আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একলা তনু অতনুরে বিনা............

পরাঞ্জয়ী...

শুভ্র চিঠির জবাব দাওনি। কেমন আছ তাও জানি না। এটির জবাব না পেলে আর লিখবো সে সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন! তবে আমার লেখার সম্ভব্যতার "হ্যা" বা "না" তে তোমার খুব বেশি ক্ষতি বৃদ্ধির সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই সে আমি জানি! ভাবছ অভীমান কিনা? না, অভিমান বল, অনুযোগ বল দুটোর কোনটিরই আব্দারের জায়গা তুমি নও! সুমনার, "মনা" টুকু যদিওবা টিকে আছে "সু" টুকু একেবারেই নেই। তাই ওসব অনুযোগ বা অভিমানের বালাই আমাকে টেনে বেড়াতে হয়না। তোমাদের খালি দড়ি গাছা দিয়ে হাত পা বেধে রাখাটাই চোখে পড়ে, মনের বাঁধন টা দেখবার বেলায় তোমরা অন্ধেরও অন্ধ হয়ে যাও! তাই মনটা যার অন্যের কাছে দেনার দায়ে বাধা পড়ে তার বিড়ম্বনা বুঝতে পারো না! তোমার সন্দেহ তোমাকে ভাল যখন বাসিনা ঘৃনা বোধ হয় নিশ্চয় করি।

কিন্তু ভাল না বাসলেই ঘৃনা করতে হবে সে কিন্তু মোটেও জরুরী না। আমাকে তো কতজনে ভালোবাসলো, কারও কারও ভালবাসার জন্য আবার আমাকেই অনেক কটূক্তি ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু ষোড়শীর মত বলতে হয়, কেউ যদি তার ভালবাসার কদর্যতায় জীবন আমার দূর্ভর করে তোলে তবে সে দোষও কি আমার?!!! শুভ্র, এখন কি ভাবি জানো? সেদিন যদি আমাকে অন্যের হাতে সম্প্রদান না করে কেউ স্বেচ্ছায় আমার কাছে নিজেকে সম্প্রদান করতো তবে বোধ হয় আজ অনেক কিছুই শুভ হত, অন্তঃত আমার নামের "সু" টুকু বেঁচে যেত দিব্যি!! আজ আর অভিযোগে কিই বা লাভ? দোষ যারই হোক, যা কিছু অশুভ, যা কিছু বিড়ম্বনা সে তো আমাকেই পোহাতে হয়! হতাশ আমি নই, বরং প্রত্যাশার একটু বাড়াবাড়িই আছে আমার! নয়ত টিকে থাকা বড় দূস্কর হয়ে যাবে। আর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এই জীবনটা এত অল্পতে খোয়াবার সখ আমার নেই। হারিয়েছি আমি অনেক।

এই "অনেক" এর হিসেব শুনলে চমকে যাবে তুমি। আর হারাতে চাইনা, কিছুতেই না। তাই "অতনু" নামের অদৃশ্য অঙ্গটি "তনু" থেকে আলাদা করে তবেই আমার অন্য কাজ! যত গন্ডগোলের মূল হল ঐ যজ্ঞের ব্যাটা "অতনুর"। যে বৈষয়িক ব্যাপারে চরম অনাসক্তি ছিল আমার, তাতেই আমার অচলাভক্তিকে ঠেলে ঠুলে জাগিয়ে তুলছি। আহা, সম্পদের সুখ কিন্তু ভালবাসার সুখের চেয়ে কম না!!!! মোটেও উপহাস করছিনা আমি! তবে অতনু ব্যাটা যতক্ষন ছিল ততক্ষন এই ধন-সুখে আমি মোটেও তৃপ্তি পাইনি! একেবারেই না।

তখন নুতন সোনার সীতা হার গলায় দিলে আমার কেমন অস্বস্তি হত, নুতন শাড়ির গন্ধে হাঁচি লাগতো, নুতন গাড়ির চেয়ে রিকশার খোলা হাওয়ায় চুল ওড়াতে দারূন লাগতো!!!! শুভ্র, আমার আমি টা মরে গেছে। তাকে বাঁচিয়ে তোলার বৃথা চেষ্টা নাইবা করলে। তাতে বোধ হয় আমাদের কোন পক্ষেরই বিশেষ সুবিধা হবেনা। লোকের কথায় কান দেবার অভ্যাস আমার কখনও ছিলনা, আজও নেই। তাই আমি দল ছাড়া, গোত্র ছাড়া।

তোমাদের প্রত্যাশিত কৌমার্য নেই বলে কোন অনুশোচনাও নেই। ওটা স্রেফ বাহুল্য বৈ কিছুই নয়। সংসারে টিকে থাকতে, পুত্র কন্যার অধিকারকে বজায় রাখতে অবলা নারীর এক ভন্ড অস্ত্র!!! মেয়েমানুষের সবথেকে বড় যে ধন তার খোঁজ তোমরা বোকা পুরুষরা কখনও পাওনা!! যদি একবার তার খোঁজ পেতে তবে তোমাদের সুখের সীমা থাকতো না! সবকথা গুলো যদি অভিযোগ বলে ধরে নাও, তাতে আমার আপত্তি নেই! বলতে গেলে কিছুতেই আমার কোন আপত্তি নেই। লড়াই করা তার সাথেই যায় যে আমার সমানে লড়তে জানে, তোমার মধ্যে আর যাই থাক আমাকে বুঝতে পারার দোষ টুকু একেবারেই নেই। একপাক্ষিক লড়াইয়ের কোন আবশ্যকতাও তাই দেখিনা।

ভাল থেকো, শুভ্র শুভ কামনায় সুমনা (লেখাটি কাল লিখেছিলাম, লেখাটি লেখার পরপরই রুহির মৃত্যুর খবর পাই তাই এটা আর দেয়া হয়নি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।