আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে...
পুলিশের কাছে এখন পর্যন্ত তাপসের ওপর বোমা হামলার বিষয়ে কোনো ক্লু কি আছে? আমাদের জানা নেই। এমনকি ধারাবাহিকভাবে যাদের আটক করা হচ্ছে, তাদেরও জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পুলিশের হাতে নেই। যেহেতু ব্যারিস্টার তাপস শেখ পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশের ক্ষমতা-কেন্দ্রের একজন অংশীদার, সুতরাং তিনি যা বলবেন, সেটাই শিরোধার্য পুলিশের। ফলে আমরা দেখছি, তাপস এখন যার দিকেই আঙ্গুল তুলছেন, পুলিশ সেখানে হামলে পড়ছে। হামলে পড়ে জানান দিচ্ছে, তারা পাঁচ বছরের এই মেয়াদে শুধুই শেখ পরিবারের আজ্ঞাবহ।
ইতিমধ্যে বোমা হামলার ঘটনায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মেজর ডালিমের ছোট ভাই কামরুল হক স্বপন, কর্ণেল রশিদের মেয়ে মেহনাজ রশিদ এবং অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদের দুই ছেলে নাজমুল হাসান সোহেল ও মাহবুবুল হাসান ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লে. কর্নেল (বরখাস্ত) ফারুক রহমানের ছেলে সৈয়দ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বঙ্গবন্ধু মামলার অন্যান্য আসামিদের স্বজনদেরও হয়তো সামনে আটক করা হতে পারে।
পুলিশ বলছে, বঙ্গবন্ধু হত্যামামলার রায়ের সময় আসামির স্বজনেরা আদালতে আপত্তিকর আচরণ করেছিলেন। তাপসের অভিযোগের বাইরে এটাই পুলিশী তদন্তের একমাত্র ভিত্তি।
জল ঘোলা করা সেই বাঘের গল্প মনে পড়ছে। আপত্তিকর আচরণ করতেই পারেন, হৈ-হল্লাও। কিন্তু সাদামাটা একটি প্রশ্ন জাগে মনে, যেখানে স্বয়ং মুজিব কন্যা এখন বাংলাদেশের অধীশ্বর, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র তার সেবায় অহর্নিশ ব্যস্ত, সেখানে কোন্ সাহসের ওপর ভর করে ফারুক-রশিদ-মহিউদ্দিনদের পুত্র-কন্যা-আত্মীয়-স্বজন মুজিব হত্যার রায় বানচালের চেষ্টা করবে? কেনই বা তারা তাপসের ওপর হামলার চেষ্টা করবে তারা, যেখানে বঙ্গবন্ধু হত্যামামলায় (আইনজীবী বটে) উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকাই নেই তার?
তবে আমরা বুঝি যে, হোক বীর উত্তম খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা, কামরুল হক স্বপন যেহেতু ডালিমের ভাই, সোহেল আর ইমরান যেহেতু মহিউদ্দিনের ছেলে- সুতরাং মামলায় জড়িয়ে তাদের হেনস্তা করা জরুরি। তারেক যেহেতু ফারুকের ছেলে, সুতরাং তার বিদেশে যাওয়া আটকে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মেহনাজ যেহেতু রশিদের মেয়ে, সুতরাং তাকে রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া ফরজ, তার ওপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালানো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
যেহেতু মেহনাজের একটি বাচ্চা আছে দুগ্ধপোষ্য, তাকেও পুলিশী রিমান্ডে নেওয়া আবশ্যক।
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গের হত্যাকারীদের বিচার ও শাস্তি হোক- এটা আমরাও চাই। তবে তাপসের ওপর হামলা নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার ও পুলিশ যা করছে, বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, তার পেছনে শ্রেফ ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা ছাড়া আর কোনো ভিত্তি আপাতত নেই। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিশোধ সবসময়ই প্রতিশোধের জন্ম দেয়!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।