স্বপ্নগুলো সত্যির প্রত্যয়ে পথচলা ............
ঈদ সকলের ভাল কাটুক সেই প্রতাশ্যায় সকল কে আবারো বলছি ঈদ মোবারক। আজ ঈদের দিন সামু ব্লগের সবার জন্য আমার এই ছোট টেলি-গল্প পোস্ট। ভাল লাগলেও লাগতে পারে আবার নাও লাগতে পারে।
শুরু.............
কি রে শ্রাবন তুই কোথায়?
আমি আসছি। তুই কোথায় আছিস?
আমি তো ভার্সিটি তে।
আচ্ছা আমি আসছি রে একটু ওয়েট কর।
আচ্ছা তাড়াতাড়ি আয়।
প্রমা আর শ্রাবন দু'জন অনেক ভাল বন্ধু। যাকে বলে জিগার দোস্ত। একটা ভাল বন্ধুর মধ্যে যতটুকু গুন থাকা দরকার সবই আছে তাদের মধ্যে।
তাদের দু'জনের প্রথম দেখা হয় ট্রেন ইস্টেসনে। প্রমা আসে রাজশাহী থেকে আর শ্রাবন আসে সিলেট থেকে। দু'জনে ওয়েটিং রুমে বসে ছিল। প্রমা তার চাচার জন্য অপেক্ষা করছিল আর শ্রাবন তার মামার জন্য। ঢাকা শহরে দু'জনে প্রথম আসে।
প্রমা বসে শ্রাবনের পাশের চেয়ারে। শ্রাবনের প্রচুর পানির পিপাসা পায় তাই শ্রাবন প্রমার কাছে পানি চায়। তারপর আস্তে আস্তে কথা হয় এবং দু'জনের মাঝে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে শ্রাবন প্রমা এক সাথে ভার্সিটি কোচিং করে এবং একই জায়গায় দু'জনের চান্স পেয়ে যায়। দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ত্ব তাদের।
ঝঞ্জড়া-ঝাটি,কবিতা-গান সব কিছু মিলে দু'জনের বন্ধুত্ত্ব দারুন কেটে যাচ্ছে।
প্রমা বসে আছে তাদের পছন্দের জায়গায়। শ্রাবন অনেক গুলো বেলী ফুলের মালা নিয়ে এসে প্রমা কে পিছন দিক থেকে এসে বলল আফা মালা নিবেন,নেন আফা বেশি না ৫ টাকা। প্রমা বুঝতে পারে নি শ্রাবন একথা বলেছে তাই বলল- এত গুলো মালা মাত্র ৫ টাকা। পিছনে ফিরে দেখে শ্রাবন।
প্রমা বলল- তুই! শয়তান। তাই তো বলি এতগুলো মালা এত কম দাম।
শ্রাবন বলল- বেলী রোডে দেখলাম বেলী ফুল তাই তোর জন্য নিয়ে আসলাম। নে এগুলো তোর জন্য।
প্রমা বলল- আমি চিন্তা করি দেরী করে কেন? আর তুই আমাকে বেলী ফুল দেছ।
আমি তো চিন্তা করতে করতে আর দোয়া করতে করতে শেষ। আমি কল করার পর আবার রিং দিলাম দেখলাম ফোন অফ। কি চিন্তায় না ছিলাম তুই জানিস।
শ্রাবন বলল- জানতাম করবি তাই অফ করছি। আসলে তুই আমার জন্য চিন্তা করিস ভাবতে ভাল লাগে।
প্রমা বলল- ও তাই বুজি আমাকে চিন্তায় ফেলতে তোর ভাল লাগে। শুন এমন একদিন আসবে যেদিন তুই আমাকে ভাববি। কিন্তু আমি তোকে ভাববো না।
শ্রাবন বলল- আরে কত বলবি দেখবি ভেবে বেশি করবি আর সারাদিন প্রার্থনা করবি। শুন!
প্রমা বলল- আজাইরা।
বল কি বলবি?
শ্রাবন বলল- তোর বিয়ের পর যদি তোর মেয়ে হয় তাহলে তার নাম প্রার্থনা রাখিস। তাহলে আমার জন্য তোর চিন্তা হবে সাথে প্রার্থনাও করবি; আমার জন্য। হা......হা........হা
প্রমা বলল- হে.......হে! আমি বিয়ে করলে তো, আমার মত মেয়ে কে জীবনে কোন ছেলে বিয়ে করবে না।
শ্রাবন বলল- কেন?কেন? করবে না কেন তুই কি কানা নাকি খোঁড়া। তোকে যে ছেলে বিয়ে করবে সে তো একটা রানী পাবে।
প্রমা বলল- তাই বুঝি! যাক ভাল বললি। কিন্তু তোর কপালে তো রানী নাই সাথে দাসী ও জুটবে না। তোকে কেউ বিবাহ করিবে না। বুঝলি।
শ্রাবন বলল- কেন? কেন এই কথোন কেন এই বুলি? আমি কি দেখতে এত খারাপ?
প্রমা বলল- সুন্দর আর বাচাল দেখেই তো মেয়ে পটাতে পারিস।
কিন্তু কত দিন। হি........হি
শ্রাবন বলল- আচ্ছা বিয়া-শাদি বাদ। কয়টা বাজে বল?
প্রমা বলল- এতক্ষনে কথা লাইনে আসছে। বাজে ১১টা।
শ্রাবন বলল- আসাদ সারের ক্লাস না এখন।
প্রমা বলল- হ্যা চল। আর ধন্যবাদ তোকে।
শ্রাবন বলল- কেন?
প্রমা বলল- বেলীর জন্য।
শ্রাবন বলল- এটা বলা লাগে, চল।
রাতে প্রমা শ্রাবন কে ফোন করে।
কিরে কি করিস?
শ্রাবন বলল- বান্দরের সাথে বান্দরামী করি।
প্রমা বলল- ফাইজলামি রাখতো। কি করছিলি বল?
শ্রাবন বলল-না তেমন কিছু না। জানিস আমি না তোকে নিয়ে কখনো কবিতা লিখিনি। কিরে চুপ কেনো?
প্রমা বলল- আচ্ছা তুই কেন আজ ওই বিষয় নিয়ে ফাইজলামী করলি।
শ্রাবন বলল- কোন বিষয় রে? মনে করতে পারছি না। একটু বলনা।
প্রমা বলল- না থাক কিছু না। ভাল লাগছে না কিছু।
শ্রাবন বলল- তোর কি শরীর খারাপ নাকি মন,বলতো।
কি হইছে?
প্রমা বলল- কিছু না। রাখি রে,ভাল থাকিস।
শ্রাবন বলল- আচ্ছা রাখবো ভাল কথা, কিন্তু তোর কি হয়েছে বলবি না?
প্রমা বলল- না রে; পরে দিন বলবো। খোদা হাফেজ।
শ্রাবন বলল- আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ।
ঘুমা; কাল তো দেখা হচ্ছে।
প্রমা বলল- ঠিক আছে, রাখি।
পরদিন ভার্সিটিতে
শ্রাবন আগে এসে লাইব্রেরীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। একটু পর প্রমা আসলো।
শ্রাবন বলল- কি রে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?
প্রমা বলল- আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
শ্রাবন বলল- কি? তোর বিয়ে! তোর বিয়ের বয়স হইছে না কি?
প্রমা বলল- ফাইজলামি করিস না। আমি সিরিয়াসলি বলছি।
শ্রাবন বলল- তাই! তাহলে ভাল কথা। তোর বিয়েটা খাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।
প্রমা বলল- প্লিজ; ফান করিস না।
যদি পারোস আমার বিয়েটা বন্ধ করার ব্যবস্থা কর।
শ্রাবন বলল- তুই কান্না করছিস কেন। তোর বিয়ের বয়স হইছে বিয়ে কর আর পরিবার যেটা চায় সেটাই করা ভাল। তা ছেলে কি করে?
প্রমা বলল- ব্যবসা করে। অনেক বড় লোক।
শ্রাবন বলল- ভাল। অনেক ভাল, তা কবে বিয়ে।
প্রমা বলল- শ্রাবন তুই, তুই একথা বললি। আচ্ছা আমি গেলাম, ভাল থাকিস তুই।
শ্রাবন বলল- আরে পাগল কই যাস।
প্রমা বলল- বাসায় যাই। তুই তো কিছু করতে পারবি না?
শ্রাবন বলল- আচ্ছা ভাল কথা, আমাকে দাওয়াত দিবি না?
প্রমা বলল- কিছু করলিনা; তুই ভাল থাকিস রে। আর দেখা হবে কি না জানি না।
শ্রাবন বলল- এই তুই কাল আসবি না ভার্সিটিতে?
প্রমা বলল- বেঁচে থাকলে দেখা হবে।
রাতে শ্রাবন প্রমার কথা চিন্তা করে আর তার মাঝে খারাপ লাগতে শুরু করে।
শ্রাবন অস্থির হয়ে পড়ে সে ভাবতে থাকে;-
প্রমা সেই প্রথম দিনের বন্ধু আমার। কখনো কোন রাত তাকে নিয়ে আমি ভাবিনি। কোন দিন ভাবিনি আমার আর ওর মাঝে অন্য কেউ আসবে। আমাদের দু'জনের বন্ধুত্তের সম্পর্ক কে কেউ ভেঙ্গে দিবে,কখনো ভেঙ্গে যাবে। আমার এত খারাপ লাগছে কেন? ওত আমার ভাল বন্ধু ছিল এর বেশি কিছু নয়।
ওর বিয়ে হতে পারে তাই বলে এত খারাপ লাগার কারণ কি? নাকি, নাকি আমার আর ওর বন্ধুত্তের চেয়ে বেশি কিছু ছিলো। আমি কি ওকে ভালোবাসতাম নাকি ও বাস তো। আজ ওর চোখের পানি গুলো আমাকে ভীষন কষ্ট দিয়েছে। আমি ওর কাছে অপরাধী, কিছু করতে পারলাম না প্রমার জন্য আমার প্রমার জন্য। আমি যে টিকতে পারছিনা।
ভীষন কষ্ট পাচ্ছি,আমি যে ওকে ভালোবাসতাম, ভালোবাসি। কি করবো আমি? কি করার আছে, আমি তো একটা বেকার ছেলে। নাহ আর যাই হোক প্রমাকে বলতে হবে ওকে বলতে হবে আমি ওকে ভালোবাসি,অন্তত্য একবারের জন্য হলেও বলতে হবে। তা না হলে সারা জীবন নিজেকে অপরাধী মনে হবে। আমি তো অপরাধী।
আমার প্রমার জন্য আমি কিছুই করতে পারলাম না,কিছুই না!!!
শ্রাবন প্রমা কে ফোন করলো- হ্যালো প্রমা?
প্রমা বলল- কি বল?
শ্রাবন বলল- কি করিস তুই?
প্রমা বলল- এই তো ছেলে আংটি পরিয়ে গেল। কাল সন্ধায় গায়ে হলুদ আর শুক্র বার বিয়ে,শনিবার বৌ-ভাত। তা তোর কাছে খুশি লাগছে না?
শ্রাবন বলল- হ্যা লাগছে। লাগবে না কেন। তোর বিয়ে আমাকে তো খুশি থকতে হবে।
প্রমা বলল- মিথ্যা বললি রে ধরা খেয়েছিস।
শ্রাবন বলল- কোন কথা মিথ্যা বললাম?
প্রমা বলল- এতক্ষন ধরে যা বললি সব কথা মিথ্যা বলেছিস। নিজের কষ্টগুলো ঢাকতে খুব ভালো লাগে তোর। নিজেকে কখনো বুঝতে দেসনি। সব সময় আড়ালে রেখেছিস।
আর এখন কষ্ট পাচ্ছিস।
শ্রাবন বলল- তুই তো ব্যতীক্রম নস্।
প্রমা বলল- শুন আমি তোকে সব কথা বলতাম, তাই আজ তুই এটা বলতে পারবি না আমাকে।
শ্রাবন বলল- কি বলছোস? তুই আমাকে কখনো বলছোস তুই আমাকে পছন্দ করোস, ভালোবাসোস? বল তুই আমাকে কখনো বলছোস?
প্রমা বলল- তা বললে কী হত? তুই আমাকে কখনো বুঝতে চেস্টা করছোস? তুই আমাকে নিয়ে কখনো ভাবছোস? তুই বল?
শ্রাবন বলল- সত্যি কখনো চিন্তা করি নাই। তোর বিয়ে হবে আমাদের বন্ধুত্ত্ব আর থাকবে না।
কিন্তু আজ ভাবে খুব কষ্ট পাচ্ছি। চরম কষ্ট পাচ্ছি।
প্রমা বলল- এখন আর কি হবে?ঝঞ্জড়া করে লাভ নেই। যা হবার তাই হয়েছে।
শ্রাবন বলল- আমাকে ক্ষমা করিস প্রমা, আমাকে ক্ষমা করে দিস।
প্রমা বলল- তুই কি অপরাধ করছোস যে ক্ষমা চাইছিস?
শ্রাবন বলল- তোর জন্য কিছুই করতে পারলাম না,তোকে আমার মনের ভালোবাসা গুলো প্রকাশ করতে পারলাম না। তাই!!
প্রমা বলল- আমার জন্য কিছু করার দরকার নেই তোর,অনেক করেছিস। আর বড় দেরী করে ফেলেছিস। পারলে তুই আমাকে ক্ষমা করিস।
শ্রাবন বলল- আচ্ছা তুই ভালো থাকিস, আর তোকে একটা কথা বলি,কিছু মনে করবি না তো?
প্রমা বলল- বল কি বলবি?
শ্রাবন বলল- আসলে আজ যে কথাটা বলবো সেই কথা বলতে পারলে আমার মন কে হয়তো সারা জীবনের জন্য হলেও শান্তনা দিতে পারবো।
যদিও আজ বলে কোন লাভ নেই, শুধু কষ্ট দেওয়া আর নেওয়া।
প্রমা বলল- এত ভুমিকা করিস না, অনেক কথা তুই মনের মধ্যে রেখে দিয়েছিস কখনো প্রকাশ করিস নি। তাই বলছি বলে ফেল, আমি কিছু মনে করবো না। আর কষ্ট যা পাওয়ার পেয়েছি। সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন।
শ্রাবন বলল- প্রমা;আসলেই আমি তোমাকে ভালোবাসি।
প্রমা বলল- আমাকে। জানিস একটা গানের কথা মনে পড়ে গেল।
শ্রাবন বলল- আমাকে তুমি কোন দিন তুমি করে বলনি। যেদিন ট্রেন ইস্টেসনে প্রথম দেখা হয় সেদিন আপনি করে বলেছিলে,পরে আমার অনুরোধে তুই করে বললে।
নিজ থেকে কখনো তুমি বলো নি।
একটা দীর্ঘ নিস্বাঃশ ছাড়ার পর,প্রমা বলল- আচ্ছা গান টা শুনাই, ঠিক ৪ লাইন শুনাবো। ঠিক আছে?
শ্রাবন বলল- ঠিক আছে,শুনা ও।
প্রমা বলল- তোর জন্য আজ এই গানটা;-
''বন্ধু তোমার পথের সাথী কে চিনে নিও
মনের মাঝেতে চিরদিন তাকে ডেকে নিও
ভুলো না তারে ডেকে নিতে তুমি। ।
খুশির খেয়ালে পাল তুলে যেও চিরদিন
হাসি আর গানে শোধ করে যেও যতদিন
স্মৃতির পথেতে যত ব্যাথা আছে ভুলে যেও
ভুলো না তারে ডেকে নিতে তুমি। । ''
গানটা সময় করে শুনে নিও, আর এটা তোমাকে উৎস্বর্গ করলাম। আর গানের অর্থ মনে হয় বলা লাগবে
না,বুঝতে পারবা। ভালো থেকো।
শ্রাবন বলল- আর কোন দিন কথা হবে?
প্রমা বলল- না বলা টা ভাল না?
শ্রাবন বলল- তাই তো!! আচ্ছা রাখি তাহলে, ভালো থেকো সব সময়।
প্রমা বলল- আল্লাহ হাফেজ।
শ্রাবন কিছু বলল না চুপ করেছিল, তারপর কথা না বলে লাইন কেটে দিল।
শ্রাবন আর প্রমার কোনদিন আর যোগাযোগ হয় নি। কেউ কারো খবরো জানার চেষ্টা করেনি।
এভাবে
তাদের জীবন কেটে যাচ্ছে।
প্রায় নয় বছর পর ০৯/০৯/০৯ইং তারিখ হঠাৎ দেখা.....................
প্রমা ট্রেন থেকে নামলো আর ওয়েটিং রুমে গিয়ে বসতে যাচ্ছে তখন প্রমার মেয়ে দৌড় দিয়ে একটা
ভদ্রলোকের পাশের সিটে গিয়ে বসে। প্রমা ওয়েটিং রুমে ডুকে দেখে ভদ্রলোকেটি আর কেউ নয় শ্রাবন।
শ্রাবন বসে আছে।
শ্রাবন প্রমা কে দেখে আবাক হয়ে যায় আর বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়।
প্রমা কোন কিছু না বলে শ্রাবনের
পাশের সিটে বসে। শ্রাবনো বসে থাকে।
প্রমা প্রথমে বলে- ভাল আছো তো।
শ্রাবন বলল- হ্যা ভালো আছি। তুমি?
প্রমা বলল- আমাকে দেখে কী মনে হয়?
শ্রাবন বলল- তুমি আগের মত আছো।
প্রমা বলল- তাই! কিন্তু তোমার অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
শ্রাবন বলল- কোন দিক দিয়ে?
প্রমা বলল- তুমি আর আগের শ্রাবন নও,আর চশমা পরাতে অন্যরকম শ্রাবন মনে হচ্ছে।
শ্রাবন বলল- তাই। তা, কোথায় যাচ্ছো?
প্রমা বলল- রাজশাহী থেকে আসলাম। প্রার্থনার বাবা নিতে আসবে তাই এখানে এসে বসলাম।
তা তুমি কি করছো কোথায় যাচ্ছো?
শ্রাবন বলল- প্রার্থনা তোমার মেয়ের নাম রেখেছো। আমার কথা মত নাকি?
প্রমা বলল- না,আমি রাখিনি। ওর বাবা রেখেছে আমার নামের সাথে মিলিয়ে। যখন ও এই নাম টা রাখে
আমি অনেক অবাক হয়ে যাই।
শ্রাবন বলল- ও, আমার কথা তোমার মনে ছিল?
প্রমা বলল- কি মনে হয়? আচ্ছা কি করছো তুমি?
শ্রাবন বলল- আমি সিলেটে একটা চাকরী করছি আর তাই আজ সিলেটে যেতে হবে।
প্রতি সপ্তাহে ঢাকায় আসি,আবার চলে যাই।
প্রমা বলল- ও। তা তোমার বৌ কেমন আছে?
শ্রাবন বলল- বিয়ে করিনি,এখনো।
প্রমা বলল- কেনো?
শ্রাবন বলল- আসলে একদিন বলেছিলে না যে আমার কপালে রানী নাই সাথে দাসী ও জুটবে না। তাই হয় তো এখনো কারো দেখা পাই নি।
প্রমা বলল- তুমি আমার কথা গুলো এখনো মনে রেখেছো?
শ্রাবন বলল- তুমি কি আমার কথা গুলো ভুলে গেছো? আমার তো মনে হয় না তুমি ভুলেছো।
প্রমা বলল- আমার ভাগ্য অনেক ভাল। আজ নয় বছর পর তোমার সাথে দেখা হল, আর আজ নয় তারিখ-নয় মাস- নয় বছর। যাকে বলে লাকি নাইন।
শ্রাবন বলল- হয়তো জীবনের একটি স্মরণীয় দিন আজ।
কিছু মনে করো না, আমার উঠতে হবে। এখন ট্রেন ছাড়বে।
প্রমা বলল- আচ্ছা ভাল থেকো, আর মনে হয় আমাদের দেখা হবে না।
শ্রাবন বলল- হতে পারে।
প্রমা বলল- আমি আমেরিকায় চলে যাচ্ছি।
শ্রাবন বলল- ও, ভাল।
প্রমা বলল- আর তোমার সাথে আমার দেখা হবে না। ঈদ টা ঢাকায় ঠিক মত করতে পারবো না,ঈদের দিন আমাকে দেশ ছাড়তে হবে। আমার একুশ তারিখ রাতে ফ্লাইট।
শ্রাবন বলল- ও! আমার এখন উঠতে হবে।
প্রমা বলল- ঠিক আছে। যেখানে থেকো ভাল থেকো,শুভ কামনা।
শ্রাবন বলল- তুমি ও।
প্রমা বলল- আচ্ছা তোমার সময় হয়েছে।
শ্রাবন বলল- আসি তাহলে।
প্রমা বলল- আল্লাহ হাফেজ।
শ্রাবন বলল- খোদা হাফেজ।
প্রমা বলল- শুন!
শ্রাবন বলল- কিছু বলবে?
প্রমা বলল- প্রথম দিনের মত, আজ আবার সেই পথে দেখা হয়ে গেল। ভাল থেকো।
শ্রাবন প্রমা কে আর কিছু বলল না প্রার্থনাকে আদর করে চলে গেল।
টেলি-গল্প টি শেষ করতে চাই মান্না দে'র সেই গান দিয়ে-
''আজ আবার সেই পথে দেখা হয়ে গেল
কত সুর, কত গান মনে পড়ে গেল
বলো ভালো আছো তো। ।
কদিন আগে এমন হলে
কতদিন আরো বেশি পেতাম
আরো আকাশ আরো বাতাস
লিখে দিত তোমারি নাম
শুধু আমি নোই ওরা সবাই
ডেকে ডেকে বলে বলে যেত
বলো ভালো আছো তো। ।
জানি তোমায় আপন ভাবায়
মন আধিকার নেই যে মোর
কেউ জানি দেখা হওয়া
কত বড় ভাগ্য আমার
শুধু বলো আজ আমায় ভুলে
সুখি তুমি হয়েছো কত
বলো ভালো আছো তো।
।
বিঃদ্রঃ- আমাদের চারপাশের মানুষের জীবনে অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে। আমাদের নিজেদের জীবনেও অনেক
কিছু ঘটে যাচ্ছে। অনেক অদ্ভূত ঘটনা ঘটে যা কিনা মাঝে মাঝে বিশ্বাস করার মত নয়, তবু ও অবিশ্বাসো
কিছু নয়। আমার সম্পূর্ণ টেলি-গল্পে ছিল বাস্তবতা আর কাল্পনিকের ছোঁয়া।
আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি-
আমার ভালোবাসা অনুষ্ঠান কে,
বিশেষ করে লাভগুরু কে,মাশফিক ভাইয়া কে ও তৌফিকা আপুকে
যাদের কারণে মানুষের জীবনের ভালোবাসার উপন্যাস গুলো কে জানতে পারছি।
আর আমি লাভগুরুর শিষ্য পিংকী
ধন্যবাদ সবাই কে
''ঈদ মোবারক''
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।