ভাবনারা মাথার ভিতর অবিরত তুলছে ঢেউ
টেস্টে সহজেই হারাবে বাংলাদেশকে এমনই ধারণা ভারতের সহ-অধিনায়ক বীরেন্দ্র শেবাগের। বললেন, বাংলাদেশ কোনভাবেই তাদের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের ক্ষমতা রাখে না। এমন কি, তাদের অল-আউট করার ক্ষমতাও নেই স্বাগতিক বোলারদের। এতে অবশ্য দমে যায়নি বাংলাদেশ। তারাও পাল্টা জবাব দেয়ার অপেক্ষায় আছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের সুখ-স্মৃতি নিয়ে রোববার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে টেস্ট ক্রিকেটের সর্ব কনিষ্ঠ বাংলাদেশ। নিজেদের উন্নতির ছাপ ফুটিয়ে তোলাই তাদের লক্ষ্য। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তেমন বলেছেন, "আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে; নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে জয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। প্রতিটি দিন ভালভাবে শেষ করতে পারলে টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়াবে। আমার মনে হয় দলের সবাই সেরাটা উজাড় করে দেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে।
"
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল হলেও ভারতকে অজেয় মনে করছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার দৃষ্টিতে আর পাঁচটা ভালো দলের কাতারেই ভারতের অবস্থান। সাকিব মনে করেন, সাবেক দুই বিশ্ব সেরা অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো দল নয় ভারত। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকলেও তাদের জবাব দেয়ার সামর্থ বাংলাদেশের আছে বলেও মনে করেন অধিনায়ক, "ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাদের মতোই মানুষ। তাদের অল-আউট করা অসম্ভব বলে মনে করার কিছু নেই।
ঠিক জায়গায় বোল ফেলতে পারলে নিঃসন্দেহে আমরা তাদের চাপে রাখতে পারবো। "
তবে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক বীরেন্দ্র শেবাগ বাংলাদেশকে মোটেও আমলে নিচ্ছেন না। উল্টো টেস্ট ক্রিকেটে অতি-সাধারণ মানের দল হিসেবেও আখ্যা দিতে তিনি দ্বিধা করেননি। তার মতে, একদিনের ম্যাচে যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখলেও টেস্টে সে যোগ্যতাই হয়নি সাকিবদের। তিনি বলেন, "আমার মনে হয় না বাংলাদেশ আমাদের ২০টা উইকেট নেয়ার ক্ষমতা রাখে।
আমাদের যে কয়জন ব্যাটসম্যান আছে তাদের মোকাবেলা করা যে কোন দেশের বোলারদের জন্য কঠিন। যেখানে শ্রীলঙ্কাই আমাদের সঙ্গে পেড়ে ওঠেনি সেখানে বাংলাদেশের তো প্রশ্নই ওঠে না। "
তিনি আরো বলেন, "আমরা জানি বাংলাদেশের বিপক্ষে কিভাবে টেস্ট খেলতে হবে। আর ঠিক সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বের এক নম্বর, দুই নম্বর, না তিন নম্বর দল তা দেখার বিষয় নয়।
আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলেই হলো। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতাও ভালো। আমার ধারণা চারটি টেস্ট ম্যাচ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে আমাদের। নিঃসন্দেহে আগামীকাল (রোববার) থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টেও আমরা জিততে পারবো। "
শেবাগের কথার জবাব দিতে পিছ-পা হননি বাংলাদেশ কোচ জেমি সিডন্স, "আমার মনে হয় না শেবাগ যা বলেছেন তা ঠিক।
মাইকের পেছনে বসে অনেক কিছুই বলা যায়, যা আসলে বলা উচিৎ নয়। প্রত্যেক দলেরই ভালো ও খারাপ সময় যেতে পারে। আমি অস্ট্রেলিয়া দলের অনেক জয় দেখেছি ভারতের বিপক্ষে। "
সিডন্সের বলেন, "আমরা যে ওয়ানডে এবং টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করছি, তারই প্রমাণ দিতে হবে। এরই মধ্যে অনেকেই আমাদের সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছে।
আশা করি ছেলেরা উন্নতির প্রমাণ রাখতে পারবে। আমরা পাঁচ দিনের ম্যাচে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। প্রমাণ করতে চাই শেভাগ ভুল বলেছেন। "
ভারতের বিপক্ষে এ পর্যন্ত পাঁচটি টেস্ট খেলে চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি ম্যাচটি ড্র হয়েছে ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামে।
বৃষ্টি-বিঘি�ত সে ম্যাচে দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা। দুঃখজনক হলেও সত্যি চোট সারিয়ে অনুশীলনে ফিরলেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মত শারীরিক অবস্থা এখনও ফিরে পাননি দেশ সেরা এই পেস বোলার। তারপরও রোববার সম্ভবত তিন পেসার নিয়েই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাহাদাত হোসেন, রুবেল হোসেন এবং শফিউল ইসলামকে খেলাবেন চট্টগ্রাম টেস্টে।
তাই বলে দেওয়া যায়, ওয়ানডের পর টেস্টেও অভিষেক হতে যাচ্ছে শফিউলের।
একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন 'আইসিএল' ফেরত ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নফিস। তবে ওপেনিংয়ে নয় প্রায় দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে ব্যাটিং করবেন তিন নম্বরে। তাই একদিনের ক্রিকেট থেকে বাদ পড়া জুনায়েদ সিদ্দিকী টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পেলেও একাদশের বাইরেই থাকতে হচ্ছে তাকে। এনামুল হক জুনিয়রকেও নেয়া হচ্ছে না একাদশে। খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না পেসার মাহবুবুল আলম রবীনও।
সম্ভাব্য বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ আশরাফুল, রকিবুল হাসান, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুল�াহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাহাদাত হোসেন, রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম।
সুত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।