মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।
মেহনতি মানুষের কি দিন বদল হয়েছে, সে প্রশ্ন আজ সবার!_ রাশেদ খান মেনন
দিন বদলের কথা বলে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। নির্বাচনী ইস্তেহারেও সে কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু গত ১১ মাসে মেহনতি মানুষের কি দিন বদল হয়েছে, সে প্রশ্ন আজ সবার! এমনকি সরকারের কিছু ভাল কাজ আজ আওয়ামী লীগের কয়েকটি অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কারণে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। মহাজোট ও ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে আমাদের স্পস্ট বক্তব্য হলো_নির্বাচনী ইস্তেহারে দেয়া বক্তব্য বাস্তবায়ন করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রায়, শিক্ষানীতি বাস্ততবায়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ সকল বোমা হামলা তদন্ত ও বিচারের ক্ষেত্রে ওয়ার্কার্স পার্টি সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
তিনি আরো বলেন, জঙ্গিবাদ-মৌলবাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য ২০০৬ সালে নির্বাচনী জোট করেছিলাম। কারণ ওই ঘাতকদের বিপরীতে একটি গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য। যার ফলে মহাজোট গঠন করেছিলাম। এটা ছিল যুগোপযোগী সিদ্বান্ত।
আজ আমরা মনে করি এ সিদ্বান্ত সঠিক। তেল-গ্যস উত্তোলনের পক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টি। কিন্তু সেই উত্তোলনকৃত তেল-গ্যাসের সম্পূর্ণ মালিকানা জনগণের এবং তা জনস্বার্থে কাজে লাগাতে হবে। সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্রে এবং আই এম এফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বহুজাতিক কোম্পানীর নির্দেশে দেশের ও জনগণের শিল্প-কারখানা, কৃষি ধ্বংস করা চলবে না। এ রকম কোনো সিদ্বান্ত ওয়ার্কার্স পার্টি বাস্তবায়ন করতে দিবে না।
১৪ নভেম্বর টায় গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চে ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনের সভাপতির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন এমপি এসব কথা বলেন।
বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন পাটির সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস। এ অধিবেশনের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ৮ম কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির অভ্যর্থনা সাব কমিটির আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি ও প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান নূরুল হাসান।
শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে বক্তব্য রাখেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস। তিনি বলেন_ আমরা কমিউনিষ্ট।
সাম্রাজ্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করাই আমাদের কাজ। বাংলাদেশের গ্যাস, কয়লা, তেল, খনিজ সম্পদ যা কিছু তা দখলের জন্য মার্কিনীদের নানাবিধ রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। তাছাড়াও ভূমণ্ডলীয় রাজনৈতিক স্বার্থে অর্থাৎ চীন ও ভারতকে মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশে মার্কিনী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। তাই বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে গেলে জাতীয় স্বার্থে সমগ্র জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য। শুধু তাই নয়, শ্রমিক-কৃষকসহ জাতীয় অর্থনীতির বিকাশের স্বার্থে সাম্রাজ্যবাদ ও বহুজাতিক কোম্পানি প্রদত্ত শিল্পনীতি-কৃষিনীতির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দাবিভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রতিদিনকার কর্তব্য।
উদ্বোধনী সমাবেশে শুভেচ্ছা ও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআইএম) এরপলিটব্যুরো সদস্য কমরেড এম কে পান্ডে, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক দেশের কথা’র সম্পাদক কমরেড গৌতম দাস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মৃদুল দে, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান কমরেড লি হং লিয়েম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিশনের মহাপরিচালক কমরেড থান লি হোয়া, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিশনের সদস্য কমরেড লি গিয়া কিয়েন, সর্ব ভারতীয় ফরওয়ার্ড ব্লক এর সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কৃষিমন্ত্রী কমরেড নরেন্দ্রনাথ দে, সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিভাগের ইন-চার্জ কমরেড জি দেবরঞ্জন, স্পেনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং আন্তর্জাতিক বিভাগের সদস্য কমরেড মারিয়া তেরেসা প্যান্টোজা, কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত কমরেড সিং হং চল, পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইমদাদ কাজী, নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (ইউনাইটেড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) এর পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড উর্মিলা প্রমুখ।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আবুল বাশার, আনিসুর রহমান মল্লিক, হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, শফিউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল কবির জাহিদ। সমাবেশ পরিচালনা করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড নুর আহমদ বকুল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।