আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জগদীশ আইচ সরকার

মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।

জগদীশ আইচ সরকারঃ ব্রিটিশ-পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের এক লড়াকু যোদ্ধা (বাকী অংশ) চন্দ্রদ্বীপ। বরিশালের পূর্বনাম। এটি ছিল তৎকালীন বঙ্গ প্রদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। অগ্নিযুগের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামে বরিশালের অবদান নানাদিক দিয়ে শ্রেষ্টতম।

বরিশালের বানরীপাড়া ছিল সশস্ত্র বিপ্লববাদীদের তীর্থস্থান। বানরীপাড়ার পরে স্বরূপকাঠীর নাম উল্লেখযোগ্য। মূলত বরিশাল সদর ও বানরীপাড়ার পর স্বরূপকাঠীতেই বিপ্লবীদের তৃতীয় ঘাটি গড়ে ওঠে। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে স্বরূপকাঠীই সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী কমিউনিষ্টরা।

তাঁদের মধ্যে কমরেড জগদীশ আইচ সরকারের নাম সর্বজন স্বীকৃত। স্বরূপকাঠীর বুক চিড়ে বয়ে গেছে বিখ্যাত সন্ধ্যা নদী। নদীর দুই কূল ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য গ্রাম। কামারকাঠী তার মধ্যে একটি। স্বরূপকাঠী থানা সদর থেকে ১ কিমি দক্ষিণে এর অবস্থান।

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামের বহু নেতা-কর্মী ও সংগঠকের জন্ম এ কামারকাঠীতে। এ গ্রাম স্বরূপকাঠী থানার দেশপ্রেমিকদের তীর্থস্থান। কমরেড জগদীশ আইচ সরকারের জন্ম ১৯২০ সালের ১ জানুয়ারী। পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী থানার জলাবাড়ী ইউনিয়নের কামারকাঠী গ্রামে। বাবা ধনন্তরী আইচ সরকার।

মা কুসুমকুমারী আইচ সরকার। বাবা ধনন্তরী আইচ সরকার ছিলেন একজন নাম করা কবিরাজ। আদর্শ ও সততা ছিল তার জীবন-দর্শন। জমিজমা ভালই ছিল। যে কারণে কবিরাজ মশাই টাকা ছাড়াই মানুষকে চিকিৎসা ও সেবা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

মা কুসুমকুমারী আইচ সরকার ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী। তিনি ছিলেন পরোপকারী। দেশপ্রেমিক মানুষকে তিনি খুব পছন্দ করতেন। নানাভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করতেন। অসহায় মানুষকে তিনি সব সময় সাহায্য করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতেন।

ধনন্তরী আইচ সরকার ও কুসুমকুমারী আইচ সরকার পরিবারে ৬ টি সন্তানের জন্ম হয়। চার ছেলে ও দুই মেয়ে। ৬ ভাইবোনের মধ্যে জগদীশ আইচ সরকার তৃতীয়। বোনেরা তার ছোট। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে।

তারপর পাঠশালা ও প্রাইমারী স্কুলের পড়াশুনা শেষ করে নবকুমার ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। ওই স্কুলে সশস্ত্র বিপ্লববাদী যুগান্তর দলের আঞ্চলিক নেতা ডাঃ রাধিকা মোহন কর শিক্ষকতা করতেন। তিনি ছিলেন বিপ্লবী সূর্যসেনের অন্যতম সহযোদ্ধা। এই শিক্ষকের সাথে জগদীশ আইচ সরকারের ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জগদীশ আইচ ধীরে ধীরে এই বিপ্লবীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়লেন।

তিনি তখন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। ক্লাশে তিনি প্রথম শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি খেলাধুলায় বেশ পারদর্শী ছিলেন। স্কুলের স্পোর্টসে তিনি প্রায়ই প্রথম পুরুষ্কার অর্জন করতেন। এছাড়া তিনি গান, কবিতা আবৃত্তি ও অভিনয়েও ছিলেন পটু।

সহপাঠীদের নিয়ে নানারকম গল্প, উপন্যাস ও কবিতা আবৃত্তির আড্ডা জমাতেন। স্কুলের সকল ছাত্র তাঁকে পছন্দ করতো। ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০ সালে ডাঃ রাধিকা মোহনকে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগ দেখিয়ে গ্রেফতার করে বক্সার বন্দী শিবিরে আটক রাখে। ১৯৩৩ সালে ডাঃ রাধিকা মোহন তাঁর মায়ের শ্রাদ্ধ উপলক্ষ্যে ৭ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেলে তিনি প্রচুর মার্ক্সবাদী বই নিয়ে বাড়িতে আসেন। ‘বই পড়, শরীর গঠন কর’_ শ্লোগান নিয়ে পাঠাগার, ব্যায়ামাগার স্থাপন করলেন ডাঃ বাবু।

১৯৩৪ সালে তিনি মুক্তি পান। মুক্তি পেয়ে এলাকার ছাত্র-যুবদের সংগঠিত করে রাত জেগে বই পড়া শুরু করলেন। এই সকল বই পড়ে ছাত্র-যুবকরা কমিউনিষ্ট মতাদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হন। এতে যুক্ত হলেন জগদীশ আইচ সরকার। তখন তিনি নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

এ সময় তিনি নিজ স্কুলে ছাত্র ফেড়ারেশন গড়ে তোলেন। নিজে দায়িত্ব নিলেন সাংগঠনিক সম্পাদকের। সংগঠনের কাজের সূত্র ধরে ডাঃ বাবুসহ অন্যান্য কমিউনিষ্ট নেতা-কর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ধীরে ধীরে যুক্ত হন কমিউনিষ্ট পার্টির কাজে। এ সময় তিনি সমগ্র স্বরূপকাঠিতে ছাত্র ফেডারেশন গড়ে তোলেন।

১৯৩৮ সালে প্রখ্যাত ছাত্র নেতা বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় ও মনিকুন্তলা সেন ছাত্র ফেডারেশনের কাজে বানরীপাড়ায় আসেন। তাদের সাথে আলোচনা করে তিনি কমিউনিষ্ট পার্টি করার সিদ্বান্ত নেন। ১৯৩৯ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাসের স্বীকৃতি লাভ করেন। ম্যাট্রিক পাস করার পর বাগেরহাট পিসি কলেজে ভর্তি হন। সেখানে প্রায় এক বছর ছাত্র ফেডারেশনের সাথে কাজ করেন।

নানা প্রতিকুল পরিবেশের কারণে তিনি পিসি কলেজ থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। ১৯৪০ সালে চাখার কলেজে পুনরায় ভর্তি হন। এ সময় ডাঃ রাধিকা বাবুর পরামর্শে কমিউনিষ্ট পার্টির সাথে গোপনে গোপনে কাজ করতে শুরু করেন। কারণ ওই সময় কমিউনিষ্ট পার্টি নিষিদ্ধ ছিল। কমিউনিষ্ট পার্টির ডাকে আইএ পরীক্ষা বাদ দিয়ে পার্টির কাজে চলে যান।

শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পার্টির দায়িত্ব বেড়ে গেল বহুগুণে। দেশে তখন চলছে ভারত ছাড় আন্দোলন। একদিকে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা অন্যদিকে পার্টি গড়ার কাজ। সবই করতে হচ্ছে কমরেডদের।

সংগ্রামী সৈনিক জগদীশের কাজের অন্ত নেই। ছাত্র-যুব ও পার্টির কাজে ব্যস্ত সব সময়। এ সময় তিনি জনযুদ্ধ পত্রিকাও বিলি করতেন। ১৯৪২ সাল। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা।

চলছে যুদ্ধ। লক্ষ লক্ষ মানুষ মরছে এই যুদ্ধের কারণে। এ সময় তিনি পার্টির সদস্য পদ পান। ওই বছর কমিউনিষ্ট পার্টির কংগ্রেস ও বরিশাল জেলা পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি কংগ্রেস ও জেলা পার্টির সম্মেলনে স্বেচ্ছা সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৩ সাল। বাংলা ১৩৫০ সন। এই সনটি ইতিহাসে মন্বান্তরের সন হিসেবে পরিচিত। এই সময় ইংরেজ শাসকদের অবহেলার কারণে সারা বাংলায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দেয়। গ্রাম-বাংলার আনাহারী মানুষ খাবারের জন্য ছুটছে কলকাতার দিকে।

ওলিতে-গলিতে, রাজপথে-ফুটপথে অগনিত মানুষ ক্ষুধার তাড়নায়-যন্ত্রণায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। কাক ও কুকুরের সঙ্গে বুভুক্ষু মানুষ অখাদ্য-কুখাদ্য খুঁজে ফিরছে ডাস্টবিনে- নর্দমায়। এ সময় কমিউনিষ্ট পার্টি সারা দেশব্যাপী লঙ্গরখানা খুলে বুভুক্ষু মানুষকে বাঁচানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কামারকাঠীতে ডাঃ রাধিকা বাবুর নেতৃত্বে হিন্দু-মুসলমানের জন্য আলাদা আলাদা লঙ্গরখানা খোলা হয়। জগদীশ আইচের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে শত শত ছাত্র-যুবক এই লঙ্গরখানায় অনাহারী মানুষের সাহায্যার্থে কাজ করে।

দুর্ভিক্ষ ও মহামারী প্রতিরোধে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী থানা সফল হয়। এ সময় কমরেড জগদীশ আইচকে গ্রেফতার করা হয়। জেলখানায় বসেও জগদীশ আইচ কারাবন্দীদের নিয়ে গ্রুপ করে মার্ক্সবাদী পড়াশুনাসহ গণসঙ্গীতের আসর জমাতেন। তিনি ভাল গান পারতেন। জোর গলায় গাইতেন_চল চল চল/ দুর্গম গিরি কান্তার মরু/ মুক্তির মন্দির সোপান তলে/ কেউ বা সাদা কেউ বা কালা/ এখনো খোলেনি আঁখি যার/ প্রভৃতি।

দীর্ঘ কারা জীবন শেষে ১৯৪৯ সালে মুক্তি পান। ইতোমধ্যে ভারত স্বাধীন হয়। জন্ম নেয় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান। ১৯৫০ সালে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধালো। দাঙ্গা বিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুললো কমিউনিষ্ট পার্টি।

এ সময় বরিশালের প্রায় সকল কমিউনিষ্ট নেতাকে সরকার গ্রেফতার করে। মুকুল সেন ও জগদীশ আইচকে গ্রেফতার করতে সরকার ব্যর্থ হয়। জগদীশ আইচ আত্মগোপন অবস্থায় কলকাতায় চলে যান। ১৯৫২ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে এসে যুক্ত হন ভাষা আন্দোলনে। ভাষা আন্দোলনের পর বাটনাতলা বালক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।

জাতি গড়ার কাজে যুক্ত হন। ওই বছর পিরোজপুর জেলার মধ্য বাটনাতলা বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষাথী পাশ করে। এই স্কুলের ছাত্ররা শুধু শিক্ষায় নয়, সকল বিষয়ে পারদর্শী ছিল। তিনি কেবল ছাত্রদের শিক্ষক ছিলেন না বরং শিক্ষকেরও শিক্ষক ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বার্থে এরপর মালীখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গনকপাড়া,পাংগাসিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

জীবনের সর্বশেষ ইন্দুরহাট কলেজিয়েট একাডেমীতে শিক্ষকতা করেন। স্বরূপকাঠী থানার সকল মানুষ তাঁকে স্যার বলে ডাকতেন। তিনি ছিলেন সকলের প্রিয় জগদীশ স্যার। ১৯৫৩ সালে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে পার্টি মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে শত শত ছাত্র ইউনিয়ন নেতাকর্মীকে নিয়ে কাজ করেন।

এরপর তিনি যুক্ত হন শিক্ষক আন্দোলনের সাথে। দীর্ঘ দিন যুক্ত থাকেন এই আন্দোলনে। এছাড়াও যুক্ত ছিলেন এলাকার সকল সামাজিক আন্দোলনে। ১৯৫৬-৬৯’র গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত তিনি বৃহত্তর বরিশালে কমিউনিষ্ট পার্টি এবং মেহনতি মানূষের আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। অবশ্য এ কাজে তাঁকে মুকুল সেন, খোকা রায়, নলিনী দাস, নূরুল ইসলাম মুন্সিসহ আরো অনেকে সহয়তা করেন।

আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন ওই অঞ্চলের আতঙ্ক। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে তিনি বরিশালের ছাত্রদেরকে সংগঠিত করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে তিনি বরিশালের ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলেন। ৭০’র-এ স্বরূপকাঠীর ব্যাসকাঠীর কৃষক সম্মেলনের সকল আয়োজন তিনি করেন। এই সম্মেলনে প্রখ্যাত কৃষক নেতা জিতেন ঘোষ, হাতেম আলী খাঁ ও মহিউদ্দিন আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে জগদীশ আইচের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে বরিশাল জিলার অন্যতম সংগঠক তিনি। তরুণ ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমিক ও কৃষকদের রিক্রুট, ট্রেনিং, অস্ত্রশস্ত্র ও রসদের ব্যবস্থা করা প্রভৃতি এবং কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনার যোদ্ধাদের অন্যতম পরিচালক ও সংগঠক ছিলেন তিনি। ৭৩’র নির্বাচনে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন। ৭৪’র দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় আসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দেন।

৭৫’র বাকশালে যোগদানের বিরোধীতা করেন। ১৫ আগষ্টের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য পার্টির সিদ্বান্তে আত্মগোপনে যান। আত্মগোপনে থেকে তিনি খেলাঘর, ছাত্র ইউনিয়ন, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি ও উদীচীসহ আরো অনেক গণসংগঠনের কাজে যুক্ত থেকে ওই সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলেন। ৮২’র মার্শাল ল’ জারির প্রতিবাদের জন্য জনমত গঠন করেন। ৮৬’র ও ৯১’র নির্বাচনে পার্টির সিদ্বান্ত অনুসারে কাজ করেন।

৮৭’র কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৯০’র গণআন্দোলনে তাঁর ভূমিকা অনন্য। ৯২’-এ পার্টি ভাঙ্গনের সময় তিনি জোর প্রতিবাদ করেন এবং পরর্বর্তীতে পার্টি পুর্নগঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। তিনি ৯৫’র কংগ্রেসে তিনি ডেলিগেট নির্বাচিত হন। ৯৯’-এ তিনি পার্টির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সম্মাননা পান।

জগদীশ আইচের সকল কাজে যারা প্রেরণা যুগিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলো তাঁর সহধর্মীনি শেফালি প্রভা আইচ। তিনি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। স্বরূপকাঠী অঞ্চলের নারী শিক্ষা ও নারী মুক্তি আন্দোলনের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনন্য। একজন আদর্শ মা হিসেবে সন্তানদের আদর্শ রাজনীতির সঙ্গে তিনিই যুক্ত করে দেন। পার্টি কমরেডদেরকে নিজের সন্তান, ভাই-বোনের মতো মনে করে তাদের প্রতি সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতেন।

এজন্য কমরেডরা তাঁর বাড়ি নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে বিভিন্ন বিপদে-আপদে বেঁছে নিতেন। তাদের সংসারে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। গৌতম আইচ সরকার ও খনা চন্দ। বিপ্লবী জগদীশ আইচ সরকার ২০০১ সালের ১৯ জানুয়ারী মারা যান। (গতকাল প্রকাশের পর আজ ইতি)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।