আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একখানা ভটভটি সমাচার

মানুষেরে করি ভক্তি

রাস্তায় বের হলেই একখান মোটর সাইকেলের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করি। যে দিন কাজে তাড়া থাকে দেখা যায় টেক্সী বা রিক্সা নেই, থাকলে ভাড়া মাশাল্লাহ আওতার ৪ গুন বাইরে। মেজাজ গরম হইয়া যায়। আবার ইদানিং টেম্পু চড়তেও ডর করে, বলা যায় মানসিক ভীতি তবে বাস্তব বটে। সিএনজি চালিত টেম্পু গুলোর সিলিন্ডার প্রতি ৪ বছর অন্তর প্রেশার টেষ্ট করানোর নিয়ম থাকলেও কে শোনে কার কথা।

যার জন্য এগুলো এক একটি জিবন্ত বোমা। কখন যে বুম করে । তাই আমার একখান মটর সাইকেলের শখ জাগিল। কিন্তু জাগিলে তো আর হইবেনা, সাধ্য থাকা চাই। প্রথমে বাসায় বলিলাম।

শুনিয়াই ফায়ার হইলেন মা বাবা। অসম্ভব, তোমার ঠ্যাং ভাংগিবে, একসিডেন্ট হইবে ইত্যাদি অনেক বিপদ। তার চেয়ে যত টাকা যায় যাক সময় নষ্ট হোক, টেক্সী বা রিকশা ই ভালো। ছোট বোন আরেক কাঠি সরেস। সে বলে আগে তোর বিয়ে হোক তারপর কিনিস, এখন কিনিলে ঠ্যাং ভাংগা পোলার জন্য বউ পাওয়া যাবেনা।

আমার কষ্ট উহারা বুঝিলোনা। তাই আমি নতুন ফন্দি আটিলাম, বলিলাম এখানা চার্জের স্কুটার কিনি। ইহাকে এমন ভাবে উপস্থাপন করিলাম যেন বাবুরাম সাপুড়ের সাপরে মতো যাহা নামেরই স্কুটার কিন্তু অতিব সাধারণ , গতি কম, ছোট চাকা ইত্যাদি। কিন্তু পাথর নড়েনা। পাথর না নড়িলে আমার টাকা কোথা হইতে আসিবে? কিঞ্চিত রাজি হইলেন মা জননি।

কিন্তু টাকা দিবেন কম। মহা আনন্দে খোঁজ লইলাম চার্জ স্কুটারের। হায় আল্লাহ বলে কি ! দাম ৪০ হাজার টাকা, তার উপর চার্জের ঝক্কি, ঢালু পথ বাইতে সমস্যা সার্ভিসিং ইত্যাদির সমস্যার কথা অভিজ্ঞ জনরা চরম আপত্তি করিলেন। হায় আমার কি হইবে? অবশেষে একদিন এক পূর্ব পরিচিত বড় ভাই তাহার পিতাজির ১৯৯০ সালের বাজাজ বেসপা খানার কথা আমাকে বলিলে আমি মহা আনন্দে ক্রয় করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিলাম। এক পর্যায়ে দাম নির্ধারিত হইলো, সার্ভিসিং সহ আরো কিছু টাকা গাথিয়া আমি অবশেষে একখান ভটভটির মালিক হইলাম।

সে কি মহা আনন্দ আকাশে বাতাসে! এবার শিখিবার পালা। কোন রকমে চালানি শিখিয়া মনে হইলো আমি এইবার সড়কে উঠিবার যোগ্যতা অর্জন করিয়াছি। পরেরদিন বাসার কাউকে কিছূ না বলিয়া চুপি সরে ভটভটি লইয়া চলিলাম, পথে পথে ভটভটি এমন আচরন করিলো আমার সাথে যেন সে মীর জাফর। সে বাক দেখিলে থামিয়া যায়, পুলিশ দেখিলে ঘো ঘো শব্দে দাড়াইয়া য্য়। আমার অবস্থা কেরোসিন।

ভয়ে জিব শুকিয়ে কাঠ। মাথা ঘুরা শুরু হইলো। কোন রকমে চকবাজার পৌছিলাম। আসার সমসয় যত ঘনাইয়া আসিতে লাগিলো আমার মনে হইলো ইম আস্তে আস্তে ফাঁসির মঞ্চের দিকে যাইতেছি। ছেড়ে দে মা কাইন্দা বাচি অবস্থা।

হে জগদিশ্বর!!! ক্লাস এইটের বৃত্তি পরিক্ষায় এই রকম ভয় পাইয়া ছিলাম। হা! এখন আমি মনের আনন্দে আমার ভটভটি চালাইতে পারি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।