুলতবি করেন আগামীকাল পর্যন্ত। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আজ এক মহিলা সাক্ষীর ক্যামেরা ট্রায়ালের (রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচার যেখানে সাংবাদিকরা থাকতে পারবেন না) জন্য ধার্য ছিল।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল হক হেনা মুলতবি দাবি করলে তা খারিজ করা হয়। আহসানুল হক হেনা বলেন আসামির সাথে আলোচনা না করে আমি ক্যামেরা ট্রায়ালে অংশ নিতে পারব না। এই বলে তিনি আদালত কক্ষ থেকে তার টিমের অন্যান্য আইনজীবী নিয়ে বের হয়ে যান। এরপর ট্রাইব্যুনাল অনুরোধ করেন সাংবাদিকদেরও চলে যাবার জন্য। সাংবাদিকরা চলে যাচ্ছিলেন।
এসময় হাজতখানা থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনাল কক্ষে আনা হয়। ট্রাইব্যুনাল কক্ষে প্রবেশ করেই সালাহুউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারপতির উদ্দেশে চিৎকার করে বলতে থাকেন আমার বিরুদ্ধে করবেন ক্যামেরা ট্রায়াল? কিসের ক্যামেরা ট্রায়াল? আপনারা বসে বসে স্কাইপি করেন। ক্যামেরা ট্রায়াল করতে হবে না।
এসময় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাংবাদিকরা বের হয়ে যাক। এরপর আপনি কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কথা শুনে কয়েকজন সাংবাদিক দাঁড়িয়ে যান। এসময় ট্রাইব্যুনাল পুলিশকে এবং অন্য স্টাফদের প্রতি ইঙ্গিত করেন সাংবাদিকরা যাতে বের হয়ে যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। পরে সাংবাদিকরা বের হয়ে আসেন। কিন্তু দরজার বাইরে থেকে তখনো সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর তীব্র চিৎকারের শব্দ ভেসে আসছিল বাইরে। তিনি অনবরত জোরে জোরে কথা বলে যাচ্ছিলেন।
এর একটু পরেই দেখা যাচ্ছে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে পুলিশ ট্রাইব্যুনাল থেকে বের করে নিয়ে আসে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমাকে বের দেয়া হয়েছে। তিনি এসময় বাইরে অপেক্ষমান সবার সামনে উচ্চস্বরে বলতে থাকেন আমি কি সাক্ষীকে রেপ করেছি? এটা কি রেপ কেস যে ক্যামেরা ট্রায়াল হবে? সুলতানা কামাল সাক্ষ্য দিয়েছেন। তার কি ক্যামেরা ট্রায়াল হয়েছিল? সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের প্রতি বিরূপ মন্তব্য করে বলেন, সবার বিরুদ্ধে আমি অ্যাটেম্পট টু মার্ডার কেস করব। আমি ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে।
আমি কাউকে ভয় পাই নাকি? তিনি বলেন, হাটের মধ্যে একজনের গেছে লুঙ্গি খুইলা। লুঙ্গি খুললে কি করে? দুই হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকে তাইনা? আর যে বুদ্ধিমান যে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে দ্রুত বাজার থেকে দৌড় দেয়। এদের উচিত ছিল দৌড় দেয়া। স্কাইপ সংলাপ করল তারা এর তা ফঁাঁস করার জন্য দৈনিক আমার দেশকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে?
এসময় সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে টিভি ক্যামেরার দিকে হাত উঁচু করে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, খুনের আসামী চোর, ডাকাত এদের থেকে যেন আল্লাহ আমাকে হেফাজত করেন সেই দোয়া করেন।
এর কিছুক্ষণ পর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানানো হয় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়াল হয়নি।
সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়নি। মামলা ১৭ তারিখ পর্যন্ত মুলতবি করে নেমে গেছেন কোর্ট।
ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিক বলেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের পদত্যাগের পর এবং নতুন একজন বিচারপতি নিয়োগের আগে পর্যন্ত এ ট্রাইব্যুনাল চলতে পারে না। কারণ আইনে বলা আছে তিন সদস্য নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা তার পদত্যাগের গেজেট এখনো পাইনি।
শুনেছি এবং পত্রিকায় দেখেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে কি-না তা আমাদের কাছে জানা নেই। কাজেই আদালত চলতে পারে।
লিঙ্ক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।