যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।
মজহার সাহেব ইন্টেলেকচুয়াল এলিট কিনা সেটা নিয়ে তর্ক হইতে পারে। হইতে পারে তার অবস্থানের বিবিধার্ততা নিয়েও, সেই তর্কে গেলাম না। যে কোন অর্থেই এই ড্রেস কোডের এলিটিস্ট পজিশনালিটি নিয়া ত্যাক্ত।
আজকের প্রসঙ্গ লুঙ্গী নিয়ে, ২০০৭ সালের শেষ দিকে আমি আনন আর কৌশিকের সম্মিলিত একটি রচনা। আজকের এই পরিস্থিতিতে এই শেষ না হওয়া কবিতাটি যথার্থ মনে হচ্ছে...তাই আপনাদের জন্য তুলে দিলাম। (কেউ পুরোটা পড়ার সাহস কইরেন না, করলে নিজ দ্বায়িত্বে পড়বেন)।
একটি লুঙ্গী কবিতা
লুঙ্গিতে বীর্য লেগে আছে,
আলপনায় শীতল অভিলাষ
রমনীয় প্রলাপে আবার শিশ্ন শিল্পের অপেক্ষা,
অপেক্ষা ভেঙ্গে তরল নদীটার শিয়রে,
যৌবন প্রবল ইতস্তত!
হা হা হা লুঙ্গির ভেতরে লুকানো একটা
আস্ত এনাকন্ডা যেন
নাড়া দিলেই ফুঁসে ওঠার আত্মবিশ্বাস
তবুও প্রতঙ্গ শিথিল হলে
ভেতরে ভেতরে বয়ে চলে সেই নদীটারই ভাটিয়ালি ডাক
অথবা গোগ্রাসে গিলে ফেলে শীতলক্ষ্যার বানিজ্যিক ঠাপ
এখনও শান্ত নয় যোনী, ভর্তি ক্ষুধার মংগা
এখনও প্রকাশ হয়নি দেহ তার আগেই নতুন নৃত্য
আবার ফুঁসে ওঠা, আবার দলন পুরানো স্রোতে
কতটুকু গলিত গরল ঠুকেছে জরায়ুতে কতটুকু পীড়ণ
হিশেবে ক্লান্তি এখনও হয়নি রচা, অথচ শিশ্নের
আবারো নির্মাণ, উত্থান দেখে যোনীর নির্মোহ সংগমে
পুরুষ লুংগি ফুলে ফেঁপে পেটিকোটের সাথে কাটায় রাত!
আমাদের লুঙ্গি আর পেটিকোট গুলো, নিক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের কোণে
অসহায় পড়ে থাকে,
চেয়ে দেখে শারীরিক রেনেসা।
স্পর্শের আঁধার ভেঙ্গে, লুকাতে চায় আদিম অদম্যতা!
এটা একটা গল্প, অথবা একটা একই খেলা
আদিকালে একসময় শুরু করেছিলেন আদিপিতা
অথবা সেপিয়ানদের আগের শিম্পাঞ্জীরাও খেলতো বলে
এখন এই কবিতা লেখা, এখন এই অনুভবে জোড়া লাগানো
সংগমের ফসিল দিয়ে সাজানো ডজনে ডজনে লুংগি
বিপ্লব করে এবারের সংগ্রাম, ঠিক সেই নির্মাণের পুনরাবৃত্তি!
হয়তো, শিশ্নের পুঁজা হবে আদিম সতি মন্দিরে
অসতির আশ্রয় নেই, মৈথুন অভ্যন্তরে!
যদিও সতি-অসতি সবই শক্তিমানের খেলা
বিনির্মাণবাদী মগজে শিশ্নের পুরোনো দোলা
তাই এখনো গেঁথে রয় আমাদের ভেতরে যোনীবাদী শূয়া
মাতৃ জরায়ু ভীতির সেই একই কেঁপে ওঠা ধোঁয়া
জরায়ু বিভ্রান্ত এক নাগরিক মগজ
তার অসতি উচ্চারণে বাঁচিয়ে রাখে সন্তরণ
মরণ হোক তার, হোক জৈবিক আস্তরণ!
আস্তরণ বয়ে বেড়াই আমরা কোষেরও অভ্যন্তরে
চেতনায় সতিত্ব সামলাই শিশ্ন শূয়ার জোড়ে
অজ্ঞান থেকে শুরু হলো যাত্রা ভোরে
প্রথমেই শিশু, গোধূলীতেও শিশু
অথচ জরায়ূ ছেড়ে আবার সেই সূত্রধরে প্রবেশ
এক নিরর্থক সম্ভাষণে ভন্ডুল চিত্রবেলা।
শিলপাঁটায় শিশ্ন থেতঁলে তৈরি হয়েছে স্যুপ
অপরাধবোধের কর্ণ ফ্লাওয়ারে!
আসলে কেউ কেউ অহেতুক থাকে আধাঁরে!
আলো ভেবে অষ্ট প্রহরে খায় ধোঁকা,
বনসাঁই মন ভালোবেসে ইউক্যালিপটাস হতে চায় খোকা।
তাই খোকারাই লুকিয়ে থাকে এক আধটা স্তনের আড়ালে
৩২এর চোরাগলি আর একটি অপঠিত উপনিষদ শেষে
অবশেষে ফিরে যায় প্রথার আবডালে
বিবর্তন না মানলেও তুমি ঠিক বুঝবে
খোকার ভেতরে বয়ে চলে
সুখী গৃহের আশ
প্রাজ্ঞ যুবকের ফেলে দেয়া সিগারেট কুড়িয়ে হতে চায়
সভ্যতার লাশ
যদিও জগতে ভেঙ্গে চলেছে সভ্যতা, সতিত্ব আর সব পুরাতন বাহাস
তবুও কিছু প্রথা বেঁচে রয় হাতে নিয়ে খোকা শিশ্নের আশ
প্রথাবিরোধী মৈথুন তবু খেলে যায় অবেলায়,
স্বেচ্ছাচারী নৈরাশ্যবাদ যেন জৈবিক মাস্তান!
বাদানুবাদের চিড়া ভিজিয়ে খায়, ঘরে ফিরে যায়,
পয় নিস্কাশনে যেন প্রথারই পুর্নবিন্যাস,
আশাবাদী মন স্যুয়ারেজে বিকোয়,
তলপেটে জমা থাকে, বেহায়া অভিলাষ!
প্রথাবিরোধকেই প্রথা ভেবে যাদের বৃত্ত হয় পূর্ণ
বোঝা যায় খুব ভেতরে তারা খোকার মতই জীর্ণ
উপলব্ধী তাকে তাড়া করে বেড়ায় নিয়ত প্রথার মোড়ে
তবু তার ভাঙ্গেনা তো ঘুম, সে ছুটতে থাকে দু:স্বপ্নের ঘোরে
শান্তি বলে আঁকড়ে ধরা পুরোনো সেই অভিলাষ
অজৈবিক আশাবাদের গোপন নিশ্বাস
তবুও এই নিশ্বাসে বাধা দেয়না অবিশ্বাসী কেউ
শিশুর ভেতরে বয়ে চলে প্রথামৈথুনের ঢেউ
তবু অবাধ্যতার চাষ, মনে অপমানে
ম্যাজিকশো শেষে তুমুল করতালি
ঈশ্বরের মতো দর্শকেরে দেয় আশ্বাস!
মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে ঈশ্বর(!)
নিজের দাম হাকে, কীটপতঙ্গের বাজারে
নিজে কখন যে কীট হয়ে শুয়ে থাকে জুবুথুবু হয়ে,
নিজের জরাজীর্ণ অত্যাধুনিক আধাঁরে।
অখন্ড দেয়ালে বীর্যপাত মাধবকুন্ডের মতোই
ঝরায় ক্লান্ত বিশ্বাস!
কি প্রকট আহাম্মক, আদর্শের বুলি আসলেই
কতোটুকু ভাঙ্গে,কতোটুকু গড়ে
রাখে কি হিসাব!!
হা ঈশ্বর হা ঈশ্বর, লুঙ্গির ফোকর থেকে বেড়িয়ে থাকা
অবাধ্যতার গান
সবই পরিশেষে মানবিক অথচ শিশুর মুখে অতিমানবিকের
অভিমান
এ যেন সংজ্ঞায়নের মানবিক স্তুতিতে বেঁচে থাকার সেই পুরানো পাপ
চিহ্নিত দোষে সংক্রামিত সুরে আত্মপ্রেমের অপলাপ
ম্যাজিকগুলো তাই পুরোনো নয় কখনো
মানবের ভেতরে বয়ে চলা
নিরন্তর অনুগামী সুখ
আদর্শবাদের পুরাতন পরিধিতে
আটকে গেছ যারা
তাদেরই কেবল কামড়ে বেড়ায় করতালির দু:খ
মানবিকের আছে সবই ঈশ্বরের গুনাগুন
বেঁচে থাকার দুরুহ প্রদেশে
মর্ষকামী ধুনফুন
ইশ্বর বড় অশক্ত শব্দে মানুষের থেকে প্রকাশ্য
নড়বড়ে হেঁটে এ আমার বিশ্বাস বলে বিলায় তান্ডব
এক শক্তিমান মানব তার কীর্তিকে মহিয়ান করে
ইশ্বরের রাজপ্রাসাদে রক্তের, ঘামের সৌধে
জেগে ওঠে পৈচাশিক কালিঝুলি মানবের ভ্রূনে
এক ইশ্বর অসংখ্য ইশ্বর খুবলে খুবলে খায়
আর নিজের লুংগির ভিতরে ফোঁস করে দাগানো কার্তুজ
জন্ম দিয়ে যায় সভ্যতা তবুও তাকে কীর্তি বলে নাম লেখানো ফতোয়া
বিশ্বাস কে বিজ্ঞানের মত পুঁজো করে গ্যালাক্সি খোঁজে
এইবার এক ফুঁতে আবিস্কার হবে অক্সিজেন
আমাদের শ্বাসনালিতে বিন্দুর মত ঘাম ঢুকে
জানাবে এখানে আছেন অধীশ্বর, যাকে দেখো না
যার কোন চরিত্র নাই, ভূমিকা নাই, শক্তি নাই
তিনি বিপুল কল্পশক্তিতে আমাদের নির্মাণ করেন, করেন প্রজনন
আমাদের শিশ্ন শ্রম দেয়, লুংগি ঘামে, আর নাম হয় বিধাতার!
বায়োলজিকাল জটিলতায় মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র
হাসঁফাঁস করে,
তার সদ্য পরিহিত ফুলপ্যান্টে কতোটুকু আর ধরে!
লিঙ্গের?
বিপরীত গণনায় ফিরে যাওয়া কি সহজ করে দেয়
সরল থেকে তরলতর তৃপ্তির ঢেকুর নামে গলা বেয়ে!
জানেনা সন্তরণ তবু প্যাসিফিককে ভাবে বাথটাব,
কখনো কখনো কেউ ঈশ্বরের ভেতরে খোঁজে ঈশ্বরের অভাব!
হে মানব সন্তান, তোমরা কি বিস্মৃত হবে
সেইসব দিনের কথা,
তোমরা কি স্মরণ করবে না
ইশ্বরের সেই অমর জবানী-
আদিতে ইশ্বরও পরিধান করতেন লুঙ্গি।
এখন স্মরণ করো, লুত সম্প্রদায় কেন ধ্বংস হলো?
ইশ্বর কেনইবা ছাড়লেন পরিধানের লুঙ্গি!
অতএব হোক সে লুংগি, পেটিকোট, জাঙ্গিয়া, ব্রা বা
এসম্পর্কিত যা যা বিদ্যমান,
ছাড়োসব কচলাকচলির বয়ান-
বন্ধ কর অহেতুক পান্ডিত্যেপ্রসুত ভুল গণনা,
নিশ্চয়ই আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।
এ অমৃত অজানা,এ সুমিষ্ট ভুল বেদনা
আঁধারকে করেছে উজ্জ্বল!
আসলে , ক্ষমা করুন মহান ঈশ্বর! এ আমি নই
আমি নই ঈশ্বর! আমি এক প্রথা বিভ্রান্তির নিটোল ফসল।
ওরা সেনাবাহিনীর মতো ধ্বজ, নিস্তেজ কার্তুজ নিয়ে
খেলতে মজা পায়!
অতীতের মত ঘটনা পুনর্বার
তিনি দুদর্মনীয়, তিনি অলংঘনীয় বলে
মাথা নত করে দুর্জনেরা
তার পিংগল পশ্চাতে কামড়ে দেয়া সেনাবাহিনী একদা
আমাদের সন্তান ছিল, আমাদের অংশ ছিল বলে
আজও সিংহাসনচ্যুতির ভয়!
মাত্র কয়েকজন গুনগ্রাহী প্রজারা তার মন্দিরে
আরাধনায় নিয়ে আসে আমাদের মৃত মস্তক
নিজের হাতেই খুন করে!
প্রেয়সী, অনুপমা, মুগ্ধ প্রতিমা এ সবই আমার দেয়া তোমারই নাম
মানব প্রতিভার দূর্লঙ্ঘ সৃষ্টি,
মহামহিম তোমার দেয়া জীবনের দাম
অথচ দেখ, কি নির্বিকারে আমরা সবাই করি তোমারই উপাসনা
তোমার রূহ নিয়ে করি বসবাস অথচ তোমাকেই হয়নি জানা
আমি জানি ঠিক, তুমি কোথাও পাও সুখ
তোমার মধ্যে বসবাস করে মানবীয় অনেক অসুখ
তাহলে এর সবই কি তোমার উপাচারের পরিকল্পনা
ভালোবাসায় ক্ষত সারাও অথচ মুগ্ধতাকে হয়নি জানা
আজ সকলে যখন চিৎকারে বলে
এখানেই হল শেষ
মৃদু হেসে আমি বলি মারা যাচ্ছে ঈশ্বরের দেশ
অথবা আরো কয়েকটা সংঘর্ষের পরে
যখন ইস্রাফিলের বিষাদের সুরে শেষ হবে এই খেলা
তখনও শেষ হয় না বলে জানান ইশ্বর
সে এক শুরুর যাত্রা, সৃষ্টিরই যাত্রা আর নামাঙ্কিত এই দেশকাল
কোন শুরুতে বা শেষে কোন সৃষ্টি বা ধ্বংসে বর্ণিত নয়
এর আছে বিরাজমানতা, এক অব্যয় শূণ্যতার মহাসত্যি
ইশ্বরের আগেও ইশ্বর, অথবা এর আছে শেষে নতুন ইশ্বর
তারা সব আমাদের মত, পূর্বপুরুষের মত আর সন্তানের মত
তাদের মাঝে বেঁচে থাকে এক প্রবাহ, তার নির্মাণে আরো হাজারো দেশকাল
কোটি কোটি শক্তিমান আর শক্তবাক যাদের বল, ধন আর মানে
নতুন এক শুরু-শেষ খেলা খেলে
একদিন ঘোষণা করে এর মানে নেই যথাতথা যত্রতত্র মেরু!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।