আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকী

মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।

১৬ ডিসেম্বর বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী জন্ম ১৮৬৩ সালের ১০ মে। ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি ১৯১৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মারা যান।

তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, চিত্রকর, প্রকাশক, শখের জ্যোতির্বিদ, বেহালাবাদক ও সুরকার। সন্দেশ পত্রিকা তিনিই শুরু করেন যা পরে তাঁর পুত্র সুকুমার রায় ও পৌত্র সত্যজিৎ রায় সম্পাদনা করেন। গুপি-গাইন, বাঘা-বাইন, টুনটুনির বই ইত্যাদি তাঁরই অমর সৃষ্টি। উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী বাবা কালিনাথ রায় ছিলেন সুদর্শন ও আরবি, ফারসি ও সংস্কৃতে সুপণ্ডিত। তাঁর ডাকনাম ছিল শ্যামসুন্দর মুন্সী।

উপেন্দ্রকিশোর শ্যামসুন্দরের আটটি সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তাঁর পৈত্রিক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়। পাঁচ বছরেরও কম বয়সে তাঁর পিতার অপুত্রক আত্মীয় জমিদার হরিকিশোর রায়চৌধুরী তাঁকে দত্তক নেন ও তিনি নতুন নাম দেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। ছোটোবেলা থেকেই উপেন্দ্রকিশোরের পড়াশোনার থেকে বেশি অনুরাগ ছিল বাঁশী, বেহালা ও সঙ্গীতের প্রতি। ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে উপেন্দ্রকিশোর প্রবেশিকা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হন।

তারপর কলকাতায় এসে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সী কলেজে। ২১ বছর বয়সে বিএ পাস করে ছবি আঁকা শিখতে শুরু করেন তিনি। এই সময় তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য হওয়ায় তাঁর অনেক আত্মীয়ের সঙ্গে মনোমালিন্য ঘটে। ছাত্র থাকাকালীনই তিনি ছোটোদের জন্যে লিখতে আরম্ভ করেন। সেই সময়কার সখা, সাথী, মুকুল ও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত বালক নামে মাসিক পত্রিকাগুলিতে তাঁর লেখা প্রকাশ হতে সুরু হয়।

প্রথমদিকের (যেমন সখা, ১৮৮৩) প্রকাশিত লেখাগুলি ছিল জীববিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ। তার পরে চিত্র অলঙ্করণযুক্ত গল্প প্রকাশিত হতে আরম্ভ হয়। ১৮৮৬ সালে ২৩ বছরের উপেন্দ্রকিশোরের সঙ্গে বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের কন্যা বিধুমুখীকে বিবাহ করেন। কলকাতার কর্নওয়ালিস স্ট্রীটের ব্রাহ্ম সমাজের মন্দিরের বিপরীতে লাহাদের বাড়ির দোতলায় কয়েকটি ঘর ভাড়া নিয়ে উপেন্দ্রকিশোরেরর সংসার জীবন শুরু হয়। উপেন্দ্রকিশোরের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে।

ছেলেরা হলেন সুকুমার, সুবিনয় ও সুকোমল, এবং মেয়েরা হলেন সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা। যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সিটি বুক সোসাইটি থেকে তাঁর প্রথম বই ‘ছেলেদের রামায়ণ’ প্রকাশিত হয়। এই বইটি সমাজে অতি আদরের সঙ্গে সমাদৃত হলেও মুদ্রণ সম্বন্ধে অতৃপ্ত উপেন্দ্রকিশোর ১৮৮৫ সালে বিদেশ থেকে তখনকার দিনের আধুনিকতম মুদ্রণযন্ত্রাংশাদি নিজের খরচায় আমদানি করেন। ৭ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে নতুন ভাড়াবাড়ি নিয়ে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স নামে নতুন ছাপাখানা খোলেন। এখানের একটি কামরায় তিনি নিজের আঁকার স্টুডিও খোলেন।

সেখানে হাফটোন ব্লক প্রিন্টিং নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। ১৯১১ সালে তিনি বড় ছেলে সুকুমারকে বিলাতে পাঠান ফোটোগ্রাফী ও মুদ্রণ সম্বন্ধে উচ্চশিক্ষা লাভ করার জন্যে। ঢাকা নিউজ 24 ডট কম সম্পাদনায় ঃ শেখ রফিক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।