সময়টি সম্ভবত ২০০৭ এর শেষ অথবা ২০০৮ সালের শুরুর কথা। আমার ঠিক মনে নেই । হয়তো আই, ডি, বি ভবনে নয়তো বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সামু কর্তৃপক্ষ একটি স্টলে উপস্থাপিত হয়েছিলেন। আমি ঐ স্টলে গিয়ে জানতে চেয়েছিলাম ওনাদের সেবা সম্পর্কে । স্টলে আয়োজকদের এক ভাই [ফর্সা করে] নাম মনে নাই, যিনি আমাকে সামুর সেবাসহ আমার এই বর্তমান চলমান- [আল-মীযান] নামের ব্লগটি তৈরি করে দিয়েছিলেন।
বুঝিয়ে ছিলেন, লেখকদের জন্য এই ব্লগটির বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা। আমি শুধু পাসওয়ার্ড দিয়েই খালাস। জানিয়েছিলাম - অশেষ ধন্যবাদ।
ইন্টারনেট রিগুলার ব্যবহার করিনানা। মাঝে মধ্যে যখন ফ্রি থাকি তখন একবার হলেও দেখি সামুর পরিবারের সদস্যরা কেমন আছেন।
যেদিনই খুলি সেদিনই কোন না কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মিলে যায়। যা প্রয়োজন মনে হলে সেইভ এজ করে রাখি। উপলব্ধি করার চেষ্টা করি ব্লগার ভাই-বোনদের প্রাণের কথাগুলি।
এবার আমার সাথে আপনাদের একটু পরিচয় করিয়ে দেই। দয়া করে কেউ একথা না ভাবলে খুশি হবো যে,- আমি নিজেকে আপনাদের সামনে বড় করে উপস্থাপন করার জন্য কিছু বলছিনা।
বরং একজন ব্যক্তি সম্পর্কে অপর ব্যক্তিরা কিছুটা না জানলে গঠনমূলক কোন সেবার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়না। আমার মতে, সামহোয়্যার ইন ব্লগ বর্তমান যুগে সৃজনশীল সংস্কৃতি সকল স্তরের মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য -এক সুবিশাল সেতুবন্ধন।
আমার লেখালেখির হাতে খড়ি মূলত ১৯৮৭ সালে। আমি যখন টাংগাইলের সন্তোষ জাহ্নবী স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র তখন আমাদের শ্রদ্বেয় বাংলা শিক্ষক কবি মুজাফফর আলী তালুকদার ও আমার দুই সহপাঠি বন্ধুর সহযোগিতায় আমরা একটি সাহিত্য সংকলন বের করি-১৯৮৮ সালের শুরুর দিকে। এ সংকলন আমাদের সাহির্ত্য চর্চার নতুন দ্বার উন্মুক্ত করে।
অতঃপর ১৯৮৮-১৯৮৯ সালে সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয টেকনিক্যাল কলেজ ছাত্র -সংসদে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হই। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা ও টাংগাইলের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিশেষ করে কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ লিখি ও বিভিন্ন সাহিত্য সংকলন সম্পাদনা করি। সাথে কিছু গানও রচনা করি। মাঝে, ১৯৯৪ সালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলাদেশ আয়োজিত- পুস্তক রচনা,সম্পাদনা ও অনুবাদ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সটি সমাপ্ত করার সুযোগটিও আমার ভাগ্যে জুটে যায়। সেখানে আমাদের প্রশিক্ষণ দেন দেশ বরেণ্য জ্ঞানী-গুণী কবি, সাহিত্যিক ও লেখকগণ।
লেখালেখির শুরুতে আমি বিভিন্ন দুনিয়াবী বিষয়াবলীকে উপলক্ষ্য করে লিখতাম। তবে ১৯৯৫ সালের শুরুতে আমার চিন্তা-চেতনা কিছুটা পরিবর্তন হতে শুরু করে। তখন আমি উপলব্ধি করতে থাকি আমার লেখার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত - আমার স্বজাতি মানুষ এবং মানুষের কল্যাণ।
এমতাবস্থায়, আমি যদি নিজের জীবনে প্রকৃত সত্যের পথটি উম্মোচন করে তা আমার স্বজাতি ভাই-বোনদের জন্য সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে পারি তবে তা হবে আমার সফলতা আর যদি তা না পারি তবে তা হবে আমার ব্যর্থতা। সুতরাং আগে হলো প্রকৃত সত্যের উম্মোচন এরপর হলো তার বাস্তবায়ন।
১৯৯৬ সালের শেষের দিকে আমার মন-মানসিকতা আরো ব্যাপকভাবে পাল্টে----যায়। তখন আমার ভেতর নানা প্রশ্ন দানা বাধতে থাকে। ভাবতে থাকি- আমরা মানুষ। মায়ের পেটে আমাদের জন্ম। এরপর দুনিয়াদারী শেষে একদিন স্বাভাবিক ভাবেই মৃত্যুকে বরণ করে কবরে গমন।
এর মাঝখানের জীবনটা তাহলে কেন? আমাদের মৃত্যু কি মৃত্যতেই শেষ? মাঝখানের এই হায়াতী জিন্দেগীতে আমাদের করণীয় কি? মানুষ হয়েও আমরা কেন অমানুষের মতো [পশু সুলভ] আচরণ [কাজ-কর্ম ] করে ফেলি?- ইত্যাদি। প্রশ্নের উত্তর খুজে পেতে আমি এসব বিষয় সংশ্লিষ্ট বই-পুস্তক ও নানাবিধ কিতাবাদী সংগ্রহ করে পড়াশুনা শুরু করি। লেখালেখি প্রায় বন্ধ করে দেই। কারণ, বিষয় ভিত্তিক পুজি{মাল-মসলা] না থাকলে সে বিষয়ে লেখা একেবারে অসম্ভব।
অবশেষে, মহান আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে ১৯৯৯ সালে আমি উক্ত বিষয় ভিত্তিক একটি প্রবন্ধ লিখতে সক্ষম হই।
শিরোনাম-ইসলামিক মেডিটেশন। এই লেখাটিতে আমি বুঝাবার চেষ্টা করেছি- যেহেতু, আশরাফুল মাখলুকাত [সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব] মানুষ মহান আল্লাহপাকের সৃষ্টি । সুতরাং মহান আল্লাহপাকই সবচেয়ে ভালো জানেন, মানুষ কিভাবে চললে প্রকৃত সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারবে। একাধারে ভালো ও মন্দো নামের দুটি প্রকৃতির ধারক -বাহক হয়েও মানুষ নিজের মন ও দেহকে কিভাবে ইসলামী পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে প্রকৃত সত্যকে নিজের জীবনে উম্মোচিত করে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। এ বিষয়ে আগ্রহী ভাই-বোনদের কল্যাণে বর্তমানে আমি একটি গবেষণামূলক বই প্রকাশ করার কাজ হাতে নিযেছি।
পান্ডুলিপি প্রায় শেষ পর্যায়ে। পাশাপাশি পুন: সম্পাদনার কাজ চলছে। নাম- রুহানী মেথড।
সফলতার জন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি। মহান আল্লাহপাক যেন আমার মতো একজন সাধারণ মানুষকে মানুষের কল্যাণে ভুমিকা রাখতে তৈফিক দান করেন ।
সমস্ত গুনাহ মাফ করে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে মুক্তি দান করেন। -আমীন।
সামহোয়্যার ইন ব্লগ পবিবারের কর্তৃপক্ষ, সকল সদস্য ও ব্লগার ভাই-বোনদের আন্তরিক ভাবে-ধন্যবাদ। ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়। মহান আল্লাহপাকের কাছে অশেষ -শুকরিয়া।
-হাকীম আল-মীযান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।