আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জগদীশ চন্দ্র বসু

বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সারা পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব বিজ্ঞানীরা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অন্যতম। মানব জীবনের ন্যায় উদ্ভিদেরও যে জীবন আছে, আছে অনুভূতি শক্তি তা এই জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুই আবিষ্কার করেছিলেন। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় তার এ অবদান বিশ্বদরবারে সে কালে ঝড় উঠেছিল। তারই আবিষ্কৃত এসকোনোগ্রাফ যন্ত্রের মাধ্যমে উদ্ভিদের যে জীবন আছে তা তিনি বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন। জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ বসুর পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল গ্রামে।

তিনি ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহে তার নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল ভগবান চন্দ্র বসু এবং মাতার নাম ছিল সুরুজ বালা সাহা। তৎকালে পিতা ভগবান চন্দ্র বসু ফরিদপুরের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। সেই সুবাদে তার শৈশব জীবন ফরিদপুরেই শুরু হয়। ফরিদপুরে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি ১৯৬৯ সালে মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য প্রথমে কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন।

সেখানে বেশি দিন থাকেননি তিনি। সে বছরই তিনি ভর্তি হন তৎকালে ভারত বর্ষের নাম করা বিদ্যাপীঠ সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। ১৮৭৫ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় তিনি বৃত্তিসহ প্রথম বিভাগে পাস করেন। এরপর তিনি ১৮৭৭ সালে একই বিদ্যালয় থেকে এফএ পাস করেন এবং ১৮৮০ সালে তিনি বিজ্ঞান শাখায় দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর বিলাতে গিয়ে ইন্ডিয়া সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) ডিগ্রি লাভ করার কথা থাকলেও অর্থাভাবে তা হয়ে উঠেনি।

শেষ পর্যন্ত তিনি ১৮৮০ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য বিলাত গমন করেন। কিন্তু বিধিবাম হওয়ায় সেটাও তার পড়া হয়নি। হঠাৎ করে তিনি কালাজ্বরে আক্রান্ত হন। এ কারণে তিনি ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দিয়ে ১৮৮৩ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্ট কলেজ থেকে বিজ্ঞানের ৩টি বিষয়-উদ্ভিদবিদ্যা, রসায়ন,এবং পদার্থবিদ্যায় অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি দেশে ফিরে গবেষণা শুরু করেন।

এ ছাড়া ওই বছরই তিনি তার আবিষ্কৃত মাইক্রো এবং উদ্ভিদ শরীর বথিম বিদ্যার নবচেতনা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া তিনি নিজেকে গবেষণা কাজে নিয়োজিত করেন। তিনিই রেডিও এবং বেতার যন্ত্রের সূত্র আবিষ্কার করেন। ১৮৮৬ সালে গবেষণা কাজের খরচের জন্য তাকে তার বিক্রমপুরের (মুন্সীগঞ্জের) শ্রীনগরের রাঢ়ীখাল গ্রামের পৈতৃক ভিটা বিক্রি করতে হয়। এরও কিছুদিন পর ১৮৯৭ সালে তিনি রাঢ়ীখালের আরও কিছু জমি বিক্রি করেন।

এ সময় তিনি কলকাতার ১৩০ নম্বর ধর্মতলা স্ট্রিটে বসবাস করতেন। অবশেষে ১৯১১ সালে দিলি্লতে রাজা পঞ্চম জর্জের অভিষেক উপলক্ষে বিজ্ঞানী জগদীশ বসুকে ব্রিটিশ সরকার সিআইই উপাধি প্রদান করে এবং তার অসাধারণ বিজ্ঞানকর্মের ফল হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯১৭ সালে 'নাইট' (স্যার) উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি ১৯২১-১৯২২ সালে দার্জিলিং শহরে নিজের বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই সময়ে তিনি সালোক-সংশ্লেষণ কর্মধারার ওপর নানা ধরনের চিত্তাকর্ষক গবেষণা করেন। এ বিজ্ঞানী ১৯৩৭ সালে ইহলোক গমন করেন।

তার জীবদ্দশায় ১৯২১ সালে সেখানে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন ও কলেজের জন্য এবং সুরুজ বালা সাহা নামক স্কুলের জন্য তিনি বিশাল সম্পত্তি দান করেন।

* লাবলু মোল্লা, মুন্সীগঞ্জ

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।