আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এইবার ডেনমার্কের সাথে বিপা চুক্তি স্বাক্ষরিত!



মহাচুক্তির সরকারই তো! পিএসসি, টিফা, ট্রানজিট, এশিয়ান হাইওয়ে, বিপা ইত্যাদি কত চুক্তির কথাই তো শোনা গেল, কত চুক্তিই তো স্বাক্ষর হয়ে গেল। পাবলিক খালি শোনে অমুক চুক্তি হইয়া গেছে, অমুক চুক্তি হইবে ইত্যাদি ইত্যাদি। ভারতের সাথে বিপা হইয়া গেল, কনোকো-টাল্লোর সাথে পিএসসি করা কাজ কারবার চলতাছে, টিফাও নাকি করতে হইব- আমেরিকায় কইছে, ডিসেম্বরে হাসিনা নাকি ভারত গিয়া ট্রানজিটও স্বাক্ষর কইরা আসব। এত কিছু হইব, এত কিছু হয়া গেছে, মাগার চুক্তিগুলার চেহারা সুরাত ও পাবলিক দেখল না। হাহ, এই না দেখার দীর্ঘশ্বাসে আরেকটা চুক্তি যোগ হইছে- ডেনমার্কের সাথে বঙ্গ দেশের বিপা বা বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি হইয়া গেছে।

হ ভাই আসলেই হয়া গেছে- খোদ ডেনিস দূতাবাসের ওয়েবসাইটের খবর- ঘটনাটা ঘইটা গেছে গত ৫ তারিখে-চুক্তি স্বাক্ষর ও তার নানা আয়োজন সারতে মহাব্যাস্ত মহাজোট সরকার নিজে জনগণরে সেই খবর জানানোর সময়-সুযোগ না পাইলেও ডেনিস ভাইরা আমাগো সরকারের হইয়া সেই কাজটা কইরা দিছে- একই তো কথা, ডেনিসরা আর আমরা তো ভাই ভাই, তাগো সাথে তো আমাগো কোন পার্থক্য নাই। হ, চুক্তিতে এই জাতীয় একটা ধারা থাকার কথাই তো দেখলাম ডেনিসগো ওয়েবে লেখা আছে- Among others the agreement states that investors will not be treated worse than similarly situated domestic investors..... Click This Link অর্থাত ডেনিস বিনিয়োগকারীদেরকে গৃহপালিত বিনিয়োগকারীদের অন্তত: সমান সমান বা তার চেয়ে বেশি সুবিধা দিতে হইব। এই টা তো গেল মোটে একটা সুবিধার কথা কিন্তু others সুবিধাগুলা যে কি কি সেই বিষয়ে টু শব্দও করে নাই ডেনিস মামারা- মায়ের চেয়ে মাসির দরদ যদি বেশি না হয়, তাইলে মামারা যতটুক জানাইছে সেইটাই তো উপরি, জাতির মা-বাপেরা তো সন্তানরে কিছুই জানায় নাই। ফলে আমরা জানিনা এর আগে আমাদের ভারত মাসীর সঙ্গে স্বাক্ষর করা বিপা চুক্তিতে যেই সব জাতীয় স্বার্থ বিরোধী ব্যাপার-স্যাপার ছিল যেমন: যে কোন সময় বিনিয়োগকারী তার পুজি পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে পারবে, মুনাফা পুর্নবিনোয়গের বাধ্য বাধকতা থেকে সে মুক্ত, জাতীয় দুর্যোগের সময় বিনিয়োগের ক্ষতি হইলে বাংলাদেশের কাছ থেইকা ক্ষতিপূরণ পাইবে, সে Most-Favoured-Nation বা বঙ্গমাতার সবচেয়ে প্রিয় নাগর হিসেবে বিবেচিত হইবে ইত্যাদি আকথা-কুকথা ডেনিসগো সাথে করা চু্ক্তিতেও আছে কি-না। তয় সরাসরি না কইলেও হেরা যেমনে খুশিতে বাকবাকুম হইছে তাতে বুঝতে অসুবিধা হয়না যে তাগো ভাগ্যে কি শিক্কাটাই না ছিড়ছে- The agreement is first of all an important signal to Danish companies who want to invest in Bangladesh. They can now feel more confident when investing in the country. ডেনিস এম্বাসেডর এইনার এইচ জেনসেন যতই ইম্পর্টেন্ট সিগনালের কথা কন, যতই তাগো কনফিডেন্স বাড়ার কথা কন, আমাগো কইলজা ততই শুকাইয়া যায়! এখন প্রশ্ন, চুক্তি তো হইল কিন্তু সাধের বিনিয়োগটা হইব কই, কোন খাতে? সেইটাও আগ বাড়ায়া জানায়া রাখছে ডেনিসরা, তারা বলছে: The Danish Embassy in Dhaka is proud to announce that a delegation of approximately 20 Danish companies is coming to Bangladesh in the period 8th-13th November 2009. The companies are mostly active in production of components and services required for shipbuilding and similar industries. A few of the companies will also be in the fishery sector. The objective with the delegation is to introduce Danish companies to relevant local companies in order to explore possibilities for setting up long-term cooperation/joint venture where e.g. Danish know-how and investments will be combined with local knowledge and manpower skills. Click This Link মোট কথা জাহাজ নির্মাণ ও ফিশারি সেক্টরে তারা বিনিয়োগ করতে চায়, সেই জন্য তারা স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার করতে চায় যেন তাদের পুজি মোক্ষম উপায়ে স্থানীয় সস্তা শ্রম চুষতে পারে।

ফলে এই দুটি খাতের বিনিয়োগকারীদেরকে হয় তাদের সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চার করতে হবো অথবা বড় পুজির দাপটে নাই হয়ে যাইতে হইবো। এতদিন পাবলিকের টাকায় ভর্তুকী মূল্যে জ্বালানী পাইতো, শুল্কমুক্ত যন্ত্রপাতি আমদানীর সুযোগ ভোগ করতো কেবল দেশীয় পুজিপতিরা, নতুন চুক্তি অনুসারে এখন এই সব সুবিধা পাইবো ডেনিসরাও। যারা তাগো সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারের সুযোগ পাইবো তাগো দুএক জন হয়তো ফুইলা ফাইপা উঠবো( যদিও তাগো মুনাফার একটা বড় অংশ বিদেশীরাই নিবো) কিন্তু এই সব খাতের বাকি ছোট মাছেরা পুজির অমোঘ নিয়মে ঢুকবো বড় মাছের পেটে, সেই সাথে ধ্বংস হইবো সেই সব খাতের শ্রমিকগো জীবিকা। অথচ, জাহাজ নির্মাণ শিল্পের এই রমরমা অবস্থার সুযোগটা নিতে পারতো রাষ্ট্রীয় খাত- দেশীয় ইস্পাত শিল্পের বিকাশ ঘটায়ে জাহাজ নির্মাণের আধুনিক কারখানা স্থাপন করলে একদিকে যেমন আমদানি নির্ভর জাহাজ নির্মাণ শিল্প স্বনির্ভর হইতে পারতো, এই শিল্পের মুনাফা দেশেই থাকতো এবং জনগণের ভালো-মন্দে ব্যাবহ্রত হইতে পারতো, অন্যদিকে তেমনি শ্রমিকেরাও তাগো জীবিকার অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাইতো। ফিশারি সেক্টরের ক্ষেত্রেও একই রকম ঘটতে পারতো।

কিন্তু তা আর হইল কই? এতদিন পাবলিকের বাড়া ভাতে মুখ দিছে দেশী কুত্তা,এখন বিদেশী কুত্তারেও তার ভাগ দিতে হইব!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.