জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
প্রস্রাব ধরিলেই আমরা এই সাইনবোর্ড খুঁজতে থাকি। আর আমার এক বন্ধুর এই সাইনবোর্ড দেখলেই নাকি প্রস্রাব ধরে যায়। তখন আর বেগ সামলাইয়া রাখতে পারে না। আমাদের অভ্যাসটাই এমন।
যত জায়গায় এই রকম সাইনবোর্ড আছে, সেইখানেই বিশেষ যত্নসহকারে পাবলিক প্রাকৃতিক কর্মটি সেরে থাকে।
দুর্গন্ধে পথচারী ও বসবাসকারী লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে । কিন্তু পাবলিক নির্বিকার। তারা তাদের মহান কর্মটি বার বার করতেই থাকে।
শুনেছি যেখানে সেখানে প্রাকৃতিক কর্ম করলে জরিমানার বিধান আছে আইনে। কিন্তু কে মানে আইন ? এই দেশে যারা আইন মানে তারা গর্দভ বলে পরিচিতি লাভ করে।
কে আর সেধে গর্দভ হিসেবে পরিচিত হতে চায় ?
আমার ঘরের পেছনে একটা জায়গা প্রাকৃতিক কর্মের জন্য পাবলিক বিশেষভাবে পছন্দ করে থাকে। আমি কোন সাইনবোর্ড লিখি নাই তবুও তারা কিভাবে এই জায়গা পছন্দ করল সেটা একটা রহস্য। যাই হোক, দুর্গন্ধে টিকতে না পেরে কয়েক দিন নিষেধ করলাম। কিন্তু কাজ হল না। বরং তাদের উৎসাহ আরও বেড়ে গেল।
বাড়ির লোকজন আমাদের সাইনবোর্ড লাগানোর পরামর্শ দিল - এখানে প্রস্রাব করিবেন না, করিলে ৫০ টাকা জরিমানা। আমার তৎক্ষণাৎ আমার বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল। এই সাইনবোর্ড দেখলেই ওর মতো সবারই প্রকৃতির ডাক পেয়ে যাবে। তখন আমার জানালার পাশের জায়গাটি প্রাকৃতিক কর্ম সারার জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠবে। আমি তো জেনে বুঝে সেটা হতে দিতে পারি না।
অবশেষে কাজে লাগালাম পানি থেরাপি - গরম পানি ও ঠাণ্ডা পানি থেরাপি। যখনই উনার বিশেষ কর্মটি সমাধা করতে দাঁড়িয়ে যান, আমার জানালাটি খুলে পানির ঝাপটা মেরে দেই। পানি থেরাপি খেয়ে কেউ কেউ মৃদু প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেন। আমি উল্টো ঠেলা দিলে তারা আর কিছু বলতে পারে না। বেশির ভাগ পাবলিক কোন কথা না বলে সটকে পড়ে।
আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ আইন না মানার পক্ষে। আমরা নাগরিক হিসেবে দুর্গন্ধযুক্ত ও নোংরা রাস্তাঘাট এবং পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে অভ্যস্ত। যত্রতত্র প্রাকৃতিক কর্ম করাটাকে কোন অপরাধ মনে করি না। বরং এই রেওয়াজটিকে আমাদের নাগরিক অধিকারের পর্যায়ে উন্নীত করেছি।
অথচ সামান্য সচেতন হলেই এই বদ-অভ্যাস দূর করা সম্ভব।
পাবলিক টয়লেট ছাড়া অন্য কোথাও প্রাকৃতিক কর্ম না করলে আমাদের চারপাশ কত পরিচ্ছন্ন থাকতে পারে।
আরেকটি বদ-অভ্যাসও আমাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে। যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা। একটা পলিথিন ব্যাগে ভরে আমরা ময়লা রাস্তায় ফেলে দেই। দালানের উপর থেকে জানালা দিয়ে ফেলে দেই রাস্তায়।
অথচ ড্রেনে বা রাস্তায় ময়লা না ফেলে একটু কষ্ট করে ডাস্টবিনে ময়লা ফেললে আমরা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করতে পারি।
পরিবেশকে নোংরা করলে তার ভয়াবহ কুফল হিসেবে আমরাই তো নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হব। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সহজেই রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হবে। সেটা ভেবে হলেও আমাদের চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।