আস সালাম - আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক
সামহোয়ার ব্লগে মাইনাস রেটিং এর জন্য নূতন নিয়ম হয়েছে। কেউ ব্লকড হলে সে আর ব্লককারী ব্লগারের পোস্টে মাইনাস রেটিং করতে পারবে না।
আমি এই নিয়ম টেস্ট করতে গিয়ে একজনের ব্লগের একটি পোস্টে মাইনাস দিলাম (যার ব্লগে আমি ব্লকড বলে জানতাম)। অপেক্ষা করছি কি হয় সেটা দেখার জন্য। দেখি মাইনাস রেটিং কাজ করল।
বিষয় কি? উল্টো হলো কেন? দেখলাম তার ব্লগে আমি আর এখন ব্লকড নেই - আনব্লক হয়ে গেছি। ধূর ছাই, অহেতুক মাইনাসটা পড়ল। যাহোক, আরেকজনের ব্লগে গিয়ে অবশ্য নিয়মটা ভেরিফাই করে আসলাম। তার ব্লগে এখনও আমি ব্লকড বলে মাইনাসের নিয়মটা টেস্ট করা গেল।
ব্লগার ফকির ইলিয়াস বলেছেন মাইনাসের এই নিয়মটির প্রস্তাব তিনি করেছিলান।
Click This Link
ফকির ইলিয়াসের জন্য যদি মাইনাসের এই নিয়ম চালু হয়ে থাকে তবে সেটা খুব একটা বড় অন্যায় নয়। কারন উনার এমন অনেক লেখায় মাইনাসের পাহাড় পড়ে যে সেটা খুব জঘন্য লাগে, নিজের কাছেই বিব্রত লাগে।
তবে এই নিয়মটির প্রস এন্ড কনস দুটো দিকই আছে।
প্রথমেই বলে রাখি আমি একজন মাইনাস খাওয়া ব্লগার। আমার পোস্টে মাইনাসের আধিক্য।
কিন্তু সেটা আমি কি করে যেন ইগনোর করতে পেরেছি। আমার একটি পোস্টে আমি বিডিআর বিদ্রোহে সরকারের ঢালাও সাধারন ক্ষমার বিরোধিতা করেছিলাম। ব্যপক মাইনাস পড়ে সে পোস্টে। পরে দেখা গেল সরকার নিজেই পিছু হঠেছে সাধারন ক্ষমা থেকে। আবেগ দিয়ে যে দেশ চালানো যায় না, সেটা সরকার দেরীতে হলেও বুঝতে পেরেছিল।
কিন্তু আমি তখন ঠিক একই কথা বলায় আম ব্লগাররা তা পছন্দ করে নি। গনহারে মাইনাস সহ্য করতে হয়।
সামহোয়ারে মাইনাসের ব্যপক অপপ্রয়োগের অন্যতম সফল একটি দৃষ্টান্ত হল মাহবুব মোর্শেদের উপর কিছু ব্লগারদের প্রতিশোধ নেয়া। এই মাইনাস অস্ত্র উনার উপর সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়। উনি কাবু হন এই অস্ত্রে।
নূতন নিয়মে এসব পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা যাবে সম্ভবত। ভুয়া নিকের অধিকারী হয়ে যাকে অপছন্দ করি তাকে মাইনাসের আধিক্য দিয়ে অপদস্ত করতে চাওয়ার চলে আসা বিষয়টা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রিত হবে।
কিন্তু অপর পিঠও তো রয়েছে।
মাইনাস কি লেখককে কিছুই দেয় নি।
পোস্ট ভাল কি মন্দ তা বোঝা যায় মাইনাস রেটিং দিয়ে।
মানুষের সেন্টিমেন্ট কোনদিকে সেটা বোঝার একটি দিক নিদের্শনা হল মাইনাস/প্লাস রেটিং।
সাধারনের মাঝে ব্লগারের গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু সেটাও বোঝা যায় মাইনাস থেকে। অতিশয় খারাপ পোস্টও কোন প্রিয় ব্লগারের কাছ থেকে এলে আমরা মাইনাস দিতে কষ্ট পাই। আর অপ্রিয় ব্লগারের পোস্টে ছুতো খুজি মাইনাস দেবার।
এই তিনটি কারনের দ্বারাই একজন ব্লগার মাইনাস রেটিং পেয়ে থাকে।
তাই মাইনাস একটি বড় শক্তিশালী ইনফরমেশন।
যেমন, আমার ব্লগে ইদানিং মাইনাস খুব বেশী আর দেখছি না। এর মানে ধরে নিচ্ছি, মানুষ এখন আর আমাকে ততটা অবিশ্বাস করছে না। আস্তে আস্তে আমার উপর মানুষের বিরক্তি কমে আসছে।
অথচ এই ইনফরমেশনটা সামনে থেকে জানতে হলে আমাকে এখন সবাইকে আনব্লক করতে হবে।
কিন্তু গালিবাজ, আর ফ্লাডিং এর রিস্ক তাতে পুরোপুরি থেকে যায়।
সবশেষে:
ফকির ইলিয়াস তার পোস্টে বলেছেন:
"আমার বিশ্বাস প্রকৃত লেখক-লেখিকারা এই সংযোজনে মুক্তির নিঃশ্বাস
নিচ্ছেন। "
আমার কিন্তু বরং মনে হচ্ছে আমি অনেক কিছু হারালাম (উল্লেখ্য আমি নিজেকে প্রকৃত লেখিকার কাতারে ফেলে থাকি)। আগে মাইনাসের জন্য হলেও গালিবাজ ব্লগাররা (যাদের ব্লক করে রেখেছি) আমার পোস্ট পড়ত। এখন সে দায়টা তাদের আর নেই।
নিঃশ্বাস ফেললাম, তবে তা আক্ষেপের।
বি: দ্র: এই পোস্টটি লেখার পর বুঝলাম নিয়মটি শুধু মাইনাস নয়, বরং প্লাসের জন্যও প্রযোজ্য। ব্লগের কিছু পোস্ট পড়ে আমার মনে হয়েছিল, এটা বুঝি শুধু মাইনাসের জন্য প্রযোজ্য।
স্যরি ফর দ্য মিসটেক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।