আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আটকে পড়া সবার ভাগ্য যদি সাদিকের মতো হতো!

‘আমার মনে হয় আমি আমার জীবনটা নতুন করে ফিরে পেয়েছি। আমার মাথা থেকে বোঝা সরে গেছে। ’ বৃদ্ধ বাবা যখন কেঁপে কেঁপে এ কথাগুলো বলছিলেন, তখন তাঁর ২৭ বছরের ছেলে সাদিককে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছিল। সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার পাঁচ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে সাদিককে। সাদিক ভাগ্যবান।

কারণ তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। তবে সবার ভাগ্য সাদিকের মতো হয়নি।
সাদিকের মামাতো ভাই ও স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকর্মী মাজেদুল আলম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে উদ্ধার করা হয় সাদিককে। সাদিক যেখানে আটকে ছিলেন তাঁর আশপাশে আরও চার থেকে পাঁচজন জীবিত অবস্থায় আটকে আছেন। তাঁদের বেলা তিনটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি।

স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকর্মী দুলাল ও মাজেদুল আলম জানান, জীবিত আছেন এমন অনেকের কাকুতি শোনা যায়। শব্দও শোনা যায়। কিন্তু ঘন অন্ধকারে টর্চের আলো দিয়েও তাঁদের অবস্থান বোঝা যায় না। ফলে উদ্ধার করা যাচ্ছে না অনেককেই। তাঁরা জানান, পাঁচ দিনে অনেক মরদেহ বিকৃত হয়ে গেছে।

ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মরদেহগুলো থেকে গন্ধ ছড়ানো শুরু হয়েছে। উদ্ধারকাজ করতে গিয়ে অনেক উদ্ধারকর্মীই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সাদিকের মামাতো ভাই মাজেদুল আলম বলেন, রানা প্লাজার তিন তলায় নিউ ওয়েভ বটম নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে সাদিক কাজ করতেন। উদ্ধারের পর সাদিক ভাই জানিয়েছেন, ভবনটি যখন ধসে পড়ে ওই সময় তিনি পিলারের পাশে আশ্রয় নেন। সেখানে কয়েকটি পানির বোতল রাখা ছিল।

অল্প অল্প করে সেই পানি পান করে সাদিক নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সঙ্গে থাকা মুঠোফোনটি বন্ধ করে রেখেছিলেন সাদিক। কারণ, নেটওয়ার্ক ছিল না। তবে একটু পরপর সময় দেখতেন তিনি। ভাই মাজেদুল আলম জানান, পাঁচ দিন ধ্বংসস্তূপে আটকে থেকেও সাদিক একেবারে সুস্থ।

তবে আটকে পড়া সবার ভাগ্য সাদিকের মতো নয়। যদি হতো তাহলে ভালো হতো।
পাঁচ দিন ধরে পাগলের মতো ছেলে সাদিককে খুঁজেছেন বৃদ্ধ বাবা। কখনো অধরচন্দ্র স্কুল মাঠে, কখনো এনাম মেডিকেলে আবার কখনো রানা প্লাজার সামনে ছোটাছুটি করেছেন তিনি। খোঁজ নিয়েছেন সাভারের সব বেসরকারি ক্লিনিকে।

যখন ছেলেকে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন, তখনই ফিরে পেলেন তাঁকে। সাদিককে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে। তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।