কতোজন মানুষ হত্যা করলে একজন কসাইকে ঘাতক বলা যায়
কতোজন নারীর সম্ভ্রম হরণ করলে আমরা একটি পাষণ্ডকে
বলতে পারি- 'ধর্ষক'
তা আমার জানা নেই। জানে রাষ্ট্রপক্ষ, যে রাষ্ট্রে এখনও বুক ফুলিয়ে
দাঁড়ান কবি মেহেরুননেসা'র সন্তান।
আমি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পা স্পর্শ করেছি। দেখেছি
কীভাবে গণআদালতের মাঠে দাঁড়িয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন
শহীদ রুমীর মা। কীভাবে জাতিসংঘ চত্বরে একজন প্রধানমন্ত্রীর
গাড়ীর বহর আটকে দিয়েছে তরুণ প্রজন্মের শাণিত হাত।
আমি সেই তরুণের কন্ঠ শুনেছি, গ্রাম থেকে উঠে আসা ছাত্র -
শহীদ জননীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছে- 'মা, আপনি আদেশ করুন
বুকে গ্রেনেড বেধে ক্ষুদিরাম - তিতুমীর হতে চাই। '
মা- তার ইচ্ছায় সম্মতি দেননি। বলেছেন- এই বাংলাদেশ গর্জে উঠলে
কোনো মৌলবাদীই সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
আমরা সেদিনের অপেক্ষায় ছিলাম, যেদিন এই বাংলার প্রতিটি নদী
একাত্তরে তার বুকে রক্ত ধারণ করার বিচার চাইবে।
আমরা সেদিনের অপেক্ষায় ছিলাম, যেদিন এই বাংলার প্রতিটি বৃক্ষ
ডেকে বলবে- মাননীয় বিচারক, আমাদের ছায়ায় দাঁড়িয়ে এই
ঘাতকেরা খুন করেছে তিরিশ লক্ষ মানুষ।
আমরা সেদিনের অপেক্ষায় ছিলাম, যেদিন এই বাংলার আকাশ
তুমুল ঝড়ের ঢেউ তোলে দেবে সাক্ষী - ধর্ষিতা নারীর সপক্ষে।
আমি জানি সেদিন শেষ হয়ে যায় নি। যেদিন আবারও গ্রাম থেকে
উঠে আসা ছলিমুদ্দী, পরিমল দাশ আর সুকান্ত বড়ুয়া-রা বাঁশের লাঠি
হাতে ছুটবে শহরের দিকে। কসাইগুলোর অবস্থান তালাশ করতে করতে
তারাই দেবে ডাক। আর একাত্তরে স্বজন হারানো একঝাঁক পাখি
ছায়া দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেসব মানুষগুলোকে- যারা এখনও
একাত্তরের বীভৎস চিত্রস্মৃতি বুকে নিয়ে বার বার কেঁদে উঠেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।