মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।
দেশপ্রেমিক শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা বেলা। পুরান ঢাকার কায়েততুলির বাসায় শহীদুল্লাহ কায়সার মোমবাতি জ্বালিয়ে সামনে রেডিও নিয়েবিবিসি শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। স্ত্রী পান্না কায়সার মেঝেতে বসে মেয়েকে সমিকে দুধ খাওয়াচ্ছেন। এমন সময় ঠক ঠক করে দরজার কড়া নাড়ার শব্দ শোনা গেল।
ছোট ভাই ওবায়দুল্লাহকে বললেন মুক্তিযোদ্ধারা এসেছে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দাও। একথা বলে তিনি আলমারী খুলে টাকা বের করলেন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দেওয়ার জন্য। কিছুক্ষণ পর মুক্তিযোদ্ধারা নয়, চার-পাঁচজন লোক কাল কাপড়ে মুখ ঢেকে ঘরে প্রবেশ করল। তারা জিজ্ঞাসা করল, ‘শহীদুল্লাহ কায়সার কে? তিনি এগিয়ে গিয়ে বললেন, ‘আমিই শহীদুল্লাহ কায়সার’। লোকগুলি তাঁর হাত ধরে তাঁকে নিয়ে যেতে শুরু করল।
সঙ্গে সঙ্গে পন্না কাইয়সার, শহীদুল্লা কায়সারের বোন ও ভাই তাঁকে হাত ধরে রাখার চেষ্ঠা করলেন। কিন্তু শত শক্তি প্রয়োগ করেও তারা ধরে রাখতে পারলেন না। জানোয়াররা তাঁকে নিয়ে গেল। যাবার সময় দিকে তাকিয়ে স্মিত হেসে বলেছিলেন, ‘ভাল থেকো’। সেই গেলেন আর চলে আসতে পারলেন না।
ওই পশুরা, রাজাকাররা তাঁকে আর তাঁর সন্তান, স্ত্রী, ভাই ও বোনের কাছে ফিরে আসতে দেয়নি।
শহীদুল্লাহ কায়সার ১৯২৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। ফেনী জেলার অন্তর্গত মজুপুর গ্রামের সৈয়দ পরিবারে। তাঁর পরিবারের দেয়া ডাক নাম ছিলো আবু নঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। যাঁর সাহিত্যিক নাম শহীদুল্লাহ কায়সার।
এই নামেই তাঁকে আমরা জানি। বাবা মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আরবি-ফারসি ও উর্দু ভাষা-সাহিত্যে সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি কলকাতার ‘মাদ্রাসা-ই-আলিয়া’র আরবি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি সৎ, উদার, যুক্তিবাদী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন ছিলেন। ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।
মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুন ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ। জমিদারের সন্তান হওয়া সত্বেও তিনি ছিলেন মানবহিতৈষী। সুফিয়া খাতুন নানা কারণে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পাননি। তবে দেশপ্রেম, দেশের স্বাধীনতা ও সেবামূলক কাজে কখনো অনীহা প্রকাশ করেননি। তিনি ১৪-১৫ বছর বয়সে মহাত্মা গান্ধীর (১৮৬৯-১৯৪৮) অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
স্বদেশী আন্দোলনের সময় দেশীয় কাপড় তৈরীর ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ার সাথে তিনি কাজ করেছেন। শহীদুল্লাহ কায়সার মায়ের কাছ থেকেই দেশপ্রেম, সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি সম্পর্কে হাতেখড়ি নেন। মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুনই তাঁর রাজনীতি এবং সাহিত্যিক জীবনের প্রধান অনুপ্রেরণার ব্যাক্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
আট ভাই-বোনের মধ্যে শহীদুল্লাহ কায়সার জ্যেষ্ঠ। তাঁর সাত ভাই-বোন_ নাফিসা কবীর, মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ্ ওরফে জহির রায়হান, জাকারিয়া হাবিব, সুরাইয়া বেগম, সাহানা বেগম, মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ্ এবং মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
মা সৈয়দা সুফিয়া খাতুনই শহীদুল্লাহ কায়সারকে পড়াশুনার হাতেখড়ি দেন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা শুরু হয় তাঁর নিজ গ্রাম মজুপুরের আমিরাবাদ বিদ্যালয়ে। বাবা কলকাতায় কারণে ছেলে শহীদুল্লাহকে লেখাপড়া শেখানোর উদ্দেশ্যে ছেলেকে তাঁর নিয়ে যান। এখানে তাঁকে প্রথমে ‘সরকারী মডেল স্কুলে’ এবং পরে ‘মাদ্রাসা-ই-আলীয়া’র অ্যাংলো পার্সিয়ান বিভাগে ভর্তি করেন। তিনি প্রতি বছরই পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন।
১৯৪২ সালে ১৬ বছর বয়সে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি ভর্তি হন অবিভক্ত বাংলার বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘প্রেসিডেন্সি কলেজে’। ১৯৪৬ সালে তিনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। অর্থনীতিতে এমএ পড়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। একই সময় তিনি ‘রিপন কলেজে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।
ওই সময়ে প্রেসিডেন্সি কলেজ ছিল মেধাবী ছাত্র সৃষ্টির ও ছাত্র আন্দোলনের পীঠস্থান। এ কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় শহীদুল্লা কায়সার বামপন্থী ছাত্র রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। যুক্ত হন ছাত্র ফেডারেশনে। কিছু দিনের মধ্যে সমর্থক, কর্মী ও সংগঠক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ওই তিনি মার্কসবাদ-লেলিনবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।
ধীরে ধীরে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেন।
১৯৪৭ সলে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর বাবা ঢাকায় চলে আসেন। ফলে শহীদুল্লাহ কায়সার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে এমএ ভর্তি হন। ঢাকায় এসে তিনি কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের মুক্তির রাজনীতিতে যুক্ত হন। একইসাথে বামপন্থী ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন।
এসময় পূর্ববাংলার ছাত্রদের সংগঠিত করার দায়িত্ব তাঁর উপর পড়ে। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী হবার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তাঁকে বাধ্য হয়ে আত্মগোপন যেতে হয়। আত্মগোপনে অবস্থায় তিনি গোপনে গোপনে ছাত্রদের সংগঠিত করেন। আত্মগোপনে থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত এমএ পরীক্ষা আর দেওয়া হয়নি।
নিষিদ্ধ ঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী হওয়ার অভিযোগে ১৯৫২ সালের ৩ জুন তাঁকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় কারাজীবন। ১৯৫২-৬২ সাল পর্যন্ত দশ বছরের মধ্যে তাঁকে আট বছরই কারাগারে আটক রাখা হয়। ১৯৫৬ সালে কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (১৮৮০-১৯৭৬) পরিচালিত ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তাঁর সাংবাদিক জীবন ছিল অনন্য।
১৯৫৮ সালের ১৪ অক্টোবর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জননিরাপত্তা আইনে তাঁকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত আটক রাখা হয়। ১৯৬২ সালে শিক্ষানীতি নিয়ে পূর্ববাংলায় প্রবল ছাত্র-আন্দোলনের ফলে অন্যান্যদের সাথে শহীদুল্লাহ কায়সারও কারাগার হতে মুক্ত হন। এ সময় তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সম্পাদকীয় বিভাগে যুক্ত হন।
‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় সাংবাদিক জীবনের হাতেখড়ি হলেও তাঁর সাংবাদিক জীবনের সমস্ত কৃতিত্ব ও পরিচিতি ‘দৈনিক সংবাদ’-কে কেন্দ্র করে।
ওই সময় ‘সংবাদ’ পূর্ববাংলার প্রগতিশীল লেখক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীগণের মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এখানে তিনি প্রবীণ ও খ্যাতনামা সাংবাদিক-সাহিত্যিক জহুর হোসেন চৌধুরী, সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ, সন্তোষ গুপ্ত প্রমুখের সাহচর্যে আসেন। যার কারণে তাঁর চিন্তা-চেতনা ও লেখালেখির মধ্যে মানবতাবাদী দর্শনে পূর্ণ বিকাশ ঘটে।
পরবর্তীকালে এ পত্রিকার যুগ্ম-সম্পাদক পদে উন্নীত হন। এক সময়ে তিনি ‘সংবাদ’-এর মধ্যমণিতে পরিণত হন।
১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের মধ্য রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা বংশালে অবস্থিত ‘সংবাদ’-এর অফিস ভবনটি পুড়িয়ে দেয়ার পরও তিনি তা পুনঃপ্রকাশের চেষ্টা করেন। সাংবাদিক জীবনে সাংবাদিকদের দাবি-দাওয়া, সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তিনি ছিলেন ও আপোষহীন। তিনি একাধিকবার প্রাদেশিক তথা পূর্বপাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সংবাদ’-এর সম্পাদকীয় বিভাগের নির্দিষ্ট লেখা ছাড়াও তিনি ‘দেশপ্রেমিক’ ও ‘বিশ্বকর্মা’ ছদ্মনামে সমকালীন রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে লিখতেন। ‘রাজনৈতিক পরিক্রমা’ এবং ‘বিচিত্র-কথা’ শীর্ষক দুটি কলামে এ পত্রিকায় তিনি লিখতেন।
১৯৫৬ সালে জহির রায়হানের (১৯৩৫-৭২) সম্পাদনায় সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সাপ্তাহিক ‘প্রবাহ’ প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘প্রবাহ’ প্রতি শনিবার প্রকাশিত হতো। এ পত্রিকার সাথে শহীদুল্লাহ কায়সার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
১৯৫২-৫৫ সালে জেলখানায় রাজবন্দি থাকা অবস্থায় তিনি নাটক লিখতে শুরু করেন। চট্টগ্রাম জেলে বসে ১৯৫২ সালে ‘নাম নেই’ এবং ১৯৫৪ সালে ‘যাদু-ই-হালূয়া’ রচনা করেন।
১৯৫৯-৬২ সালের মধ্যে তিনি বিপ্লবী লেখক হিসেবে নিজের বিপ্লবী জীবন-দর্শনের প্রতিচ্ছবি স্বরূপ ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসটি রচনা করেন। ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে এটি প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘কৃষ্ণচূড়া মেঘ’ ( ১৯৫৯), ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ ( ১৫ আগষ্ট ১৯৬১), ‘কুসুমের কান্না (১৯৬২ সালের জুনে), ‘চন্দভানের কন্যা’ (অসম্পূর্ণ) উপন্যাসগুলো গ্রন্থাকারে প্রকাশিত। তাঁর সাংবাদিক জীবনের গ্রন্থ ‘পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ’ ১৯৬৬ সালে রচিত ও প্রকাশিত হয়। তাঁর বেশ কিছু উপন্যাস ও গল্প, প্রবন্ধ অপ্রকাশিত ছিল।
‘কবে পোহাবে বিভাবরী’ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রচনা করেন। এটি চারটি খণ্ডে সমাপ্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু দুখণ্ড লেখার পর বইটি অসমাপ্ত থেকে যায়। এ উপন্যাসটিতে মুক্তিযুদ্ধকালে পাক-বাহিনীর অত্যাচার ও ধ্বংসলীলার চিত্র এঁকেছেন তিনি। এটি তাঁর শেষ রচনা।
১৯৫৮ সালে কলকাতার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য জোহরা বেগমকে শহীদুল্লাহ কায়সার সহধর্মিনী করেন। জোহরা বেগম ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী আবু আহমদের কন্যা। বামপন্থী ছাত্র-কর্মী শহীদুল্লাহ কায়সারের সাথে রাজনীতির সূত্রে তার পরিচয় ঘটে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অবসরে তাঁদের মধ্যে আন্তরিকতা ও ভালবাসার সূত্রপাত হয়। তারপর বিয়ে।
তাঁদের দাম্পত্যজীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর শহীদুল্লাহ কায়সারকে ১৪ অক্টোবর মধ্য রাতে গ্রেফতার হন। জোহরা স্বামীর মুক্তি অনিশ্চিত জেনে কলকাতায় ফিরে যান। ১৯৬১ সালে বিচ্ছেদ ঘটে।
১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শহীদুল্লাহ কায়সার পুনরায় পান্না চৌধুরীকে(পান্না কায়সার)সহধর্মিনী করেন।
তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার বরুড়ায়। তাদের প্রায় তিন বছরের সংসার জীবনে এক কন্যা সন্তান ও এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কন্যা অভিনেত্রী শমী কায়সার ও পুত্র অমিতাভ কায়সার।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীদের অনেকে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন। আবার অনেকে ঢাকা তথা দেশের মধ্যেই আত্মগোপন করেছিলেন।
‘সংবাদ’ অফিস ভস্মীভূত হওয়ার পর শহীদুল্লাহ কায়সারকে পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট পার্টির বার বার তাঁকে নিয়ে যেতে লোক পাঠিয়ে ছিলো। কমরেড মনি সিং ‘আর এখানে থাকা সঙ্গত নয়’- এ কথা জানিয়ে তাঁর কাছে চিঠি লেখেন। রাশিয়ান দূতাবাসও বার বার তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্যর্থ হয়। মোট কথা তিনি দেশ ছেড়ে যাবেন। তিনি ভাবতেন সবাই দেশ ছেড়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাহায্য করবে কে? আর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্যই রয়ে গেলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে অনেকেই কবি সুফিয়া কামালের কাছে রেশনকার্ড রেখে যান। কবি সুফিয়া কামাল সেইসব রেশনকার্ড দিয়ে চাল, ডাল, ঔষধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিস তুলে এনে বাসায় জড়ো করতেন। শহীদুল্লাহ কায়সার সেসব জিনিস মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌছে দিতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে থেকে তাঁদেরকে নানাভাবে সহযোগীতা করতেন। তাঁর বাসা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
এই বাসা থেকে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার তৈরী করে দেওয়া হত। দিনের বেলা বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন লোকের কাছ টাকা ও ঔষধ সংগ্রহ করে রাতে তা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দিতেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।