আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রিপন-এর মৃত্যু


শহরের বড় বড় রাস্তার পাশের গাছগুলো দাবী তুলেছে আমার মৃত্যুর তোমরা যারা জ্যাজ আর ভাটিয়ালীর তালে রক্তকে ভাড়া খাটাও তারা কি শুনতে পারছো – পাতার মর্মরে মর্মরে “রিপনের মৃত্যু চাই”?? ডাস্টবিনের সব আবর্জনারা আমার মৃত্যুর অর্কেষ্ট্রার কোরাস গায়ক, সেখানের মাছির ডানা আমার প্রাণের পিঠে মৃত্যুর ডানা এমন সেদ্ধ শহরে আমি দিতে পারিনি তাদেরকে; আতুরঘরে উড়ে বেড়ায় যেসব অদৃশ্য কফিন তেমন বাসযোগ্য ডাস্টবিন এর পারোলৌকিক প্রশান্তি তাই তাদের ক্ষোভের জাতীয় সঙ্গীত ““রিপনের মৃত্যু চাই”। সবজীর দোকানের পুইশাকের ডাটাগুলো যেন কুড়াল আমার পাকস্থলি চিরে ফেলতে তারা নরম থেকে রুপান্তরিত সবুজ ধাতবে- সেই সবুজ রিপনের মৃত্যুর রঙ্গে সবুজ। এমনকি শহরের ২০ টাকা মূল্যের পতিতারাও আমার বীর্যকে বরণ করে নিতে নারাজ; অনেক ভার সেই বীর্যের তাদের গর্ভাশয়ের কাছে যেন অখন্ড সেই ভারতবর্ষের ঘাড়ে চেপে বসা অজস্র ধর্মের রকমফের-এর ভার সেইসব বিভিন্নতা আজ মিলিত একবিন্দুতে- রিপনের মৃত্যু চেয়ে। পাতালে ডুবে যাচ্ছে ফ্লাইওভার- রিপনের মৃত্যুর দাবীতে, ATM মেশিন আর মুখ খুলছে না তার পায়ুপথে এখন শুধু একই দুর্গন্ধ ভরা শব্দ “রিপনের মৃত্যু চাই”“রিপনের মৃত্যু চাই”। বিয়ে ছাড়া সঙ্গমে রাজ়ী নয় প্রেমিকারা- রিপনের মৃত্যু না হলে। “রিপন তুই মর , তোর মা-কি তোর সাথে সাথেই তোর জমজ বোন করে মৃত্যুকে জন্ম দেয়নি!?” শুধু আম্বুলেন্সেরা রিপনের মৃত্যু চায় না কারণ তারা রিপন যে আছে সেই অস্তিত্বটাকে স্বীকার করতে চায় না, কলম অথবা কিবোর্ড রিপনের মৃত্যুপ্রেম নিয়ে লিখতে লিখতে ভাবছে আদতেই তারা জ়ীবিত কিনা? সব দরজাগুলো জানালা হয়ে গেছে আর জানালাগুলো কবরের মুখ রিপনের মৃত্যুর আশায় ছাদগুলো আজ আকাশ। রিপনের গিটারটা আজ তুলে দাও এক হাবিলদারের হাতে আর রিপনের আঙ্গুল ঢুকিয়ে দাও হাবিলদারের বন্দুকের ট্রিগারে কিন্তু রিপন তারপরেও বলছে “না - এইমৃত্যু আত্মহত্যা নয় এটাতো হত্যা - বাধ্যগত গুম খুন – “ কিন্তু প্রেসিডেন্ট সাহেব তা মানছে না। রিপনের অনেক দোষ আছে জানি যেমন ও ল্যাম্পপোষ্টকে ৩৩ পুরিয়া মাল খেয়েও চাঁদ ভাবতে পারে না আর চাঁদকেও ভাবতে পারে না প্রেমিকার মুখ; তবে মাঝে মাঝে গরুর মাংস ওর মাংসে দ্রবীভুত হলে চাঁদের গর্তকে যোনীগহবর ভাবতে ভালবাসে রিপন বুলডোজার দিয়ে উচুনিচু পথ সোজা করতে চায় না রিপন জারজ ছাড়া কার মুখ থেকে বাবা ডাক শুনতে চায় না তবুও সেই জারজ ভ্রুনগুলোই আজ পল্টন ময়দানে মিলেছে রিপনের মৃত্যুর দাবীর সমাবেশে। বিস্ময় লাগে সভ্যতার এই জ্যান্ত মম্যিরা রাস্তায় হাটতে হাটতে,অফিসে আর শপিংমলে রিপনের মৃত্যু কামনায় তাদের সন্তানদেরকে কোরবানী দেয়, রিপন ভোটদানে বিরত থাকে তবু তার ভোট না দেওয়া ব্যালটগুলোতে তার মৃত্যুর উপর সীল মারা থাকে রিপনের মৃত্যু চেয়ে শহর থেকে অনেক দূরে সরে গেছে নদী এমনি এক নদীর ধারে রিপনের পিতামহ জন্মেছিলো মানে রিপনের মৃত্যুর দাবী ওর জন্মের আগে থেকেই উঠে আসছে!!! রিপনের এই মৃত্যুর দাবী নিয়ে ও কি বলে?? “বাচতে তো ভালই লাগে, বাচা নিয়ে কবিদের সব গানেরা পাখি হয়ে যায় সবসময়, বাচলে মহা মহা ঘাঘু চিজের সাথে বসে চিজ বার্গার খাওয়া যায়, প্রেমিকার দেহের গভীরে গিয়ে তাকে রক্ত-চুম্বন করা যা্‌য়; মন্দির পুড়িয়ে তার পুরোহিত এর হাড় দিয়ে বাজানো যায় লিবিডোর ঢোল, প্রতিমার শরীর দেখে হাত মারা যা্‌য় আর প্রতিমা ভেঙ্গে কিছু সোনার বক বানানো যায়(হায় শিল্প! হায় ভাস্কর) যা বেচে কেনা যায় লাল রুটি আর সোনালী মদ। পৃথিবীর গূড় রহস্যে যে সমুদ্র নড়েচড়ে সারাদিন তার অতলে শৈবালের প্রাসাদ বানিয়ে ১১৯ বছর বয়সী এক বুড়ী ডাইনী প্রেমিকার শরীরের ভাঁজে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকাও যায়, সুর্যের গোলক থেকে এক আগুনের বল নিয়ে ম্যারাডোনা,পেলে,রোনালদো,মেসি,বেকহাম নামক বিনোদনের মহানবীদের লাফঝাপ দেখা যায় আর প্রিয়তমা তোমাকে আমার - প্লেটো না ফ্রয়েডের চোখে দেখা উচিত তা নিয়ে উদবিগ্নতায়,বিচ্ছিনতা্য় আর ঘেমে নেয়ে সময় কাটানো যায় তবু এই পৃথিবীর সরকারী সকালে কেরানী সুর্য বলে “রিপনের মৃত্যু চাই রিপনের মৃত্যু চাই “ তাই লেকের গভীরে এক এক নাড়ীছেড়া ঝিনুকের ভেতরে লুকোন সমুদ্রের সুর্যাস্তের খন্ড-বিখণ্ড আর বিধবস্ত লোহিত কণায় রিপনের মৃত্যু ভেসে থাকে একদল শিশু-বাতাস বলে “দ্যাখ দ্যাখ ঐতো রিপনের মৃত্যুহীন মৃতদেহ – ভাসমান এই শহরের কীটেরা পেয়েছে দ্যাখ কফিনের মত পরিচ্ছন্ন এক মাংসল ডাস্টবিন”
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।