আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধেয়ে আসছে প্রকৃতির প্রতিশোধের ভয়ংকর ড্রাগন! জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে কোথাও বাঁচার পথ নেই!!

যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
নাইন-এইট-সেভেন-সিক্স-ফাইভ-ফোর-থ্রী-টু-ওয়ান-জিরো......খুট করে একটা স্যুইচ টেপার শব্দ হলো। সাথে সাথে প্রচন্ড বিস্ফোরণ! মাটির তলাকার এয়ারটাইট ল্যাবটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল জনমানুষের পৃথিবী থেকে! ঘটনাটি ১৯৭৫ সালের। একটা এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল। বিশেষ ব্যবস্থায় কয়েকজন মানুষ ওই মাটির তলাকার ঘরে জীবন আর মৃত্যুর মাঝামাঝি কোমায় থেকে গেছিল ৫০ বছর। পঞ্চাশ বছর পর ২০২৬ সালে তারা সেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।

দলনেতা প্রথমে মাটির উপরে উঠে এসেই হোঁচট খায়, একি! পাহাড়-পর্বত, বৃক্ষ লতাপাতাহীন বিস্তির্ণ পোড়ামাটির এক বিশ্ব! কোথাও কোন প্রাণের চিহ্ন নেই! একে একে উঠে আসে বাকি সবাই। না, প্রাণের চিহ্ন নয় শুধু জলজ্যান্ত প্রাণও আছে! ওদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছু মানুষ ভয়ে দূরে পালায়। এই মানুষগুলো মানুষই তবে দেখতে ভীন গ্রহের এলিয়েনের মত! ওরা যতই কাছে ডাকে কেউ আসেনা! পারমানবিক তেজষ্ক্রিয়ায় এই মানুষদের এমন অবস্থা। ১৯৭৫ এর কোন এক সময় আকাশবাণী কোলকাতা বেতার থেকে আসিমভের রচনা অনুবাদ করে এই নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল। সেই ল্যাবের লোকগুলি দেখতে চাইছিল, বিশ্ব অতি মাত্রায় উষ্ণ হয়ে উঠলে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হলে, লাগাতার আণবিক বোমা বিস্ফোরিত হলে, সারা পৃথিবী কার্বনে ছেয়ে গেলে তখনকার মানুষের কি দশা হবে, কি ভাবে তারা বাঁচবে? ২০২৬ সালে ল্যাবের সেই বিজ্ঞানীরা যে মানুষদের দেখেছিলেন সেই একই রকম মানুষ আমরা দেখি “টোটাল রিকল” মুভিতে।

সম্পূর্ণ ব্যাপারটি কল্পনা হলেও সেই কল্পনা এতটাই বাস্তব যে আমরা ইতিমধ্যেই সেই নির্মম বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছি। মাত্র বিশ-পঁচিশ বছর আগেও রংপুর-দিনাজপুরে ক্ষেতের পাশে চার-পাঁচ ফুট মাটি খুঁড়লেই পানি উঠে আসত। বাঁশকল দিয়ে সেই পানি তুলে যশোয়া, কলম, কাটারিভোগ ধান উৎপাদন হতো। রংপুরের বালিপূর্ণ জমিতেও চার-পাঁচ ফুট মাটি খুঁড়ে পানি তুলে তামাকের ক্ষেতে সেচ দেওয়া হতো। এখন হয়না।

ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ওখানেও নেমে গেছে প্রায় সত্তর-আশি ফুট। ঢাকায় তো পাঁচ’শ হাজার ফুট খুঁড়েও শ্যালোর সাধ্য নেই যে পানি তোলে! এটা কেবল ডিপ টিউবঅয়েল দিয়ে পানি তোলার কারণে ঘটেনি। বছরের পর বছর বৃষ্টিপাত কমার কারণে এই দশা। মাটির তলায় পানি কমে যাওয়ায় যে সকল গাছ অনেক গভীরে শেকড় দিয়ে রস টানতে পারেনা তারা মারা যাচ্ছে। লতাগুল্ম টিকে আছে কেবল নদী বা বিলের ধারে ধারে ।

পানির অভাবে দেশী ফুল-ফলের গাছ টিকতে পারছেনা, টিকে থাকছে একাশিয়া টাইপ গাছগুলো। নদী-বিল-হাওড়-জলাভূমির পানি কমে যাওয়ায় মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কৃত্তিম ভাবে উর্বরতা বাড়ানোর জন্য ব্যাপকহারে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হচ্ছে। সেই রাসায়নিক সার আর কীটনাশকের মরণ ছোবলে জলজপ্রাণী, জলজ উদ্ভিদ নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন আর আমাদের দেশে কোথাও বিনা সার-কীটনাশকে ফসল উৎপাদন হচ্ছেনা।

উন্নত বিশ্বে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের ফলে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার ফলে জমাট বরফ গলে সমুদ্রে পড়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। যে পরিমান পানি নদীতে থাকার কথা তা না থাকায় আর সমুদ্র ফুলে ওঠায় সেই নোনা পানি নদী বেয়ে উঠে এসে মিঠা পানির উৎস ধ্বংস করে দিচ্ছে। নোনা পানি আসার ফলে মিঠা পানির সকল জলজ উদ্ভিদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নোনা পলি জমে নদী তার স্বাভাবিক নব্যতা হারাচ্ছে। কিছুদিন আগের বহমান নদী জমাট হয়ে শুকনো খটখটে বেলেভূমি হয়ে যাচ্ছে, তাতে না হচ্ছে ফসল, না হচ্ছে কোন গাছগাছালি।

কিছুদিন আগেও মনে করা হতো এসব প্রাকৃতিক নিয়মের কারণেই হচ্ছে। আবার হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে। এখন আর তেম মনে করা যাচ্ছেনা। এখন আমরা জেনে গেছি কোথাকার কোন সভ্যতার বাগাড়ম্বরে, উন্নয়নের স্বেচ্ছাচারিতায় এসব ঘটছে। গত বিশ-পঁচিশ বছর ধরে এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে আসছিলেন।

উন্নত বিশ্ব গা-করেনি। কারণ তারা বাজার অর্থনীতির মূল সূত্রে একচেটিয়া মুনাফা তোলার জন্য বর্তমানকে নির্মম ভাবে হত্যা করতে পারে, করেছেও। ইয়োরোপ-আমেরিকায় প্রতিবছর যে পরিমান কার্বন নিঃসরণ ঘটানো হয় তার ০.৫ ভাগও আমাদের মত অনুন্নত দেশ ঘটাতে পারেনা। আমাদের এখানে এখনো আমরা প্রথাগত প্রাচীন জৈব পদ্ধতি আস্থা রাখতে পারি। তাদের শেখানো প্রযুক্তি আমদানী করেও কিছু পরিমানে সনাতন দেশী পদ্ধতি প্রয়োগ করে চলেছি।

সুতরাং আজ আমরা যে ভয়াবহ অস্তিত্বের সংকটে পড়েছি তার দায় আমাদের নয়, উন্নত বিশ্বের। তারা কি এটা অস্বীকার করছে? না, তা করছেনা, বরং এ নিয়ে তারা আমাদের মত দেশগুলোকে এক ধরণের দয়া দাক্ষিণ্য দেখাতে চাইছে। আমরাও সেই দয়া আর অনুকম্পার মূল্যমান বের করে কাঙ্গালের মত হাত পেতে অনুদানের লোভে প্রটেকশন মেজারের কথা ভুলে বসে আছি। কি কি ভাবে গ্লোবাল ওয়ামিং ডিজাস্টার ঘটাচেছ? তাৎক্ষণিক ডিজাস্টার ঘটছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে, ভয়ংকর ঘুর্ণিঝড়, হারিকেন, সাইক্লোন, সুনামি, হঠাৎ ভূমিধ্বস, কোথাও বা ভূপৃষ্ঠ অস্বাভাবিক আচরণ করছে। তার পরও এই অতিরিক্ত উষ্ণতা জীববৈচিত্রেও মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।

উপকুলীয় জনবসতির জীবন ধারা বদলে দিচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে সমুদ্রের পানি এসে বিলে জমে যে ভয়বহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে তার জ্বলন্ত উদাহরণ ভবদহ বিলের জলাবদ্ধতা। ওই অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে এক ছটাক ফসলও ফলছে না। শুকনো পথ ঘাট সারা বছর পানির তলায় চলে গেছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, নোয়াখালী, হাতিয়া, সন্দীপ সহ উপকূলের বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে মানুষের জীবন বৈচিত্র আমূল বদলে গেছে।

একের পর এক সিডোর, আইলা, হারিকেনের আঘাতে উপকূলের মানুষের বেঁচে থাকার স্বাভাবিকতাই হুমকির মুখে। প্রকৃতিতে আগে কিভাবে সমন্বয় হতোঃ বিশ্বকে উষ্ণ করার প্রাকৃতিক মাধ্যম সূর্য। সূর্য তার স্বাভাবিক তাপ বিকিরণে কখনো বিশ্বকে উষ্ণ করে কখনো শীতল করে। এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যত দিন বাধাগ্রস্থ হয়নি ততদিন সূর্য আপন সাইকেলে কাজটি করে গেছে, এবং তা জীবের জন্য কখনোই ক্ষতিকর হয়নি। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট তাপ বিকিরণ সূর্যের সেই সাইকেলকেও নষ্ট করে দিয়েছে।

নথ বা সাউথ পোলের জমাট বরফ যতটুকু শীতল থাকলে গলে পড়বে না ততটুকু শীতলই থাকত। এখন আর থাকছে না। সূর্যের স্বাভাবিক তাপের সাথে যোগ হয়েছে মানুষের বানানো উত্তাপ। ফলে শীতল মেরুও গলে পড়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অ্যানথ্রোপজনিক ফ্যাক্টরঃ ক্লাইমেট চেঞ্জ বিশ্বের এক বিশাল এলাকাকে ডিফ্রস্ট করে দিচ্ছে তার ফলে ভীতিকর রকম পরিবর্তন ঘটছে বিশ্বের পানি এবং রেডিয়েশনে।

ভূমি দুষিতকরণ, আনআরবান ইন্ডস্ট্রিয়ালাইজেশন এবং জীবাষ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ ক্রমাগত বিশ্বকে গ্যাসচেম্বার করে দিচ্ছে। আরও দেখুন এখানে এই ভয়ংকর ধ্বংস যজ্ঞের বিবরণ দিতে গেলে শেষ হবে না। আমরা যে বিপদ সম্পর্কে খুব কাছে থেকে অনুভব করছি তার বাইরেও আরো ভয়ানক বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। কি ভাবে গ্রীনহাউস ইফেক্ট হচ্ছে, কি ভাবে ওজনস্তর ফুটো হয়ে সূর্যের অতি বেগুণিরষ্মি আমাদের ক্ষতি করছে, চিকিৎসকরা কি কি ধরণের নতুন নতুন রোগবালাই আর উপসর্গের বিবরণ দিচ্ছেন, কার্বন নিঃসরণের ফলে স্বল্প মেয়াদি কি কি ক্ষতি আর দীর্ঘ মেয়াদি কি কি ক্ষতি তা নিয়ে এখন আর কারো সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বিপদে আমাদের প্রাকৃতিক ভাবে কি করণীয় আর রাষ্ট্রীয় ভাবেই বা কি করার আছে? উষ্ণায়নের আগে এবং পরের রেখ চিত্র।

বিকল্প সম্ভবনাঃ কথা উঠেছে আর কিছুদিন পরে বিশ্ব থেকে জীবাষ্ম জ্বালানী এমনিতেই উঠে যাবে, অর্থাৎ নিঃশেষ হয়ে যাবে, তখন নাকি আর কার্বন নিঃসরণের ব্যাপারই থাকবেনা! এই বিষয়টি মাথায় রেখেই বলা যায়- বিশ্ব এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সেখান থেকে সে কিছুতেই প্রাকৃতিক সেই আদিম জমানায় ফিরতে পারে কি-না? এর সহজ উত্তর হচ্ছে, না, পারেনা। লুটেরা পুঁজির ধর্ম, বাজার অর্থনীতির চরিত্র, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের মুনাফা দখলিকরণ, একচেটিয়া পুঁজির শোষণ, বিশ্ব মোগড়লগিরির উদগ্র বাসনা, বিজ্ঞানের নিত্য নতুন এক্সপেরিমেন্ট, ভয়ংকর সব মারনাস্ত্র বানানো, বিক্রি করা, ব্যবহার করা, আর সেই সব ব্যাহার করে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার কারণেই উন্নত বিশ্ব আর আগের অবস্থানে ফিরতে পারেনা। অর্থাৎ চাইলেই আমেরিকা-ইউরোপ আর প্রাক শিল্প বিপ্লব যুগে ফিরতে পারেনা। তাহলে তারা কি করবে? হ্যাঁ, এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে। তারা জীবাষ্ম জ্বালানী বাদ দিয়ে ব্যাটারি, সোলার, নিউক্লিয়ার পাওয়ার এ্যাপ্লাই করবে, প্রয়োজনে কার্বনের নিঃসরণ ঘটলেও তা যেন তাদের ক্ষতি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও তারা নেবে।

ইতিমধ্যে তা নিচ্ছেও। তারা যদি গ্লোবাল ওয়ামিং কে এড়িয়ে বাঁচার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে পারে(করবেও) তাহলে তো আর কার্বনের নিঃসরণ নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা থাকার কথা নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের কি হবে? আমাদের এই ডিজাস্টার মোকাবেলা করে বাঁচার টেকনোলজি কোথায়? আমরা কি কি ব্যবস্থা নিয়েছি বা নিচ্ছি? বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ১০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে ফেলেছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকার এ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার মূলে খাদ্য নিরাপত্তা। অর্থাৎ কেবল মাত্র খাদ্য নিরাপত্তাই আমাদের সরকারের ধারণায় ক্লাইমেট চেঞ্জ এর বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিশেধক! কি আশ্চর্য! দেখুন আমাদের সরকারের অ্যাকশন প্ল্যান! আমরা দেখলাম উন্নত বিশ্ব বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে নিরন্তর গবেষণা করে এমন কিছু পদ্ধতি এবং পথ বের করছে যা দিয়ে তারা আগামীতে এই ডিজাস্টার মোকাবেলা করতে সক্ষম।

হয়ত করবেও। এই ক্ষেত্রে আমাদের কোন রকম প্রস্তুতিই নেই। আমাদের ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই ভূখন্ডের আনুমানিক ৬৭ শতাংশ চাষ যোগ্য। এই চাষযোগ্য জমির পরিমান গত ৪০ বছরে মারাত্মক ভাবে কমছে। ফসলি জমিতে বসতবাড়ি বানিয়ে বিশাল জনসংখ্যার থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে।

প্রতিবছর একটু একটু করে কমে যাচ্ছে ফসলী জমির পরিমান। এর পর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে থাকলে সেই অঞ্চলের মানুষকে জায়গা দেওয়ার জন্য আরো ফসলী জমি কমে যাবে। তখন সেই বিশাল সংখ্যক মানুষকে অল্প পরিমানের জমির ফসলে খাদ্য নিরাপত্তা কে দেবে? আমাদের বিস্তির্ণ উপকুলের ফসল শেষ তো হবেই সেই অঞ্চলের মানুষ থাকবে কোথায়? নদীগুলোর যে ধারণক্ষমতা তাতে আর এক থেকে দুই ফুট পানি বাড়লে এই ঢাকাও সেই “ওয়াটার ওয়ার্ল্ড” হয়ে যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার দেশওয়ারি পরিসংখ্যান। এইমুহূর্তে আমাদের করণীয় কি? এখন আমাদের ব্রত হওয়া উচিৎ টাকা নয়, “তোমাদের এই মরণ খেলা বন্ধ কর” এই শ্লোগান তোলা।

আমরা আমাদের প্রাকৃতিক বৈচিত্র নিজেরা যে ভাবে যতটুকু ধ্বংস করছি বা করেছি তার রিকভার হবে না হয়ত, কিন্তু উন্নত বিশ্বের ওয়ামিংয়ের কুফল আমরা কেন ঘাড় পেতে মেনে নেব? এই একটিই প্রশ্ন আমাদের বাঁচা-মরার মাঝে স্থির হয়ে আছে। আমরা কোনটি করব? বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করে বিশ্বজনমত প্রভাবিত করব, নাকি আমাদের যেটুকু শিল্পায়ন তা বন্ধ করে সেই পঞ্চশের দশকে ফিরে যাব? আমরা কি এইরকম ভবিষ্যৎ কল্পনা করি? আমরা আমার জমিনে পারমাবিক রিঅ্যাক্টর বসাইনি। আমাদের হাজার হাজার শিল্প কারখানা মাত্রতিরিক্ত বায়ূদুষণ করছেনা। আমাদের কার্বন নিঃসরণের পরিমান আমেরিকার একটি স্টেটের চেয়েও অনেক কম। আমাদের কোন পারমানবিক বর্জ্য নেই।

আমাদের লাখ লাখ গাড়ি অনবরত কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়িয়ে দিচ্ছেনা। আমাদের কোন জাহাজ নিউট্রন বর্জ্য ছড়াচ্ছেনা। আমাদের উষ্ণকরণে হিমালয় থেকে জমাট বরফ গলে যাচ্ছেনা। আমাদের প্রকৃতি যেটুকু ক্ষতি করে চলেছে তা তাদেরই গছিয়ে দেওয়া তথাকথিত শিল্পায়নের নামে, টেকনোলজির নামে বাজারিকরণ। আর তাই যদি হয় তাহলে আমরা কেন শুধুমাত্র ৭০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গ্যাসচেম্বারে রেখে যাব?
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।