আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবেগের সংযত ব্যবহার

সুস্থ সংস্কৃতির অনন্ত পথের যাত্রী

সামহয়্যার ব্লগ লেখালেখির যে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে, সেটা আমাদের সৌভাগ্য। এইভাবে লিখতে লিখতে লেখার হাত যেমন খুলবে তেমনি মস্তিস্কের চিন্তার ক্ষমতাও বেড়ে যাবে নি:সন্দহে। কিন্তু খুব পরিতাপের বিষয় অনেক লেখক বাজে এবং অশ্লীল মন্তব্য করে থাকেন। সাধারণত দেখা যায়, যারা অহংকারী এবং অগণতান্ত্রিক তারা অন্যের মতামতকে তাচ্ছিল্য করে। আর তখনই তারা বাজে ও অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ করে থাকে।

আমরা তো আধুনিক সভ্য পৃথিবীর সভ্য মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে দাবী করি। অথচ দেখুন প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে দার্শনিক সক্রেটিশ অথবা প্লেটো কি ভাবে কোন প্রকার অধৈর্য বা অস্থির না হয়ে মানুষের কত উদ্ভট কথার যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর দিয়েছেন। তাতে মানুষ সভ্যতার পথে পা রাখতে পেরেছে। আবার দেখুন ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহম্মদ স: সেই সময়কার অনৈতিকতা সম্পন্ন নিষ্ঠুর অশিক্ষিত মানুষদের বিপরীতে কি চরম নৈতিকতা ও মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন। এইভাবে হযরত মূসা আ:, হযরত ঈসা আ:, জরুষ্থ্রষ্ট, বৌদ্ধ, শ্রীকৃষ্ণ... এসব মহামানুষদের জীবন আর তাদের লেন-দেন, আচার-আচরণ দেখুন।

নৈতিকতা, মানবিকতা, গণতন্ত্র এসব তো তাদের কাছ থেকেই শিখতে হবে। যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে অথবা মানুষের উপর প্রভূত্ব করতে চায়, যারা স্বার্থ উদ্ধারের জন্য প্রতিপক্ষের উপর মিথ্যা আরোপ করে, মিথ্যা লোভ দেখায়, নিজে যা নয় তা সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে, তাদের আদর্শ, তাদের কথাকে একজন লেখক বিশ্লেষণ করে সত্য নিরুপন করবে এবং সাধারণ মানুষকে তাদের তৈরিকৃত হিংসা হানাহানি থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু লেখক যদি নিজেই হানাহানির পক্ষালম্বন করে, তবে আমাদের মত সাধারণ মানুষের শান্তনা কোথায়! আমরা তো শেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, ম্যাক্সিম গোর্কি, মাইকেল মধুসুদন চাই। এরা যখন তৈরি হয়েছিল তখন সামহয়্যার ছিল না। আজ তো সুযোগ হাতের মুঠোয়।

একে যথাযত গ্রহণ করতে হলে একটা বিষয় মনে রাখা দরকার, লেখকের অবশ্যই আবেগ থাকবে, কিন্তু সে আবেগ থাকবে ধৈর্য, সততা এবং জ্ঞান দিয়ে পরিচালিত। তা না হলে তার লেখার মধ্যে অশ্লীল শব্দ আসবে, গালি আসবে, বিরক্তি আসবে। আর এ সবই ভাল লেখক হবার পথে অন্তরায়। এগুলো অধৈর্যের আলামত। আর অস্থির অধৈর্য ব্যক্তি কখনো ভাল লেখক হতে পারে না।

অতএব সুশৃঙ্খল চিন্তারাজ্য তৈরি করে উন্নতমানের লেখক হবার জন্য আবেগকে সংযত করা দরকার। কারণ লেখকদের লেখা পড়েই তো অন্য দশজন শিক্ষালাভ করবে, জ্ঞান অর্জন করবে, সত্যকে জানবে। তাছাড়া যে লেখক অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে তাকে খুব নিকৃষ্ট মানের মানুষ মনে হয়। যারা পাঠক তারা প্রত্যেকে মন থেকে অশ্লীল লেখকের প্রতি ঘৃণা পোষণ করবে, একসময় দেখা যাবে ঐ লেখক মানুষের কাছে ঘৃণ্য হয়ে গেছে। আমরা যদি ঘৃণার একটা অবয়ব কল্পনা করে নিই, যেমন মনে করা যাক ঘৃণা হলো ছোট্ট কাঁটা সদৃশ, একসময় অসংখ্যা কাঁটা তৈরি হলো।

সেই অসংখ্যা কাঁটা ধেয়ে আসছে সেই অশ্লীল লেখকের দিকে... ব্যাপারটা ভেবে দেখুন তো! ছোট্ট করে বলে রাখি, আপনার বোন ভাই বা আপনাকে যে উন্নত মানের মানুষ বলে ভাবে সে কিন্তু আপনার ব্লগ দেখছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।