আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাহাড়িরা কী জাতি ও বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গতের প্রশ্নে



কয়েকদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা নিয়ে মুনশিয়ানার পোষ্টে Click This Link এক ব্যাপক আলোচনা বিতর্কে আমরা সকলে জড়িয়ে ছিলাম। সরাসরি পাহাড়ি সমস্যার প্রসঙ্গ নয় এমন আমাদের সমাজের বহু অমীমাংসিত বা অস্বচ্ছ চিন্তা স্বভাবতই অনুষঙ্গ হিসাবে ওখানে আলোচনার সাইড বারান্দাতে উঁকি দিয়েছিল। উঁকি দেওয়া এসব সাইড প্রসঙ্গগুলো সমাজে অস্বচ্ছ অবস্হায় থাকার কারণে ওখানে কথা বলতে গিয়ে আমার বারবার বাধা পেতে হয়েছে, কখনও কথার উল্টা মানে হয়েছে। যা বলেছি বা বলতে চাই তা বুঝাতে বেগ পেতে হয়েছে; অনেক সময় তা একেবারেই পারিনি। বরং ভুল বুঝার পরিস্হিতি সৃষ্টি হয়েছে বা অসতর্কে কেউ সুযোগ নিয়ে ফেলেছেন।

ওখানে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন সাধারণভাবে মোটা দাগ টেনে বললে, তাদের ভিতর বেশির ভাগের অবস্হান - "বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে সমাধান খুঁজার চেষ্টা" এই ভাগের বলে চিহ্নিত করা যায়। আর একধরণের অংশগ্রহণকারী ওখানে ছিলেন যারা মনে করেন, পাহাড়ি সমস্যা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে সমাধান খুঁজার চেষ্টা পাহাড়ের বিদ্রোহকে নস্যাৎ করার একটা প্রচেষ্টা, একটা "কোলাবরেশনের পক্ষে"র চিন্তা। এটা ঠিক তাদের ভাষা নয় আমার ভাষায় তুলে ধরা। চোখে পড়ার মত করে এই কথাগুলোর ভাব মাথায় রেখে, কখনও অস্পষ্টে, ইঙ্গিতে বা প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এরা অনেকেই তা তুলে আনতে পেরেছেন। আরও অনেকে নিশ্চয় ছিলেন যারা খুব স্পষ্ট করেন নি বলে প্রমিনেন্ট নন, আমার চোখে পড়েনি হয়ত।

আবার এদের সবার অবস্হানের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই এমন নয়। এদের মধ্যে মনজুর মন্তব্য যদি প্রতিনিধিত্ত্বমূলক ধরি তাহলে, মনজুর ভাষায় বললে "কোলাবরেশনের পক্ষে" হওয়ার ধারণার সাথে "যে কোন বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত" - এই দুই ধারণার আপাত বিরোধীটাই তিনি তুলে ইঙ্গিত করছিলেন। আমার কাছে মনে হয়েছে, মনজু সম্ভবত বলতে চাচ্ছিলেন, আমরা "কোলাবরেশনের পক্ষে" দাঁড়ালে "বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত" ধারণার সাথে যে এটা বিরোধাত্মক হয়ে যাচ্ছে - এটার কি হবে; এই প্রশ্নটা তিনি তুলতে চাচ্ছিলেন। এখানে এই বিরোধকে আপাত বলে মনে করি আমি অর্থাৎ, দেখে মনে হচ্ছে একটা বিরোধ হচ্ছে। কেন আপাত মনে করি এটা নিয়ে সবশেষ আলাপ করব।

আমাকে অবাক করে মনজু বলছিলেন "পি.মুন্সীর বক্তব্য আলাদা ব্যাঞ্জনা রাখে"। এতে আমি "কোলাবরেশনের পক্ষে"র বাইরের লোক মনে হয়েছে কী তাঁর? আমি জানি না। কিন্তু আলাদা ব্যাঞ্জনা কেন সেই কারণ বলতে গিয়ে "বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার কাজটি করার চিন্তা এসেছে ফারহান দাউদের কমেন্টে" (খুব সম্ভব ফারিহান বলতে চেয়েছিলেন ভুলে ফারহান দাউদ লিখে ফেলেছেন) - বলার কারণে স্পষ্ট কিছু আমি বুঝি নাই। মনজু ফারিহানের "স্বজাতিতত্ত্ব" অর্থাৎ পাহাড়ি ও বাঙ্গালি হলো দুই জাতি, ফলে এরা একে অন্যের হয়ে পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারে না - এই "স্বজাতিতত্ত্ব" ভাবনার দিকে নির্দেশ ও একমত পোষণ করে মনজু কথা বলেছেন কি না আমি তাও নিশ্চিত নই। মনজু পরিস্কার করতে পারবে।

এসব সামাজিক ভাবনা, বিতর্কগুলোকে নিষ্পত্তি করে এক জায়গায় আসার কাজটা সহজ না হলেও শুরু করতে প্রথমত, বিস্তর কথা বলার দরকার আছে। তবে তারও আগে এই বিতর্কের পিছনে মৌলিক কিছু চিন্তার বিষয় আছে যেগুলো আগে খোলসা করে নেবার দরকার; নইলে চিন্তার জট খোলা যাবে না, নিষ্পত্তির জায়গায় যেতে পারব না। এই ভাবনা থেকে মুনশিয়ানার পোষ্টেই কিছু প্রসঙ্গ তুলেছিলাম তবে শেষ করতে পারি নাই। সে ভাবনায় Race আর Nation এর ধারণাটা একটা মৌলিক বিষয় মনে করে একটা প্রসঙ্গে যা লিখেছিলাম, এখানে তা আবার কোন এডিট না করে তুলে দিচ্ছি। - "ইংরেজি Race আর Nation বলে দুটো আলাদা শব্দ আছে।

অর্থও আলাদা। নৃ-বৈশিষ্ট আর রাজনৈতিক জাতি - এক নয়। বাংলায় অনেকেই দুটোকে জাতি বা জাতিসত্ত্বা বলে একই অর্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। এই আলোচনায় Race আর Nation এর অর্থ দুটো আলাদা সেটা স্পষ্ট রাখার দরকার আছে। পাহাড়িরা সমতলের জনগোষ্টি থেকে Race বা নৃ-গোষ্ঠি বা নৃবৈশিষ্ট অর্থে আলাদা।

কিন্তু পাহাড়ি বা চাকমা জাতি বলে কিছু নাই বা হয়ে উঠেনি। পরে কী হবে আমরা এখন জানি না। সমতলের জনগোষ্টি বাঙালী বলে একটা রাজনৈতিক জাতিরাষ্ট্র করেছে। পরে ভবিষ্যতে এটা কী হবে আমরা এখন জানি না। জাতি হয়ে উঠতে হয়।

আবার হবেন কী না, হয়েই একমাত্র মানব সভ্যতার মধ্যে নিজের জায়গা দেখেন কী না - - সেভাবে নাও দেখতে পারেন। সেসব রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি করার মামলা। আমার কথা হলো, Race আর Nation অর্থ যেন আমরা স্পষ্ট থাকি, গুলিয়ে না ফেলি। " উপরের এই মন্তব্যে আসলে, দুটো গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া করেছিলাম। প্রশ্ন এক. জাতি হওয়া বলতে আমরা কী বুঝব? কেবল রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্থাৎ পুরানো গোত্র, বর্ণ জাতপাত ইত্যাদিতে বিভক্ত হয়ে থাকা পরিচয়গুলো থেকে উর্ধে উঠে একটা রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করতে পারলেই কী আমরা জাতি হয়ে যেতে পারব? প্রশ্ন দুই. রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করার মানে কী সবসময়ই তা জাতি, জাতিবাদী বা জাতীয়তাবাদী হতে বাধ্য? কেউ রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বায় খাঁড়া করতে চায় কিন্তু জাতীয়তাবাদী হতে চায় না - এটা কী সম্ভব, সম্ভাব্য প্রস্তাব হতে পারে ? গুরুত্ত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ দুটো নাড়াচাড়া করেছিলাম ঠিকই কিন্তু পাঠককে এদিকে নজর করাতে পারি নাই।

উপরে বোল্ড করা অংশ এখন করা, আগে বোল্ড ছিল না। যদিও বোল্ড করা অংশটার মধ্যে উপরে করা দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আছে, কিন্তু পাঠককের নজর সেখানে নিতে পারি নাই বুঝি। উপরে Race আর Nation প্রসঙ্গে লেখার প্রেক্ষিতে - চানমেয়া - আমার ধারণাটার সাথে সংযুক্তমূলক একটা বাক্যে লিখা দরকার বলে প্রস্তাব রেখেছিলেন এভাবে, "পলিটিক্যাল জাতি হয়ে ওঠাটা স্ট্রাগলের মধ্য দিয়েই হয়" চানমেয়ার এই সংযুক্তি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে, Race আর Nation ধারণাটার আরও বিস্তার ঘটানোর সুযোগ হিসাবে নিয়েছিলাম। লিখেছিলাম এভাবে, - "পলিটিক্যাল জাতি হতে গেলে স্ট্রাগল কথাটা বাই ডিফল্ট সাথে আসে তাই ওটা উল্লেখ করিনি। পলিটিক্যাল পরিচয় (entity) বা সত্ত্বা হয়ে হাজির দাঁড়াতে গেলে লড়াই ছাড়া এটা কখনই হয়নি।

হবে না। কিন্তু যেটা বুঝা খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ তা হলো, race বা নৃ-গোষ্ঠি কথাটা প্রাকৃতিক; প্রকৃতির দেয়া পরিচয় বা বৈশিষ্ট, প্রকৃতি আপনাকে যেভাবে হাজির করেছে আপনি তখন তাই ছিলেন; গোত্রে ট্রাইব হয়ে। বিপরীতে nation: এটা পলিটিক্যাল। এখন আপনি নিজের সম্পর্কে সচেতন হয়ে গেছেন, এটাই পলিটিক্যাল মানুষ। নিজের পলিটিক্যাল পরিচয় (entity) বা সত্ত্বা দাঁড় করাচ্ছেন, polity বা রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে উঠছেন।

একই রক্ত মাংসের মানুষ এবার (entity) বা সত্ত্বা তৈরির অংশটার কারণে আর কেবল প্রাকৃতিক নন; [আবার] প্রাকৃতিকতা থেকে বাদ বা আলাদা হয়ে যাননি এটা তখনও সত্য। কেবল প্রাকৃতিক বৈশিষ্টগুলো (নৃ-বৈশিষ্টগুলো) তখন থেকে যায় বলে নয় আপনি আসলেই প্রকৃতি বলতে আমরা যা যা বুঝি সব অর্থেই। এখানে থামতে পারছি না। এখন একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ সাবধানবাণীর কথা বলতেই হবে। কোন জনগোষ্ঠির polity বা রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে উঠা মানেই কী nation বা জাতি হয়ে উঠা? nation বা কোন একটা জাতি ভিত্তিক (ভাষা ভিত্তিক জাতি যেমন আমরা, ভুখন্ড ভিত্তিক ভারতীয়, ধর্ম ভিত্তিক পাকিস্তান ইত্যাদি) রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে উঠাই কী এর পূর্বনির্ধারিত গন্তব্য? জাতি না হয়ে রাজনৈতিক সত্ত্বা হওয়া যাওয়া কী সম্ভব? এই প্রশ্নটা মোকাবিলা করেন? প্রায় সকলে, কমিউনিষ্টসহ মেইন ষ্ট্রিমের ধারণা এটা অসম্ভব।

[এখানে কমিউনিষ্ট বলতে আমাদের মত দেশের প্রেক্ষিতে যারা জাতি হয়ে উঠা লড়াইয়ের অংশ] রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে উঠা মানেই nation বা জাতি হয়ে উঠা - এটাই তারা মনে করে। আপনার [মন্তব্য] ১১৬ নম্বরের দ্বিতীয় অংশের লেখাও এই ধারণার উপরে দাঁড়িয়ে লেখা। আমি মনে করি এধারণা ভুল, বেঠিক। এজন্য আমার অনেক কথা আপনার কাছে অস্পষ্ট থেকে গেছে। বুঝাতে পারি নাই।

এই ছোট পরিসরে এখন উত্তর দিব না। কেবল একটা স্ববিরোধীতার কথা বলব। মেইনষ্ট্রিমের কথা বাদ রাখলাম, তাহলে কমিউনিষ্টদের কাছে কমিউনিষ্ট মানে কী? সে কোন জাতি? উত্তর খুজেন, পরে আবার আলাপ হবে। মানুষের পোষ্টে এত কথা বলা ঠিক না। " - এই বলে তখনকার মত শেয করতে হয়েছিল।

Race আর Nation প্রসঙ্গ কথার সারমর্ম হচ্ছে, বিভিন্ন জনগোষ্ঠিতে সংগঠিত হয়ে থাকা মানুষের Race বা নৃ-গোষ্ঠি হলো একটা প্রাকৃতিক পরিচয়। এখানে মানুষেরা কোন রাজনৈতিক পরিচয়ে একে অন্যের সাথে জড়িত থাকে না। কিন্তু ‘nation’ মানে একটা রাজনৈতিক কমিউনিটি যেটা "রাজনৈতিক ইচ্ছা"র উপর ভিত্তি করে দাঁড়ানো; এছাড়া, কোন না কোন নৃ-বৈশিষ্ঠ এই রাজনৈতিক কমিউনিটিকে আকার দিবেই এমন কোন মানে নাই - এটাই বলতে চেয়েছিলাম সেখানে। এর বাইরে, "এখানে থামতে পারছি না" বলে দুই. নম্বর প্রশ্নটা আবার "একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ সাবধানবাণী" আকারে তুলেছিলাম। এবারও শেষ করিনি, প্রশ্ন করে ইঙ্গিতে উত্তর দিয়েছিলাম।

এবার এই নতুন পোষ্টে, এখান থেকে শুরু করব। শুরু করব প্রশ্ন এক. দিয়ে। প্রশ্ন এক. জাতি হওয়া বলতে আমরা কী বুঝব? কেবল রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্থাৎ পুরানো গোত্র, বর্ণ জাতপাত ইত্যাদিতে বিভক্ত হয়ে থাকা পরিচয়গুলো থেকে উর্ধে উঠে একটা রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করতে পারলেই কী আমরা জাতি হয়ে যেতে পারব? উত্তরটা বুঝার সুবিধার জন্য উদাহরণে পাহাড়িদেরকে নিয়ে দেই। পুরানো গোত্র বা নৃ-গোষ্ঠি বিভক্ত হয়ে থাকা পরিচয়গুলো থেকে উর্ধে উঠে একটা রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করতে পেরেই পাহাড়িরা জাতি হয়ে যেতে পারবে না। কারণ, জাতি হবার বিষয়টা শুধুই সাবজেকটিভ বা কর্তাসত্ত্বার নয়।

সাবজেকটিভ মানে পাহাড়ি মানুষগুলো কেবল চিন্তায় একটা নতুন রাজনৈতিক সত্ত্বা, ধরা যাক ওর নাম পাহাড়ি জাতি, হয়ে গেলেই হবে না ওর একটা বসতগত বা বস্তুগত প্রস্তুতি অর্থাৎ চিন্তা যেখানে রক্তমাংসের জীবনে বসত করবে সেই উপযোগী জীবন, উৎপাদন সম্পর্কে হাজির থাকতে হবে। পাহাড়িদের এখনকার জীবন উৎপাদন সম্পর্ক এর জন্য প্রস্তুত নয়, অবিকশিত বলে; বস্তুগত উৎপাদন সম্পর্ক, স্তর, মালিকানা সম্পর্ক অবিকশিত - এর বিকশিত হয়ে স্তর অতিক্রম করে উঠতে সময় দিতে হবে। ব্যক্তিবোধ, উৎপাদন সম্পর্ক, মালিকানার ধরণে বদল আসতে হবে। এখন পর্যন্ত তা যতটুকু হয়েছে আমরা দেখছি তা এসেছে সমতলীদের সাথে সীমিত লেনদেন ও সমতলীদের উৎপাদন সম্পর্কের সাথে সীমিত সম্পর্কের কারণে। মোটা দাগে বললে, নিজেদের ভুমিসহ অন্যান্য মালিকানার ধরণ, সমতলীদের সাথে অমীমাংসিত সমস্যাগুলো ইত্যাদির কারণে পার্বত্য এলাকা একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত হয়ে আছে।

এটা মুগুর মেরে বা চিন্তায় বিপ্লব ঘটিয়ে করার বিষয় নয়। জীবনের বৈষয়িক উৎপাদন ও সম্পর্কের পরিবর্তনের কাজটা চিন্তায় করে ফেলার কাজও না বরং কোদালী কাজ; ব্যাপক সামাজিক উৎপাদনে একটা লেনদেনে জড়িয়ে বা ঘটিয়ে তবেই এ জায়গায় পৌছানো সম্ভব। এই ব্যাপক লেনদেনের সমাজ গড়ে তোলার কাজটা বিচ্ছিন্ন হয়ে করবে না উপস্হিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিতরে থেকে করবে তা নির্ণয় একদম আলাদা আলোচনার প্রসঙ্গ। কিন্তু জাতি হয়ে উঠতে চাইলে সেক্ষেত্রে এই বাধাকে এড্রেস করতে পারতেই হবে। এছাড়া, পাহাড়ি রাজনৈতিক চিন্তা এগুলো বুঝবার জন্য কতটা পরিপক্ক হয়েছে সেটাও একটা ফ্যাক্টর।

এখনকার বৈষয়িক (বস্তুগত) জীবন উৎপাদন পদ্ধতি, স্তর, সম্পর্কের অপ্রস্তুতি বা ঘাটতি ওদের জাতি হয়ে উঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে আছে। এই বাধাগুলো কি করে অপসারণ করবে, এর জন্য রাজনৈতিক চিন্তা, পরিকল্পনা কী নিচ্ছে - তার উপর নির্ভর করছে তারা কেমন জাতি হবে, আদৌও হতে পারবে কী না। তবে এই হওয়া না হওয়ার সাথে পাহাড়িরা বিচ্ছিন্ন হতে পারবে না এই ইস্যুটা সম্পর্কিত নয়। জাতি না হয়েও বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্ভব তবে, তা অন্য আলোচনার বিষয়; সে আলোচনা এখানকার বিষয় নয়। তাহলে জাতি হয়ে উঠার ব্যাপারটা জনগোষ্ঠির কেবল চিন্তায় বিপ্লবের নয়, বৈষয়িক জীবন উৎপাদন সম্পর্কের একটা বিপ্লবও বটে।

তুলনা করে বললে, পূর্ব পাকিস্তানে এই বৈষয়িক প্রস্তুতির দিকটা পরে পাওয়া, তৈরিই ছিল বা আগেই অর্জিত ও হাজির ছিল বলে কেবল চিন্তায় বিপ্লব ঘটিয়ে বাঙালি বলে জাতি হওয়া সহজে সম্ভব করে ফেলতে পেরেছিল। পাঠকের কাছে সবিনয়ে একটা কথা মনে রাখতে বলি। আমার এই কথাগুলো পাহাড়িদের বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিপক্ষে কোন যুক্তি নয়। আমার ব্যাখ্যা বা কথা পাহাড়িদের বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া অসম্ভব এমন কোন প্রমাণ বা দাবি এখানে আমি করছি না। আমার এই ব্যাখ্যা সত্ত্বেও তা ঘটতে পারে বা নাও পারে।

কারণ, জাতি হওয়ার সাথে বিচ্ছিন্ন হতে পারা না পারা সম্পর্কিত নয়। আবার, জাতি হতে পারবে না বলে পাহাড়িদের এখন কোন আন্দোলন, সংগ্রাম নিস্ফল এটাও সত্য নয়। আরও একটা কথা, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে পাহাড়িরা একটা বিরোধাত্মক সম্পর্কে জড়িয়ে আছে বলে এবং আমি বাংলাদেশের বলেই উপরে আমার বক্তব্যের শেষে বাংলাদেশকে তুলনায় এনেছি - সেদিক থেকে দেখা মারাত্মক ভুল হবে। তুলনা এনেছি স্রেফ বুঝানোর সুবিধার্থে; বাংলাদেশের পাঠককে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে মিলিয়ে আমার কথা বুঝনো সুবিধা হবে, তাই। বাংলাদেশের সমতলীরা পাহাড়িদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ - এমন কোন জাতিদম্ভি অর্থ এখান থেকে বের করার সুযোগ নাই; আশা করি কেউ সেভাবে ভুল বুঝবেন না।

এবার প্রশ্ন দুই. নিয়ে কথা বলব। রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করার মানে কী সবসময়ই তা জাতি, জাতিবাদী বা জাতীয়তাবাদী হতে বাধ্য? কেউ রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বায় খাঁড়া করতে চায় কিন্তু জাতীয়তাবাদী হতে চায় না - এটা কী সম্ভব, সম্ভাব্য প্রস্তাব হতে পারে ? উত্তর, হ্যাঁ অবশ্যই হতে পারে। রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা খাঁড়া করার সংগ্রাম মানেই জাতি, জাতিবাদী হওয়ার সংগ্রাম নয়; অথবা ওটা একটা জাতীয়তাবাদী রাজনীতি হয়ে দাঁড়াবেই এমন কোন কথা নাই। কোন না কোন একটা জাতীয়তাবাদী হয়ে দাঁড়াবে কি না এই পুরা ব্যাপারটা নির্ভর করছে - ধর্ম, জাতি, বর্ণ, ভুখন্ড, ভাষা, জাতপাত, গোত্র, নৃ-গোষ্টি বৈশিষ্ট, পুব-পশ্চিম, সভ্যতা, পাহাড়ি-সমতলী, নারী-পুরুষ ইত্যাদি যত রকমভাবে মানুষকে একএকটা সম্প্রদায়গত ভেদ চিহ্নে ভাগ করা যায় - এভাবে বিভক্তির উর্ধে একটা মানুষের কমিউনিটি যদি কল্পনা করে এমন মানুষের রাজনৈতিক সত্ত্বা কিভাবে সেখানে দাঁড়াচ্ছে এর উপর। এটা যদি না করতে পারি, তবে আমরা রাজনৈতিক পরিচয় বা সত্ত্বা হিসাবে যাকেই বেছে নেই না কেন তা উপরে বলা মানুষের ভেদ চিহ্নের কোন না কোন একটা সম্প্রদায়গত রাজনৈতিক পরিচয়ের রাজনীতি হয়ে দাঁড়াবে।

যেমন আমরা ভাষাভিত্তিক একটা পরিচয় আঁকড়ে আমাদের রাজনৈতিক সত্ত্বা খাঁড়া করেছি, রাষ্ট্র গড়েছি, এখনও আছি ফলে বলা যায় একটা সম্প্রদায়গত রাজনৈতিক পরিচয়ের রাজনীতিতে এটা দাঁড়িয়ে আছি। এই অর্থে এটা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। প্রতিটি জাতিরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী চিন্তা থেকে উৎসারিত বলে, জাতিগত সম্প্রদায় পরিচয়ের রাজনীতি খাঁড়া করে দাঁড়িয়ে আছে বলে বাই ডিফল্ট তা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে আছে। আবার বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিশেষত্ত্ব হলো, এটা বাইরের অর্থে, অন্য যে কোন রাষ্ট্রের জাতিগত সম্প্রদায় পরিচয়ের রাজনীতি সাপেক্ষে একটা সম্প্রদায়গত রাজনৈতিক পরিচয়ের রাষ্ট্রই শুধু নয় বরং, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও সাম্প্রদায়িক, পাহাড়িদের অভিযোগের সারমর্ম এটাই। এখানে রাষ্ট্র হলেই তা মানুষের কোন না কোন ভেদচিহ্নের কারণে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হতেই হবে বা হয়ে যাবে তা নয়।

মানুষের সমস্ত ভেদ চিহ্নের উর্ধে মানুষের পরিচয় সত্ত্বার রাজনীতির উপর দাড়িয়ে রাষ্ট্র কায়েম করা সম্ভব। ওখানে রাষ্ট্রগত এক ধরণের বিভেদ তবু তখনও থাকবে। ভেদ চিহ্নের উর্ধে মানুষের পরিচয় সত্ত্বার রাজনীতিকে সামনে আগিয়ে নিতে সেই রাষ্ট্রকে কাজ করতে হবে যাতে রাষ্ট্রগত বিভেদটারও অবলুপ্তি সে ঘটাতে পারে। এই রাজনৈতিক চিন্তার বসতগত বা বৈষয়িক প্রষ্তুতি এখনকার সময়ে গ্লোবালি হাজির বা তৈরি নাই। এই বসতগত বা বৈষয়িক প্রষ্তুতি এখনও একধরণে তৈরি হচ্ছে যেটাকে আমরা গ্লোবালাইজেশন বলে বুঝি সেখানে, গ্লোবাল পুঁজির হাতে; তাই নেগেটিভলি।

এটাকে উল্টে নিতে হবে। তাহলে, শুরুতে হ্যাঁ সম্ভব বলে এপর্যন্ত যা বললাম এটা বাস্তব উদাহরণে নাই, vision আকারে ভাবে আছে। কিন্তু তাই বলে কি কোন পরীক্ষা নিরিক্ষাও নাই? রাষ্ট্র হয়েছে মানেই তা সবই জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র হয়ে গেছে তা তো নয়। চীন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে; নিশ্চয় আদর্শ রাষ্ট্র নয় সে কিন্তু কেউ বিতর্ক বা দাবী করে না যে এটা জাতীয়তাবাদী সম্প্রদায়গত ভেদ চিহ্নে - এই পরিচয়ের রাষ্ট্র; তবে চীনকে কমিউনিষ্ট বলা না বলা নিয়ে বিতর্ক করতে পারে। মানুষের সম্প্রদায়গত ভেদ চিহ্ন ভেঙ্গে উর্ধে উঠে দুনিয়ায় রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে খাঁড়ানোর লক্ষ্যে এটা কমিউনিষ্ট চিন্তায় একটা পরীক্ষানিরিক্ষার প্রচেষ্টা বলতে পারি একে।

কাজেই রাজনৈতিক সত্ত্বা হয়ে খাঁড়া হয়ে উঠতে গেলে তা জাতি, জাতিবাদী অর্থে তার পরিচয় জাতিয়তাবাদী হয়ে যাবেই এমন কোন কথা নাই। এখানেও পাঠককে সতর্ক থাকতে বলব, আমার চীনের উদাহরণ, চীনকে আদর্শ রাষ্ট্র হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য নয়; দুনিয়াতে পরীক্ষানিরিক্ষা কতদূর হয়েছে এরই একটা উদাহরণ মাত্র। বিদ্রোহ ন্যয়সঙ্গত প্রসঙ্গ মনজু বিদ্রোহ বলছেন ঠিকই কিন্তু বুঝছেন বিচ্ছিন্নতা। ফলে মনজুর "বিদ্রোহ ন্যয়সঙ্গত" কথাটা হয়ে গেছে "বিচ্ছিন্নতা ন্যয়সঙ্গত" ধরণের। এখন বিচ্ছিন্নতা সবসময় ন্যয়সঙ্গত কি না সে প্রশ্ন পরিপ্রক্ষিতের সাপেক্ষ, অর্থাৎ সবসময় তা নাও হতে পারে।

তার মানে পাহাড়িরা বিচ্ছিন্ন হতে না চেয়েও বিদ্রোহী সংগ্রামী হতে পারে। মুনশিয়ানা পোষ্টসহ এখানে পর্যন্ত যত আলোচনা আমরা করছি এগুলোর মূলসুর হলো, পাহাড়ি-সমতলীর যে উপস্হিত সম্পর্কে আমরা আছি তা বদলাবার পক্ষে আমরা সবাই। উপস্হিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক যে অগ্রহণযোগ্য, আমরা মানি না - এই ভিত্তির উপর দাড়িয়েই আমরা পরস্পরের সাথে কথা বলছি, সমাধান খুজছি । সেই কমন জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা কথা বলছি মানে, উপস্হিত সম্পর্ক আমরা মেনে নেইনি, বদলাবার কথা বলছি - এটাই চিন্তায় বিদ্রোহ, একটা অবস্হান। এটা ব্লগ, লেখার জায়গা - ফলে এর সীমা চিন্তায় বিদ্রোহী হওয়া পর্যন্তই।

ফলে "বিদ্রোহ ন্যয়সঙ্গত" এমন প্রেমিজ থেকে আমরা সরিনি। এখন নতুন চিন্তায় বিদ্রোহটা "বিচ্ছিন্নতা" ভাবনায় হয়েই শেষ হবে কি না আমরা এখনও জানি না; তবে এটা এখনও খোলা রাখা আছে। আবার মূলত বিদ্রোহ ও বিচ্ছিন্নতা একই ধারণা নয়। বরং বিদ্রোহ মানে হলো, উপস্হিত পরিস্হিতিটা অসহ্য এতটুকু সে বলতে পারে এজন্য সে অস্ত্র তুলে নেয়া পর্যন্ত যেতে পারে এতটুকুই। কিন্তু অসহ্য পরিস্হিতিটার বদলে কী চায় সেটা ওখানে ষ্পষ্ট থাকে না।

ফলে বিদ্রোহ মানেই চিন্তার একটা প্রাথমিক বা অবিকশিত পর্যায়, দিক বা লক্ষ্যের একটা ঘাটতি ওখানে সবসময় বিদ্যমান থাকে। এই ঘাটতি সে কাটিয়ে উঠতে পারবে না তাও নয়। তবে দিক বা লক্ষ্যহীন বলে ওটা সবসময়ই (সাময়িক) ব্যর্থতা বলে হাজির হবে তবে সেটা আগামির শিক্ষাও বটে; ফলে ঘাটতির সম্পর্কে সচেতনতার শিক্ষা। যা কর্তাভাবে কেউ কখনও কীভাবে ভবিষ্যতে নিবে তা আবার নির্দিষ্ট নয়। এদিকে দিক বা লক্ষ্য পরিস্কার প্রস্তুত থাকলে ওটা আর তখন বিদ্রোহ নয়, ওর নতুন নাম, বিপ্লব বলি তাকে।

আবার বিপ্লব মানে বিচ্ছিন্নতা হতেও পারে নাও পারে। কিন্তু কোন ধরণের চিন্তার একসারসাইজ না করে, দিক বা লক্ষ্য পরিস্কার ভাবে ভেবে প্রস্তুতের কষ্টের পথে না গিয়ে, শত্রু-মিত্রের ভেদাভেদের পরিস্কার মুল্যায়ন না টেনে - সমস্যা মানেই বিচ্ছিন্ন হতে হবে - এই ভাবনার কোন মানে নাই। ফলে, পাহাড়িদের সমস্যা আছে,তা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়া পর্যন্ত গিয়েছে কাজেই ওদের বিচ্ছিন্নতার পথে যেতেই হবে, অথবা বিপরীতে ওদের, এক থাকার চেষ্টার মধ্যে সমাধান খুঁজতেই হবে - এর কোনটার পক্ষেই বিবেচনাহীনভাবে দাঁড়াতে হবে বিষয়টা এমন নয়। অতএব, মনজু "বিদ্রোহ ন্যয়সঙ্গত" বলে কথাটা যেটা "বিচ্ছিন্নতা ন্যয়সঙ্গত" ধরণের একটা ধারণার ইঙ্গিত হয়ে আছে, এখন মনজু যদি সচেতনে বিচ্ছিন্নতার কথা বুঝিয়ে থাকে তবে আমরা শুনব কী কী কারণে সে বিচ্ছিন্নতার পক্ষে দাঁড়াতে চাচ্ছে। সেই ব্যাখ্যা থেকে আমরা মনজুর কথার বিচার করব।

আর মনজু যদি সিরিয়াস অর্থে না বলে থাকে তাহলে তো প্রসঙ্গই বাদ। আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার প্রসঙ্গ: পাহাড়িদের আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আছে বলেই তাদেরকে বিচ্ছিন্নতার পথ ধরতে হবে এই কথা সত্যি নয়; তবে বিচ্ছিন্নতা পক্ষে ওরাওদের যাবার রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে আগাতে চাইলে তার ন্যায্যতা "ওদের তা করার আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আছে" বলে মানতে হবে। আবার, বিচ্ছিন্নতার রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ সঠিক না বেঠিক হয়েছে তার বিচার "আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আছে" বলেই ওর ভিতরে পাওয়া যাবে না। রাজনৈতিক কৌশল নিজেকেই নিজের ভিতর কারণ হাজির রাখতে হবে। যার বিচার করে আমরা ওর সঠিক বেঠিকতা নিয়ে কথা বলতে পারব।

বগুড়াবাসীর কি আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আছে? অবশ্যই আছে। তাহলে সে অধিকার প্রয়োগ করে না কেন? বগুড়াবাসী বিচ্ছিন্ন কেন হবে এর কারণ ওর আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার আছে সেজন্য - এটা অগ্রহণযোগ্য; কোন উত্তর হয়নি এটা। এতে বগুড়াবাসী বিচ্ছিন্নতার পক্ষে যুক্তি দিতে পারে কিনা সেটার সমাধা হয়েছে মাত্র। কিন্তু যুক্তিগুলো কী সেটা জানা যায়নি। ফলে বিচার করা যাচ্ছে না।

আবার দেখুন, আমাদের যে কোন জেলাবাসী আত্মনিয়ন্ত্রাণাধিকার থাকা সত্ত্বেও বিচ্ছিন্নতার কথা না ভেবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে তার স্বার্থ বুঝে নেবার কাঠামো হিসাবে রাষ্ট্রকে দেখতে পারছে। ফলে বিচ্ছিন্নতাই স্বার্থ বুঝে নেবার একমাত্র পথ তো নয়ই, ভালো পথ নাও হতে পারে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।