মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। ঘুম পাড়ানি মাসি পিসির ছড়াটা মনে হয় ব্লগারদের একটু বেশীই পছন্দ। যদি তাই না হবে তবে কেন দালালদের হাতে চলে গেল গন জাগরনের নেত্রীত্ব? আজ ব্লগার থাবা নিজের জীবন দিয়ে প্রমান করে গেল দালালরা নেত্রীত্বে থাকলে তার পরিনতি কি হয়। আজ দালালরা যখন মঞ্চ থেকে গন জাগরনের মৃত্যু ঘোষনা করল, থাবা নিজের জীবন দিয়ে সেই গন জাগরনের মৃত্যু ঠেকিয়ে দিয়ে গেল। এরপরও ব্লগারা চেয়ে থাকবে দালাল নেতাদের পানে?
নাকি থাবার রক্তের ঋন শোধ করবে?
প্রিয় ব্লগার সাথী ও বন্ধুরা আজ সেই ক্ষন এসে হাজির হয়েছে আপনার কি এখনো বসে থাকবেন? নাকি থাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিবেন?
যদি আপনার ভিতর বিন্দু পরিমান দেশ প্রেম থাকে তবে আসুন থাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি এবং আমাদের ৫দফা দাবী আদায় না করে ঘরে ফিরবো না।
{"প্রজন্ম চত্তরের (শাহবাগ মোড়) গণজাগরণ মঞ্চের অপরাজেয় তরুন প্রজন্ম ও সমাজের সকলস্তরের জনগন প্রতি,
ঢাকার প্রজন্ম চত্তরে (শাহবাগ মোড়ে ) সমবেত হয়েছে লাখ লাখ প্রতিবাদী তরুন যুবক সর্বস্তরের মানুষ ।
যুদ্ধাপরাধী মনাবতা বিরোধীদের বিচারের দাবী এখন শুধু প্রজন্ম চত্তরে সীমাবদ্ধ নেই । ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে ও প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যেও । এমনকি এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ।
"দাবী একটাই, যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই ।
"
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি পালনকারীরা নিজেরা তাদের সহকর্মীদেরকে এবং অন্যদেরকেও নিজ নিজ কাজ স্বস্ফূর্তভাবে করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
জনগণের জীবন যাত্রা স্বাভাবিক গতিতে অব্যাহত রাখতে সমাজের সকল অংশ থেকে সহায়ক শক্তি হিসেবে ছাত্র, যুবক, শিক্ষক, পেশাজীবী, শ্রমিক, কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার উদ্যাগী মানুষদের নিয়ে ৩ বা ৫ বা ৭ সদস্য বিশিষ্ট বিগ্রেড গড়ে তুলতে হবে। এসব বিগ্রেডের প্রত্যেকের কাজ স্বেচ্ছাসেবক ধরনের হবে। এই বিগ্রেড সমূহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে, স্তরে ও পর্যায়ে গঠিত হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় বড় জেলা শহরে এই বিগ্রেডের গঠন ও কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে কাংখিত লক্ষ্যে, এই গণ জাগরন ও আন্দোলন সম্পুর্ন অদলীয় কেউ যদি এই আন্দোলনকে দলীয়করন চেষ্টা করে তাঁকে গণজাগরণ মঞ্চের দায়িত্ব নেতৃত্ব থেকে অবশ্যই সরে দাড়াতে হবে। "}
আমাদের দাবী ৮ দফা
দফাঃ ১, সকল যুদ্বাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারী ভাবে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের লিষ্ট তৈরী করতে হবে। সরকারী প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে রাজাকারদের সামাজিক ভাবে বয়কট ও তাদের প্রতিষ্ঠান সমূহ জাতীয় করন করতে হবে। যদি কোন ব্যক্তি বা মহল তাদের সাথে কোন প্রকার সামজিক সম্পর্ক ও লেন-দেন করে তবে উক্ত ব্যক্তি বা মহলকেও একই পরিনতি ভোগ করতে হবে।
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারি জামাতসহ যে সকল দল হানাদারদের সহযোগীতা করেছে , সে সকল রাজনৈতিক দল গুলোকেও ৭১ এর হানাদারদের সহযোগীতার অপরাধে জাতীয় সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষনা করতে হবে।
দফাঃ ২, যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চত করনের জন্য ৭১ এ শহীদ ও নির্যাতিত পরিবার গুলোকে বিচার কার্যের সাথে সম্পৃক্ত করে তাদের পূর্ব পুরুষদের রক্তের ঋন শোধ করার সুযোগ দিতে হবে।
দফাঃ ৩, জার্মানির ফ্যাসিস্ট পার্টিকে যেমন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছিল তেমনি পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী জামাত , ছাত্র সংঘ (যা ইসলামি ছাত্র শিবিরে রুপান্তরিত) , মুসলিম লীগ , পি পি পি (অবলুপ্ত), নেজামে ইসলাম প্রভৃতি কে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে আপরাধ সংগঠিত করার দল হিসাবে প্রতিষঠানিক ভাবে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং তাদের বিচারের জন্য আইন প্রণয়ন করা হোক
দফাঃ ৪, দেশের খ্যাতিমান আইন বিদগনকে বিচার কাজে সহযোগিতা করার জন্য আহবান করতে হবে। যাতে করে দেশের সাধারন জনগনের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় কারা যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারের বিচারের বিপক্ষে।
দফাঃ ৫, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ছিলঃ
(ক) একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভুখন্ড, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত।
(খ) কমিটমেন্ট ছিল সকল শ্রেনী পেশার জনগনের অধিকার ও কর্তৃত্ব, অর্থনৈতিক মুক্তি, শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়ীক চেতনা ও সুস্থ-সন্ত্রাসমুক্ত দেশ।
প্রথমটি অর্জিত হলেও দ্বিতীয়টি অসমাপ্তই রয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার বান্ধব বিভিন্ন মহল প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছে দেশ ও বিদেশে এই বলে যে, স্বাধীনতা প্রজন্ম চত্বরে ঢল নামা লক্ষ জনতার জড়ো হওয়াটা সরকারের একটি মহলের কাজ। অতএব অবিলম্বে দ্বিতীয় কমিটমেন্টটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারকে তারুন্যের এই গন জাগরনকে সন্মান প্রদর্শন করতে হবে।
দফাঃ ৬, অবিলম্বে দেশের প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে ৭১ এর শহীদের তালিকা তৈরী করে গ্রাম ভিত্তিক শহীদের নামের তালিকা সহ একটি ফলক তৈরী করতে হবে।
যাতে করে দেশের সকল মানুষ তাদের জন্য কোন বিশেষ দিনে শ্রদ্ধা না দেখিয়ে বরং প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধা দেখানোর সুযোগ পায়। এবং সেই সাথে গ্রাম ভিত্তিক রাজাকারদের তালিকা প্রনয়ন করতে হবে যাতে করে বাংলার মানুষ ৭১ এ তাদের কৃত কর্মের জন্য সামাজিক ভাবে বয়কট ও ঘৃনা প্রকাশ করতে পারে। এবং এই লিষ্ট তৈরীতে স্থানীয় সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
দফাঃ ৭, চলমান আইন সংশোধন করে নিশ্চিত করতে হবে , মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ ধারা মোতাবেক 'রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার' "( Article-49, Prerogative of mercy)" আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কতৃক সাজা প্রাপ্তদের জন্য প্রয়োগ করতে পারবেন না
দফাঃ ৮, উপরে উল্লেখিত ৭ দফা যদি সরকার পূরন না করে তবে বর্তমান আন্দোলনকে বিস্তৃতিরত করে এবং দলীয়করন যেন না হয় সে জন্য সারা দেশে বিগ্রেড গঠন করা হবে সে লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র গ্রাম, পাড়া, মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্রমিকপ্রতিষ্ঠান, কর্মচারীপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান সহ সকল স্তরে এবং সকল পর্যায়ে অতি দ্রুত ব্রিগেড গঠন করা হবে। ব্রিগেড গঠনের কাজটি সারা দেশে এবং সকল কর্ম ক্ষেত্র ব্যাপী হবে।
এক একটি গ্রামে, এক একটি ইউনিয়নে, এক একটি শিল্প এলাকায়, এক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একাধিক ব্রিগেড গঠন করা হবে এবং এই ভাবে সারা দেশে কয়েক হাজার , এমনকি কয়েক লক্ষ ব্রিগেড সদস্য থাকবে যতদিন না আমাদের দাবী মানা হবে। প্রয়োজনে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।