সুপ্রিয় টিউন পাঠক, কেমন আছেন সবাই আজকে আমি যে টিউনটি করবো সেটি আমার ২য় টিউন। আজকে আমার টিউন টি তে আমি ল্যাপটপ সম্পর্কে কিছু জানাবো। যারা নতুন বা পুরাতন ল্যাপটপ কেনার চিন্তা করছেন তাদের জন্য আমার এই টিউনটি অনেক সহায়তা করবে। তো মনোযোগ সহকারে দেখে নিন।
বাজারে অনেক ধরনেরই ল্যাপটপ রয়েছে।
বিভিন্নও ব্র্যান্ড, আকার, কাজ করার ক্ষমতাভেদে ল্যাপটপ কেনা বেচা হয়। বেশির ভাগ ক্রেতারাই ভালো ল্যাপটপ যাছাই করে কিনতে পারেন না। যার ফলে তারা অসুবিধায় পড়েন।
ডেক্সটপ বনাম ল্যাপটপঃ
কম্পিউটার কেনার আগে দেখতে হবে কম্পিউটার কি কাজে ব্যবহার করবেন। ইন্টারনেট ব্রাওজিং, মুভি দেখা গান শোনা এসব কাজে সাধারণ কম্পিউটার যথেষ্ট।
তবে গান ভালভাবে শোনার জন্য ভালো মানের সাউন্ড সিস্টেমের প্রয়োজন পড়বে। নানা ধরনের গান মুভি ভিডিও ইত্যাদি জমিয়ে রাখার শখ হলে আপনার প্রয়োজন বেশি ধারণক্ষমতা আছে এমন হার্ডডিস্ক। আর আপনি যদি গেমার হন তাহলে আপনাকে কিনতে হবে হাই কনফিগারেশনের পিসি। এভাবেই প্রয়োজন মত বেছে নিতে হবে কোন কম্পিউটারটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এতো গেলো ডেক্সটপ পিসি কেনার কথা।
এবার আসা যাক ল্যাপটপ পিসি কেনার কথায়। বেশিরভাগ ইউজারই এখন ল্যাপটপ ব্যবহার করতে চান। কিন্তু ল্যাপটপ কিনবেন না ডেক্সটপ কিনবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। কিভাবে ভুজবেন আপনার ল্যাপটপ কেনা উচিত কিনা?
১। আপনি কি ভ্রমনপ্রিয় বা নানাধরনের কাজে বেশিরভাগ সময় বাইরে কাঠান।
?
২। ঘরে বেশিক্ষণ কম্পিউটার এ কাজ করার সময় পান না?
৩। ঘরে বা অফিসের ডেস্কে জায়গা কম?
৪। ইচ্ছেমত ঘরের যেকোন জায়গায় বসে কম্পিউটিং করতে চান?
৫। এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা চরম?
এসবের উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আপনার জন্য ল্যাপটপ পিসিই প্রয়োজন।
ল্যাপটপের সুবিধা অসুবিধাঃ
সব কিছুরই ভালো ও মন্দ দুটি দিকই রয়েছে। প্রথমে অসুবিধার কথাই বলা যাক।
স্থায়িত্বঃ ল্যাপটপ বহনযোগ্য বলে বেশি নাড়াছড়া করা হয় এতে এর কোন যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে গেলে তা তা পাওয়া যায়না। আর গেলে ও তা বেশ বায়বহুল।
কার্যক্ষমতাঃ ল্যাপটপ পিসির তুলনায় ডেক্সটপ পিসি বেশি কার্যকরী হয়ে থাকে।
ডেক্সটপ পিসির সমান কার্যকরী ল্যাপটপ পিসি বেশ বায়বহুল।
কম্পাবিলিটিঃ মডেল, নির্মাতা, কোম্পানিভেদে ল্যাপটপের যন্ত্রাংশগুলোর মাঝে বেশ তারতম্য রয়েছে। যেগুলোর একটি আরেকটিকে সাপোর্ট করে না। তাই কোন যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে সেই যন্ত্রাংশ খুজে পাওয়া বেশ কষ্টকর ও বায়বহুল।
আপগ্রেডঃ ডেক্সটপের যন্ত্রাংশ যখন- তখন আপগ্রেড করা যায়।
কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে তা ভীষণ ঝামেলার ব্যাপার। প্রসেসর, মাদারবোর্ড, ডিসপ্লে, গ্রাফিক্স কার্ড আপগ্রেড করা যায় না। তবে রাম, হার্ডডিস্ক ও অপটিক্যাল ড্রাইভ ইত্যাদি আপগ্রেড করা যায়।
ল্যাপটপ বনাম নোটবুকঃ
ল্যাপটপ কিনবেন না নোটবুক কিনবেন? ল্যাপটপ ও নোটবুক এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। অনেকে মনে করতে পারেন দুটোই তো একই জিনিস।
আবার অনেকে মনে করতে পারেন নোট আকারের ল্যাপটপগুলোকেই নোটবুক বলে। নোটবুক ল্যাপটপের ছোট ভার্সন। এদের মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। ল্যাপটপ ও নোটবুক এর পার্থক্য ভালো ভাবে বোঝার জন্য পাঠকদের জন্য তা নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
আকারঃ ল্যাপটপের আকার বড় বা মাঝারী হয়। অপরদিকে নোটবুক এর আকার ছোট হয়।
প্রসেসরঃ ল্যাপটপের প্রসেসর ইন্টেল সেলেরন থেকে কোর আই সেভেন হয় অপরদিকে নোটবুক এর প্রসেসর ইন্টেল অ্যাটম, সেলেরন হয়।
হার্ডডিস্কঃ ল্যাপটপের প্রসেসর বেশি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৫৪০০-৭২০০ আরপিএম গতির হার্ডডিস্ক অপরদিকে নোটবুকের কম ক্ষমতার সলিড স্ট্রিট হার্ডডিস্ক।
ডিসপ্লেঃ ল্যাপটপের ডিসপ্লে ১৩-২০ ইঞ্ছি ও নোটবুকের ডিসপ্লে ১৩ ইঞ্ছি এর কম হয়।
গ্রাফিক্স কার্ডঃ এনভিডিয়া বা ইন্টেল চিপ সেটের কার্ড থাকে ল্যাপটপে। আর নোটবুকে সাধারণ উপযোগী নুন্নতম গ্রাফিক্স কার্ড।
ডিস্ক ড্রাইভঃ ডিভিডি রম থাকে আর নোটবুকে থাকে না।
বিদ্যুৎ শক্তিঃ ল্যাপটপে বিদ্যুৎ শক্তি বেশি খরচ হয় আর নোটবুকে খুব কম হয়।
ব্যাটারি লাইফঃ ল্যাপটপে ৩-৮ ঘণ্টা আর নোটবুকে ৩-১২ ঘণ্টা।
ল্যাপটপের প্রয়োজনীয় কিছু বিষয়ঃ
প্রসেসরঃ প্রসেসর হচ্ছে পিসির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশ। বাজারে বিদ্যমান ল্যাপটপগুলোর দামের তারতম্য হয় প্রসেসরের উপর ভিত্তি করে।
বেশ কিছু প্রসেসর রয়েছে, যা ল্যাপটপের মাদারবোর্ডের একেবারে সংযুক্ত করা থাকে। ল্যাপটপ প্রসেসর এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, কম তাপ উৎপাদন করে, আকারে ছোট এবং কার্যক্ষমতা ডেক্সটপ পিসির তুলনায় কম। ল্যাপটপে ব্যবহার করা হয় এমন প্রসেসর হচ্ছে ইন্টেলের অ্যাটম, সেলেরন, পেন্টিয়াম, ডুয়োল কোর ইত্যাদি সিরিজের প্রসেসর। ল্যাপটপের প্রসেসর নির্বাচনের সময় ক্লক স্পীড, ক্রাশ মেমরি, বাস স্পীড, কোরের সংখ্যা, গ্রেডের সংখ্যা ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
হার্ডডিস্কঃ ল্যাপটপে সল্প পরিসরে বসানোর জন্য ২.৫ ইঞ্ছি ফর্ম ফ্যাক্টরের হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়।
এগুলো আকারে ছোট ও হালকা এবং কম গতিসম্পন্ন। তবে বর্তমানে নতুন ল্যাপটপগুলোতে হার্ডডিস্কের বদলে সলিড স্ট্রিট ড্রাইভ তথা এস এস ডি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো হার্ডডিস্ক থেকে অনেক দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। আকারেও অনেক ছোট। ল্যাপটপ কেনার সময় নুন্নতম ৩২০ গিগাবাইট ও নোটবুক কেনার সময় নুন্নতম ১৫০ গিগাবাইট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হার্ডডিস্ক হওয়া প্রয়োজন।
রামঃ
ডেক্সটপে আমরা যে রাম ব্যবহার করে থাকি, ল্যাপটপের রাম গুলো এর প্রায় অর্ধেক। ছোট আকারের এই রামগুলোকে এখন ডিডিয়ার২ ও ডিডিয়ার৩ রামের প্রচলন বেশি। ডিডিয়ার ২ রাম কেনার আগে দেখে নিন এটা সর্বনিম্ন ৬৬৭ মেগা ও ডিডিয়ার৩ রাম সর্বনিম্ন ১০৬৬ মেগা কিনা?
স্পীকারঃ
ল্যাপটপ কেনার আগে এর সাউন্ড কীরকম তা পরীক্ষা করে নিন।
এর সাথে এর কিবোর্ড টাও চেক করে নিন।
গেমিং ল্যাপটপঃ
গেমিং ল্যাপটপের যে সুবিধাগুলো প্রয়োজনঃ কোর টু থেকে কোর সেভেন মানের প্রসেসর, এনভিডিয়া বা এটিআই চিপসেটের ৫১২ মেগাবাইট ১ গিগাবাইট ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স মেমরি, ১৬৬৬-১৩৩৩ বাস স্পীড সম্পন্ন রাম এবং ১৫-১৮ ইঞ্ছি ডিসপ্লে যা উচ্চ রেজুলেশন কাজ করে।
উপরিউক্ত টিপস কাজে লাগালে আপনি অবশ্যই পছন্দের মত ল্যাপটপ/ নোটবুক/ডেক্সটপ পিসি ক্রয় করতে পারবেন।
আমার এই টিউনে কোন ভুল/বুঝতে সমস্যা/ ও কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
(খোদা হাফেজ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।